নিজস্ব প্রতিবেদক : নড়াইলে অস্ত্রোপচারের সময় অর্চনা রানী পাল নামের এক প্রসূতির মৃত্যু হয়েছে। অবেদনবিদ ছাড়াই অস্ত্রোপচার করতে গিয়ে তাঁর মৃত্যু হয় বলে অভিযোগ করেছেন স্বজনেরা।গত বৃহস্পতিবার উপজেলা সদরের লক্ষ্মীপাশা মা সার্জিক্যাল ক্লিনিকে এ অস্ত্রোপচার করা হয়। অর্চনা রানী পাল (৩৮) উপজেলার কাশিপুর ইউনিয়নের শাহবাজপুর গ্রামের দিনমজুর রামগোপাল পালের স্ত্রী। তাঁদের তিন সন্তান রয়েছে। স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, অর্চনা রানীকে গতকাল বেলা ১১টার দিকে ওই ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়। সাড়ে ১১টার দিকে তাঁকে অস্ত্রোপচার কক্ষে নেওয়া হয়। চিকিৎসক ডেভিড তন্ময় বিশ্বাস অস্ত্রোপচার করেন। বেলা দেড়টার দিকে অর্চনাকে বের করে এনে অ্যাম্বুলেন্সে তোলা হয়। এ বিষয়ে ক্লিনিক মালিক শেখ জাহাঙ্গীর আলম বলেন, রোগীকে দ্রুত খুলনায় নিতে হবে।
নিহত অর্চনা পালের বোন নমিতা পাল বলেন, অস্ত্রোপচার কক্ষে কোনো অবেদনবিদ ছিলেন না। এ অবস্থায় অজ্ঞান করতে গিয়ে অর্চনার মৃত্যু হয়েছে বলে তাঁদের ধারণা। ক্লিনিকের লোকজনকে কানাঘুষা করতে দেখে তিনি বুঝতে পারেন, অর্চনার মৃত্যু হয়েছে। এ সময় তিনি চিৎকার দিলে লোকজন জড়ো হয়। প্রত্যক্ষদর্শী ব্যক্তিরা জানান, জনরোষের মুখে ক্লিনিক মালিক ও তাঁর লোকজন পালিয়ে যান। পরে পুলিশ গিয়ে লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়। খবর পেয়ে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সৈয়দ ফয়জুল আমির, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. সেলিম রেজা ও পৌর মেয়র আশরাফুল আলম ঘটনাস্থলে যান। অর্চনার স্বামী রামগোপাল অভিযোগ করেন, এ ঘটনায় আপস করার জন্য তাঁকে চাপ দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু তিনি স্ত্রী হত্যার বিচার চান। অভিযোগের বিষয়ে বক্তব্য জানতে ক্লিনিকের মালিক শেখ জাহাঙ্গীর আলম এবং চিকিৎসক ডেভিড তন্ময় বিশ্বাসের মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন দেওয়া হলেও তা বন্ধ পাওয়া যায়। ইউএনও মো. সেলিম রেজা এ প্রতিবেদক উজ্জ্বল রায়কে বলেন, ক্লিনিকের অস্ত্রোপচার কক্ষ থেকে আলামত জব্দ করা হয়েছে। অবেদনবিদ না থাকার কারণেই হয়তো এ দুর্ঘটনা ঘটেছে। ওই ক্লিনিক থেকে সব রোগী সরিয়ে নিতে বলা হয়েছে। ক্লিনিকটি সিলগালা করা হবে।