‘পদ্মাবতী’ বিতর্কে নীরবতা ভাঙলেন বানসালি
---
বিনোদন ডেস্ক : বহুল আলোচিত বলিউড সিনেমা পদ্মাবতী। শুরু থেকেই নানা কারণে খবরে রয়েছে এটি। আগামী ডিসেম্বরে মুক্তির কথা থাকলেও সিনেমাটি ঘিরে এরই মধ্যে শুরু হয়েছে নানা বিতর্ক। এ নিয়ে এতদিন বিশেষ কিছু না বললেও এবার নীরবতা ভেঙেছেন এর পরিচালক সঞ্জয় লীলা বানসালি।
সূফী লেখক মালিক মুহম্মদ জায়সির লেখা চিতর দখলের কাব্যের ওপর ভিত্তি করে পদ্মাবতী সিনেমার কাহিনি তৈরি হয়েছে। সেই কাব্যের গল্প অনুসারে রানি পদ্মিনীর প্রতি আকৃষ্ট হন আলাউদ্দিন খিলজি। ফলস্বরূপ চিতরগড় দখলের চিন্তা করেন তিনি। পরবর্তীতে পরিত্রাণ পেতে আত্মহত্যার পথ বেছে নেন রানি। কিন্তু গুঞ্জন ওঠে পদ্মাবতী সিনেমাটিতে রানি পদ্মিনী ও আলাউদ্দিন খিলজির একটি রোমান্টিক দৃশ্য দেখানো হয়েছে। এরপর শুরু হয় বিতর্ক।
গতকাল একটি ভিডিও বার্তায় বানসালি বলেন, ‘আমি সঞ্জয় লীলা বানসালি এই ভিডিওর মাধ্যমে আপনাদের কিছু বলতে চাই। অনেক দায়িত্ব, সততা ও কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে পদ্মাবতী সিনেমাটি বানিয়েছি। সব সময়ই রানি পদ্মিনির গল্পের মাধ্যমে অনুপ্রাণিত হয়ে এসেছি এবং এই সিনেমাটি তার সাহস ও সম্মানের প্রতি উৎসর্গ করে নির্মিত। কিন্তু কিছু গুঞ্জনের কারণে এটি নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছে। গুঞ্জনটি হলো- সিনেমায় রানি পদ্মিনি ও আলাউদ্দিন খিলজির ড্রিম সিকোয়েন্স রয়েছে। আমি এর আগেও বিষয়টি খোলাসা করেছি, এমনকি লিখিতও দিয়েছি। এই ভিডিওর মাধ্যমে আমি আবারো বলছি, সিনেমায় রানি পদ্মিনি ও আলাউদ্দিন খিলজির এমন কোনো দৃশ্য নেই যেটি কারো অনুভূতিতে আঘাত করবে। আমরা সিনেমাটি খুব দায়িত্ব নিয়ে নির্মাণ করেছি এবং রাজপুতদের সম্মান অটুট রেখেছি। আমি আবারো বলছি, কারো অনুভূতিতে আঘাত করবে এমন কোনো দৃশ্য এই দুই চরিত্রে অথবা ড্রিম সিকোয়েন্স নেই।’
গত জানুয়ারিতে পদ্মাবতী সিনেমার শুটিং সেটে ভাঙচুর চালায় রাজপুত করনি সেনা। তাদের দাবি ছিল, সিনেমায় পদ্মাবতীর ভাবমূর্তি নষ্ট করছেন সঞ্জয়। কারণ সিনেমায় পদ্মাবতীর সঙ্গে আলাউদ্দিন খিলজির প্রেমের সম্পর্ক দেখানো হয়েছে। কিন্তু বাস্তবে পদ্মাবতী-খিলজির মধ্যে কোনো প্রেমের সম্পর্ক ছিল না। আর এতেই আপত্তি তুলেছে হিন্দু সম্প্রদায়ের ওই দল। সে সময় ভেঙে ফেলা হয় শুটিংয়ের বেশ কিছু মূল্যবান সরঞ্জাম। এমনকি সিনেমার কলাকুশলীদের সঙ্গে ধাক্কাধাক্কির মাঝে বানশালিকে চড় মারেন এক ব্যক্তি। তারপর বন্ধ হয়ে যায় শুটিং।
এরপর গত মার্চে পদ্মাবতী’র শুটিং সেটে আগুন দেয় দুষ্কৃতিকারীরা। মহারাষ্ট্রের কোলাপুরে ঘটনাটি ঘটে। ৪০-৫০ জনের একটি দল পেট্রোল বোমা, পাথর এবং লাঠি নিয়ে হামলা চালায়। তখন সেটের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা সদস্যদের সঙ্গে মারামারি হয়। তারা আশপাশে থাকা গাড়ি ভাঙচুর করে এবং সেটে আগুন দেয়। ওই সময় শুটিং সেটে কোনো কলাকুশলী ছিলেন না কিন্তু অনেক পশু ছিল। যেগুলো শুটিংয়ের প্রয়োজনে আনা হয়েছিল। এরপর গত কয়েকদিন ধরে বিভিন্ন রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব ও সংগঠন পদ্মাবতী সিনেমাটি বন্ধের দাবি জানিয়ে আসছে।