আধুনিক পৃথিবীতে চিকিৎসা বিজ্ঞানের কল্যাণে মানুষের গড় আয়ু বাড়ছে। কিন্তু ১২০ বছর বয়সি মানুষ পৃথিবীতে রয়েছেন মাত্র একজনই। তিনি ভারতের বাসিন্দা। বারাণসীর সন্ন্যাসী স্বামী শিবানন্দের দাবি তার বয়স ১২০ বছর। সেই হিসেবে তিনিই পৃথিবীর প্রবীণতম নাগরিক। স্বামী শিবানন্দের পাসপোর্টে জন্ম তারিখ লেখা রয়েছে ৮ অাগস্ট ১৮৯৬। কিন্তু এই জন্ম তারিখ পাসপোর্ট কর্তৃপক্ষ পেল কীভাবে তাই নিয়ে উঠেছে প্রশ্ন।
জানা যাচ্ছে, স্থানীয় একটি মন্দিরের জন্ম-নথিভুক্তির খাতা থেকে পাওয়া গেছে শিবানন্দের এই জন্ম তারিখটি। এই তারিখটি অবশ্য তেমন নির্ভরযোগ্য নয়। কিন্তু মন্দিরের জন্ম নথিভুক্তির খাতাই ভারতের অনেক বাসিন্দারই জন্ম তারিখের একমাত্র উৎস। শিবানন্দও সেরকমই একজন। মাত্র ৬ বছর বয়সে শিবানন্দ পিতা-মাতা হারান। এরপর তার আত্মীয়রা তাকে এক আধ্যাত্মিক গুরুর কাছে সমর্পণ করে দেন। ছোটবেলায় দারিদ্র্যের কারণে যথেষ্ট কষ্ট পেতে হয়েছে তাকে।
অল্প বয়সেই সন্ন্যাস ধর্ম গ্রহণ করে একেবারে সাধাসিধা জীবনযাপন করবেন বলে ঠিক করে নেন শিবানন্দ। সম্প্রতি কলকাতায় এসেছিলেন শিবানন্দ। সেই সময় সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলছিলেন তিনি। তার দীর্ঘায়ুর রহস্য কী জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘‘অত্যন্ত সাধারণ জীবনযাপনের কারণেই দীর্ঘ ও নীরোগ জীবন পেয়েছি আমি। ছোটবেলা থেকেই তেল ঝাল মশলা বিবর্জিত, একেবারে সিদ্ধ খাবার খাওয়া আমার অভ্যাস। সেই সঙ্গে কঠোর নিয়মনিষ্ঠ জীবনযাপন করেছি আমি। যৌনতায় লিপ্ত হইনি কখনও। দিনে এখনও দু’ ঘন্টা করে যোগ ব্যায়াম করা আমার অভ্যাস।’’ তার দাবি যে এতটুকু মিথ্যা নয়, তা প্রমাণ করতেই সংবাদ মাধ্যমের সামনে নিজের পাঁচ ফুট দু’ ইঞ্চির শরীরটাকে যোগ ব্যায়ামের মুদ্রায় বেঁকিয়ে দেখালেন শিবানন্দ।
সম্প্রতি বিশ্বের প্রবীণতম ব্যক্তির শিরোপা পাওয়ার জন্য গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস-এর কাছে আবেদন করেছেন শিবানন্দ। এতদিন পর্যন্ত এই শিরোপা ছিল জাপানের জিরোয়েমন কিমুরার কাছে। যিনি ১১৬ বছর বয়সে প্রয়াত হন। তবে অনেকে অবশ্য শিবানন্দের বয়স নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন। তাতে কি? তিনি যে বৃদ্ধ সে বিষয়ে তো কোন সন্দেহ নেই। বার্ধক্যেও কীভাবে নীরোগ জীবনযাপন করা যায় তার দৃষ্টান্ত হিসেবে তিনি তো অনুসরণযোগ্য হতেই পারেন। সূত্র: এবেলা