আজ আশুগঞ্জ গণ হত্যা দিবস
---
সন্তোষ সূত্রধর, আশুগঞ্জ থেকে॥ শুক্রবার ১৪ এপ্রিল আশুগঞ্জ গণহত্যা দিবস। ১৯৭১ সালে যখন পাক বাহিনী দেশব্যাপী নির্মম হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছিল। ঠিক সেই সময়ে ১৪ এপ্রিল পাকিস্তানি বর্বরবাহিনী আশুগঞ্জের শতাধীক নিরীহ লোককে নির্মমভাবে হত্যা করেছিল। বাঙ্গালী জাতির জন্য দিনটি আনন্দের হলেও আশুগঞ্জ বাসীর জন্য বেধনা দায়ক দিন। দিনটিকে আশুগঞ্জ বাসী প্রতিবছর বেধনা দায়ক দিন হিসেবেই পালন করে। আর গণহত্যা সংগঠিত বেশির ভাগ স্থানেই এখন পযর্ন্ত কোন স্মৃতি চিহ্ন গড়ে উঠেনি। অনেক স্থান এখন নিশ্চিন্ন হয়ে যাচ্ছে। গড়ে উঠছে নানা স্থাপনা। আর একারণে বেদনা দায়ক দিনটিকে ঘিরে মুক্তিযোদ্ধাদের দিন দিন ক্ষোভ বাড়ছে। ১৪ এপ্রিল সকালে পাক বাহিনী আধুনিক সমরাস্ত্রে সু-সজ্জিত হয়ে আশুগঞ্জের খাদ্য শষ্য সাইলোতে ইষ্টার্ণ জোনের হেড কোয়ার্টার স্থাপনের লক্ষ্যে হেলিকপ্টার যোগে আশুগঞ্জের সোনারামপুরে প্রায় ৫ হাজার সৈনিক অবতরণ করে। এখান থেকে পাকবাহিনী ভৈরব, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও হবিগঞ্জসহ বিভিন্ন এলাকায় তাদের অপারেশন চালায়। ১৪ এপ্রিল পাক সেনারা আশুগঞ্জে অবতরন করে প্রথমে তারা আশুগঞ্জ বাজারে আসার পথে সোহাগপুরে হামলা চালায়। পরবর্তীতে পাক বাহিনী আশুগঞ্জের সোনারামপুর, ধানের আড়ৎ, মাছ বাজার, রেল গেইটে, রেল ষ্টেশনে, বড়তল্লায়, খোলাপাড়ায়, লালপুরে, চরচারতলা গ্রামের নিরীহ লোকজনকে কিছু বুঝার আগেই আটক করে নিয়ে আসে। পরে পাক বাহিনী বিভিন্ন এলাকা থেকে লোকজন ধরে এনে সাইলোর কাছে, মেঘনা নদীর উপর নির্মিত রেল সেতুর কাছে, ধানের আড়তের মাঠে, মাছ বাজারে, রেল ষ্টেশনে কাছে আশুগঞ্জের ৫টি স্পটে নির্মমভাবে নিরীহ লোকদের ধরে এনে লাইনে দাড় করে ব্রাশ ফায়ার করে পাক বাহিনী পাখিরমত হত্যা করে। মুক্তিযোদ্ধের সেসব স্মৃতি প্রত্যক্ষর্দশী স্থানীয় লোকজন ও মুক্তিযোদ্ধাদের মনে হলে এখনো গা শিহরীয়ে উঠে। আর তারা দুঃখ করেন স্বাধীনতার এত বছর পরেও এখানে শহীদের স্বরণে এসব গণহত্যা অনুষ্ঠিত হওয়া অধিকাংশ স্থানেই কোন স্মৃতিস্তম্ভ গড়ে উঠেনি। আবার অনেকে বলে উঠেন জানিনা মৃত্যুর আগে স্মৃতি স্তম্বের দৃশ্য দেখে যেতে পারবে কিনা।
এদিকে, স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডার ইকবাল হোসেন জানান, যে সকল স্থানে গনহত্যা সংগঠিত হয়েছে এর মধ্যে অন্যতম মেঘনা নদীর তীরে আশুগঞ্জ সাইলো। সেখানে হাজারো লোকজনকে হত্যা করে লাশ ফেলে দেয়া হতো। কিন্তু এ স্থান সংরক্ষন করে গড়ে উঠেনি কোন স্মৃতিস্তম্ব। উল্টো সে স্থান দখল করে গড়ে উঠছে ১লক্ষ ৫ হাজার মেট্রিকটন ধারন ক্ষমতার নতুন একটি খাদ্য গুদাম। তাই ক্ষুদ্ধ স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধারা। যে সকল স্থানে গন হত্যা সংগঠিত হয়েছে সে সকল স্থানে স্মৃতিস্তম্ভ গড়ে তোলার জন্য সরকারের উর্ধŸতন মহলকে বারবার জানানো হলেও এসব স্থানে স্মৃতিস্তম্ভ গড়ে উঠেনি।