নিজস্ব প্রতিবেদক : বিদ্যুৎ খাতের উন্নয়নে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) কাছ থেকে ১০৫ কোটি ৭৫ লাখ ডলার ঋণ নিচ্ছে সরকার।এ ঋণ নেগোশিয়েশনের জন্য অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) যুগ্ম-সচিবকে (এডিবি) প্রধান করে ১১ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। এই কমিটি ঋণদাতা সংস্থার
সঙ্গে আলোচনা করে খসড়া ঋণ চুক্তি, প্রকল্প চুক্তি, অনুদান চুক্তি এবং অন্যান্য বিষয় তদারকি করবে বলে ইআরডি সূত্রে জানা গেছে।
সূত্র জানায়, এডিবির অর্থায়নে ‘বাংলাদেশ পাওয়ার সিস্টেম এনহান্সমেন্ট অ্যান্ড ইফিসিয়েন্সি ইমপ্রুভমেন্ট প্রজেক্ট’শীর্ষক প্রকল্প বাস্তবায়ন করবে বিদ্যুৎ বিভাগ। এ প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য মোট ব্যয় প্রাক্কলন করা হয়েছে ১০৫ কোটি ৭৫ লাখ ডলার। এ প্রকল্পে বাংলাদেশ সরকারকে ৬১ কোটি ৬০ লাখ ডলার ঋণ দেবে এডিবি। এর মধ্যে ৬০ কোটি ডলার ওসিআর এবং ১ কোটি ৬০ লাখ ডলার সহজ শর্তের এডিএফ ঋণ আছে।
সূত্র জানায়, এ কর্মসূচিতে সহ-অর্থায়নকারী হিসেবে জাপান ফান্ড ফর প্রভারটি রিডাকশন (জেএফপিআর) ২০ লাখ ডলার অনুদান দেবে। অবশিষ্ট ৪৩ কোটি ৯৫ লাখ ডলারের সমপরিমাণ অর্থ বাংলাদেশ সরকার এবং সংশ্লিষ্ট সংস্থাকে যোগান দিতে হবে।
সূত্র জানায়, মংলায় নির্মাণাধীন কয়লাভিত্তিক তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে উৎপাদিত বিদ্যুৎ ইভাকুয়েট করার জন্য পিজিসিবি কর্তৃক ঢাকা ও খুলনার মধ্যে আমিনবাজার-মাওয়া-মংলা ৪০০ কেভি সঞ্চালন লাইন প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। ডেসকো এলাকায় বিদ্যুৎ বিতরণ ব্যবস্থা পরিচালনায় কর্মদক্ষতা বৃদ্ধি করে ভোল্টেজের ওঠানামা কমানো ও এর সঙ্গে পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণ ব্যয় কমানোর জন্য ডেসকো কর্তৃক সুপারভাইজরি কন্ট্রোল ও ডাটা একুইজিশন সিস্টেম স্থাপন প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। এ ছাড়া বিআরইবি কর্তৃক ঢাকাসহ আটটি বিভাগের আওতাধীন পুরাতন জরাজীর্ণ বিতরণ লাইনের পুনর্বাসন/আপ-গ্রেড করা, গ্রাহক সংযোগ ও বিতরণ ব্যবস্থার ক্ষমতা বাড়ানো, বিতরণ লাইনের ঘনায়নের মাধ্যমে বিদ্যুতের ক্রমবর্ধমান চাহিদা পূরণ এবং সিস্টেম লস কমানোর জন্য দুটি প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে।
সূত্র জানায়, এডিবির প্রতিশ্রুত সহজ শর্তে এডিএফ ও ওসিআর ঋণ ৫ বছরের গ্রেস পিরিয়ডসহ ২৫ বছরে পরিশোধ করতে হবে। এডিএফ ঋণের বার্ষিক সুদের হার শূন্য ২ শতাংশ এবং ওসিআর ঋণের সুদের হার লাইবর ভিত্তিতে পরিশোধ করতে হবে। এ ছাড়া ওসিআর ঋণের জন্য শূন্য দশমিক ১০ শতাংশ হারে ম্যাচুরিটি প্রিমিয়াম এবং অব্যয়িত অর্থের ওপর শূন্য দশমিক ১৫ শতাংশ হারে কমিটমেন্ট চার্জ প্রযোজ্য হবে। তবে এডিবির অর্থায়নে এ প্রকল্পের আওতায় পূর্ত কাজ সম্পাদন, মালামাল ও সেবা সংগ্রহ বা কেনাকাটার ক্ষেত্রে এডিবির গাইডলাইন অনুসরণ করতে হবে।
জানা গেছে, এডিবি থেকে প্রাপ্ত খসড়া ঋণ চুক্তি, প্রকল্প চুক্তি, অনুদান চুক্তি ও তৎসংলগ্ন দলিলাদির ওপর আলোচনার জন্য ইতিমধ্যে ইআরডিতে আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠক হয়েছে। বৈঠকে সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে এডিবির সঙ্গে লোন নেগোশিয়েশনের সময় বাংলাদেশ প্রতিনিধিদল কর্তৃক উপস্থাপনযোগ্য বিষয়সমূহ চিহ্নিত করা হয়েছে। লোন নেগোশিয়েশনের পর ঋণ চুক্তি, প্রকল্প চুক্তি ও অনুদান চুক্তি স্বাক্ষরের আগে নেগোশিয়েটেড দলিলাদির ওপর আইন ও সংসদ বিষয়ক বিভাগের মতামত নেওয়া হবে।