ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর উপজেলায় হিন্দু সম্প্রদায়ের বাড়িঘর ও মন্দিরে হামলার ঘটনায় আগামী শুক্রবার সারা দেশে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশের ডাক দিয়েছে হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ।
আজ বুধবার ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করে হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের একটি প্রতিনিধিদল। পরে সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট রানা দাসগুপ্ত ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মলন করে এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন।
একই দিনে মানবাধিকারকর্মী সুলতানা কামালের নেতৃত্বাধীন ছয় সদস্যের একটি প্রতিনিধিদলও ওই এলাকা পরিদর্শন করেন। তাঁর সঙ্গে ছিলেন মানবাধিকার নেত্রী ও বেসরকারি সংস্থা ‘নিজেরা করি’র সমন্বয়ক খুশি কবির, ঐক্য ন্যাপের আহ্বায়ক পঙ্কজ ভট্টাচার্য প্রমুখ। এ ছাড়া আজ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন জাতীয় পার্টির ভাইস চেয়ারম্যান ও সংসদ সদস্য জিয়াউল হক মৃধা।
গত ২৮ অক্টোবর (শুক্রবার) নাসিরনগর উপজেলার হরিপুর ইউনিয়নের হরিণবেড় গ্রামের রসরাজ দাস নামের এক যুবক পবিত্র কাবাঘরের ছবি সম্পাদনা করে ফেসবুকে পোস্ট করেন বলে অভিযোগ পাওয়া যায়। এরপর স্থানীয় লোকজন তাঁকে পুলিশে সোপর্দ করে। এ ঘটনার খবর ছড়িয়ে পড়লে শনিবার দিনভর নাসিরনগর সদর উত্তাল হয়ে পড়ে। এ অবস্থায় পরদিন রোববার উপজেলা সদরের কলেজ মোড়ে বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ সমাবেশ হয়। সমাবেশ চলাকালে সদরের কয়েকটি মন্দির ও হিন্দুদের বাড়িতে হামলা হয়।
ভাঙচুরের ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত কাজল দত্ত ও নির্মল দত্ত বাদী হয়ে গত সোমবার নাসিরনগর থানায় দুটি মামলা করেন। স্থানীয় জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন ও পুলিশ সদর দপ্তরের উদ্যোগে তিনটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। এ ছাড়া নাসিরনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল কাদেরকে প্রত্যাহার করা হয়েছে।
বিকেলে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য তুলে ধরে হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট রানা দাসগুপ্ত বলেন, ‘ওই দিনের ঘটনাটি পূর্বপরিকল্পিতভাবে ঘটানো হয়েছে। প্রশাসনের কেউ কেউ এই চক্রের সঙ্গে যুক্ত। এ ছাড়া রাজনৈতিক দলের কেউ কেউ এই চক্রান্তকারীদের সঙ্গে যুক্ত হয়ে সমাবেশে উসকানিমূলক বক্তব্য দেন।
সংবাদ সম্মেলনে ছয় দফা দাবি উত্থাপন করা হয়। এ ছাড়া অনতিবিলম্বে ঘটনার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে শাস্তির দাবি জানান নেতারা। তাঁরা ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ ও পুনর্বাসন দাবি করেন।