স্পোর্টস ডেস্ক : রিও ডি জেনিরোর আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে বেশ দুরবস্থার মধ্যেই পড়েছিল ব্রাজিল সরকার। মাঝেমধ্যেই ঘটছিল চুরি-ছিনতাইয়ের ঘটনা। এরই মধ্যে খবর আসে ছিনতাইকারীদের অস্ত্রের মুখে পড়েছেন স্বর্ণজয়ী সাঁতারু রায়ান লক্টি। তাঁর সঙ্গে ছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের আরো তিন সাঁতারু। ঘটনাটির সত্যতা নিয়ে আসতে থাকে একেক রকম ভাষ্য। আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটি এমন ঘটনার কথা ‘পুরোপুরি মিথ্যা’ বলে উড়িয়ে দেয়। অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্রের অলিম্পিক কমিটি দাবি করে যে, সত্যিই ছিনতাইয়ের শিকার হয়েছেন চার সাঁতারু। তবে এখন জানা যাচ্ছে যে ঘটনা একেবারেই ভিন্ন। নিজেদের অপকর্মের কথা ধামাচাপা দেওয়ার জন্য ছিনতাইয়ের মিথ্যা নাটক সাজিয়েছিলেন লক্টিরা। আর এজন্য জরিমানাও দিতে হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের এক সাঁতারুকে।
ঘটনার সূত্রপাত গত রোববার। ফ্রান্সের অলিম্পিক দলের এক পার্টি শেষ করে অলিম্পিক ভিলেজে ফিরছিলেন লক্টি, জ্যাক কঙ্গার, গুনার বেঞ্জ ও জেমস ফেইগেন। সেই সময়ই তাদের গাড়ি থামিয়ে ছিনতাই করা হয়েছে বলে দাবি করেছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের এই সাঁতারুরা। কিন্তু পুলিশের কাছে বক্তব্য দেওয়ার সময় চারজনের কথায় ধরা পড়ে যায় অসঙ্গতি। বিষয়টি ভালোভাবে খতিয়ে দেখার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের এই সাঁতারুদের আটক করার নির্দেশ দেয় অলিম্পিক উপলক্ষ্যে গঠিত রিওর বিশেষ ট্রাইব্যুনাল। লক্টি আগেই চলে গিয়েছিলেন যুক্তরাষ্ট্রে। আর বিমানে ওঠার ঠিক আগমুহূর্তে আটক করা হয় কঙ্গার ও বেঞ্জকে। ফেইগেন তখনো ছিলেন রিওতে। তিনজনকে আটক করে আবার জেরা করে রিও পুলিশ। এ সময়ই বেরিয়ে আসে সত্যি ঘটনা। তিনজনই স্বীকার করেন যে, ছিনতাইয়ের ঘটনাটি তাঁরা নিজেরাই বানিয়েছেন।
অলিম্পিক ভিলেজে ফেরার পথে একটি গ্যাস স্টেশনে ঢুকেছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের এই চার সাঁতারু। ভাঙচুর করেছিলেন সেখানকার বাথরুমে। এই ঘটনায় ক্ষতিপূরণ দাবি করেছিলেন গ্যাস স্টেশনের কর্মীরা। এ সময় সেখানে হাজির হয়েছিলেন সশস্ত্র নিরাপত্তাকর্মীরা। শেষপর্যন্ত ক্ষতিপূরণ দিয়ে সেখান থেকে চলে গিয়েছিলেন লক্টিরা। নিজেদের এই অপকর্মের কথা চাপা দেওয়ার জন্যই তাঁরা পরবর্তী সময়ে সাজিয়েছিলেন ছিনতাইয়ের নাটক। কিন্তু সেই গ্যাস স্টেশনের ফুটেজ থেকে দেখা যায় যে ছিনতাইয়ের কোনো ঘটনাই সেখানে ঘটেনি। সাঁতারুদের এই অপকর্মে দুঃখ প্রকাশ করেছে যুক্তরাষ্ট্রের অলিম্পিক কমিটি। আর ব্যাপারটা মীমাংসা করার জন্য ১১ হাজার ডলার জরিমানা দিতে হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের সাঁতারু ফেইগেনকে। জরিমানার এই অর্থ দেওয়া হবে ব্রাজিলের একটি দাতব্য প্রতিষ্ঠানে।
গতকাল বৃহস্পতিবার পুলিশের হাত থেকে ছাড়া পেয়ে যুক্তরাষ্ট্রে ফিরে গেছেন কঙ্গার ও বেঞ্জ। কিন্তু ফেইগেন তখনো ছিলেন পুলিশি হেফাজতে। শেষপর্যন্ত জরিমানা দেওয়ার শর্তে তাঁকে ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ব্রাজিলের পুলিশ।