২৪শে আগস্ট, ২০১৬ ইং, বুধবার ৯ই ভাদ্র, ১৪২৩ বঙ্গাব্দ


জীবনে সব এনে দেয় ইচ্ছে পূরণ গাছ!


Amaderbrahmanbaria.com : - ২০.০৮.২০১৬

ডেস্ক রিপোর্ট : মূল সড়কের পাশেই পাকা গেট। ওই গেট দিয়ে প্রবেশ করার পর এগিয়ে গেলেই চোখে পড়ে একটি বড় দীঘি। এর বাঁধাই করা ঘাটে মানুষের ভির। আর তাদের আগ্রহের কেন্দ্রে দীঘিতে ভাসমান বড় বড় কচ্ছপ। কেউ কচ্ছপের শরীর ছুঁয়ে দেখছে, কেউ খাবার দিচ্ছে আবার কেউ তার শিশু সন্তানকে দিয়ে কচ্ছপের শরীর ছুঁয়ে দেখাচ্ছে। ভক্তদের বিশ্বাস, কচ্ছপ ছুঁয়ে দিতে পারলে ওই শিশু সন্তানের মঙ্গল হবে।

এ দৃশ্য চট্টগ্রাম শহরের নাসিরাবাদে পাহাড়ের উপরে অবস্থিত ইরানের বিখ্যাত পার্সিয়ান সুফি বায়েজিদ বোস্তামীর নামে গড়ে ওঠা মাজারের সামনে। চট্টগ্রামের ধর্মপ্রাণ মানুষের পাশাপাশি দেশী বিদেশী পর্যটকদের জন্যও এ মাজারটি একটি অত্যন্ত আকর্ষণীয় স্থান।

বর্তমানে এই দীঘিতে দেড়শো থেকে সাড়ে তিনশো কচ্ছপের আবাস রয়েছে বলে ধারণা করা হয়। প্রজনন মৌসুমে মাজারের মূল পাহাড়ের পেছনে সংরক্ষিত স্থানে এদের ডিম পাড়ার ব্যবস্থা করা হয়।

মাজারের ভক্তকূল ও আঞ্চলিক জনশ্রূতি অনুযায়ী মাজার প্রতিষ্ঠাকালে এই অঞ্চলে প্রচুর দুষ্ট জ্বীন এবং পাপীষ্ঠ আত্মার পদচারণা ছিলো। বায়েজিদ বোস্তামী এই অঞ্চলে ভ্রমনকালে এইসব দুষ্ট আত্মাকে শাস্তিস্বরূপ কচ্ছপে পরিণত করেন এবং আজীবন পুকুরে বসবাসের দণ্ডাদেশ প্রদান করেন।

দীঘির ঘাটলা থেকে কয়েকে কদম এগিয়ে গেলেই মাজারের সিড়ি। ওই সিড়ি বেয়ে পাহাড়ের উপরে উঠলে মূল মাজারের স্থাপনা।

জানা যায়, এই সমাধির অবয়ব সর্বপ্রথম ১৮৩১ সালে পাহাড়ের উপরিভাগে একটি দেয়ালঘেরা আঙ্গিনার মাঝে আবিস্কার করা হয়। আঙ্গিনার ঠিক মাঝামাঝি একটি শবাধার অবস্থিত। পরবর্তীতে সমাধিস্থলটি আধুনিক কাঠামো দ্বারা প্রতিস্থাপিত হয়।

যদিও বায়েজিদ বোস্তামীর নাম অনুসারে এই মাজার, ইরানের বিখ্যাত সুফী বায়েজিদ বোস্তামীর এই অঞ্চলে আগমনের কোনো ঐতিহাসিক ভিত্তি খুঁজে পাওয়া যায় না। ধারণা করা হয় সুফী সাধক ও আউলিয়াগণ চট্টগ্রামে ইসলাম ধর্ম প্রচারের সময় সচরাচর পাহাড় এর উপরে কিংবা জঙ্গল ঘেরা অঞ্চলে আবাস স্থাপন করেন এবং এসব জায়গাতে মাজার কিংবা এই ধরণের বিভিন্ন স্থাপনা প্রতিষ্ঠা করেন। বায়েজিদ বোস্তামীর মাজারটাও মূলত উনাকে উৎসর্গ করে প্রতিষ্ঠিত একটি প্রতিরূপ মাত্র।

মাজার আঙ্গিনায় বেড়ে ওঠা কয়েকটি গাছ রয়েছে। এগুলোকে বলা হয় ইচ্ছে পূরণ গাছ। তাই মাজার পরিদর্শনে আসা ভক্তরা চিরকুটে বিভিন্ন আর্জি লিখে গাছের সাথে ঝুলিয়ে দেন। তারা মনে করেন, যে আশায় সুতা বেঁধে দেন, ইচ্ছে পূরণ গাছের উছিলায় তা পূরণ হয়। ইচ্ছে পূরণ গাছের প্রতি ভক্তদের কতটা বিশ্বাস, তা অনুমান করা যায় গাছের চিত্র দেখলেই। প্রতিটি গাছে এমনভাবে সুতা বাঁধা হয়েছে যে গাছের পুরোটা লাল রং ধারণ করেছে।

পাহাড়ের পাদদেশে একটি তিন গম্বুজ বিশিষ্ঠ মোঘলরীতির আয়তাকার মসজিদ। স্থাপত্যশৈলী থেকে ধারণা করা হয় মোঘল সম্রাট আওরঙ্গজেব এর আমলে মসজিদটি নির্মিত। বিডি২৪লাইভ





Loading...


প্রকাশকঃ মোঃ আশ্রাফুর রহমান রাসেল
সম্পাদকঃ জাবেদ রহিম বিজন

Amaderbrahmanbaria.com
email : [email protected] (news)
Phone: +880851 62307
+8801963094563



close