শর্তভঙ্গ করে লাঠিসোটা নিয়ে সমাবেশে বিএনপি
বিএনপির সমাবেশ থেকে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) দেয়া শর্ত ভঙ্গ করা হয়েছে। ২২ শর্তে দলটিকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশের অনুমতি দেয়া হয়েছিল। তবে তারা বেশ কয়েকটি শর্ত ভঙ্গ করেছে।
ডিএমপির ১৯ নম্বর শর্ত অনুযায়ী সমাবেশে কোনো ধরনের লাঠি-সোটা/ব্যানার, ফেস্টুন বহনের আড়ালে লাঠি, রড ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা থাকলেও বিএনপির সমর্থকদের লাঠিসোটা নিয়ে আসতে দেখা গেছে।
ডিএমপির দেয়া ৫ নম্বর শর্ত অনুযায়ী সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের অভ্যন্তরে জনসভার কার্যক্রম সীমাবদ্ধ রাখার কথা বলা হলেও বিএনপির অধিকাংশ সমর্থক উদ্যানের বাইরে ও রমনা পার্কের ভেতরে জড়ো হচ্ছেন। সেখানেও বিচ্ছিন্নভাবে বক্তৃতা দিচ্ছেন। একত্র হয়ে উদ্যানে ঢুকছেন। সোহরাওয়ার্দী থেকে শাহবাগের সড়কে শোডাউন করতে দেখা গেছে।
ডিএমপির দেয়া ১৩ নম্বর শর্তে অনুমোদিত স্থানের বাইরে, রাস্তায় বা ফুটপাতে লোক সমাগম করা যাবে না বলে উল্লেখ করা হয়। তবে বিএনপির সমর্থকরা শাহবাগ, মৎসভবন, ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউট, রমনা পার্ক এলাকার সড়ক ও ফুটপাথে অবস্থান নিয়েছেন।
ডিএমপির ১৮ নং শর্ত অনুযায়ী অনুমোদিত সময়ের পূর্বে কিংবা পরে রাস্তায় কোনো অবস্থাতেই সমবেত হওয়া যাবে না ও যান চলাচলে কোনো প্রকার প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা যাবে না। ২০ নম্বরে মিছিল করে সমাবেশে আসা যাবে না বলে উল্লেখ করা হলেও সেটিও মানা হচ্ছে না। বিএনপির নেতাকর্মীদের ভিড়ে মৎস্যভবন থেকে শাহবাগে সড়কে কোনো যান চলাচল করছে না। শাহবাগ থেকে মৎস্যভবনের সড়কে দীর্ঘ যানজট দেখা গেছে।
ডিএমপির দেয়া ৯ নম্বর শর্তে নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় ভেহিকেল স্ক্যানার (যানবাহন তল্লাশি) সার্চ মিরর-এর মাধ্যমে জনসভাস্থলে আগত সকল যানবাহন তল্লাশির ব্যবস্থা করার কথা হলেও সেটি করেনি বিএনপি। তল্লাশি ছাড়াই সবার গাড়ি ঢুকছে উদ্যানে।
ডিএমপির শর্তগুলোর মধ্যে রয়েছে— সমাবেশে আইন-শৃঙ্খলাপরিপন্থী, রাষ্ট্র ও জননিরাপত্তাপরিপন্থী কোনো কার্যকলাপ পরিচালনা করা যাবে না, উসকানিমূলক কোনো বক্তব্য এবং প্রচারপত্র বিলি করা যাবে না, ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানে— এমন কোনো ব্যঙ্গচিত্র প্রদর্শন, বক্তব্য প্রদান ও প্রচার করা যাবে না, সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের অভ্যন্তরে সমাবেশের যাবতীয় কার্যক্রম সীমাবদ্ধ রাখতে হবে, নিরাপত্তা ও শৃঙ্খলা নিশ্চিত করতে আইডি কার্ডসহ নিজস্ব স্বেচ্ছাসেবক বাহিনী নিয়োগ করতে হবে, স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনের নির্দেশ অনুযায়ী নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় জনসভাস্থলে সিসি ক্যামেরা স্থাপন করতে হবে, নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় প্রতিটি প্রবেশ পথে আর্চওয়ে স্থাপন করতে হবে, নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় জনসভাস্থলে আসা প্রতিটি যানবাহন তল্লাশি করতে হবে, নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় জনসভাস্থলে অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা রাখতে হবে, অনুমোদিত স্থানের বাইরে সাউন্ড সিস্টেম ব্যবহার করা যাবে না, অনুমোদিত স্থানের বাইরে সড়ক ও ফুটপাতে প্রজেকশন ব্যবহার করা যাবে না, অনুমোদিত স্থানের বাইরে সড়কে অথবা ফুটপাতে সমবেত হওয়া যাবে না, আজান, নামাজ এবং ধর্মীয় সংবেদনশীল সময় মাইক চালু রাখা যাবে না, জনসভার মঞ্চ অন্য কোনো কাজে ব্যবহার করা যাবে না, জনসভার ২ ঘণ্টা আগে মানুষ জনসভাস্থলে আসতে পারবে, বিকেল ৫টার মধ্যে জনসভা শেষ করতে হবে, মিছিলসহকারে জনসভায় আসা যাবে না, ব্যানার-ফেস্টুনের আড়ালে কোনো ধরনের লাঠি, সোটা, রড আনা যাবে না, শর্ত না মানলে তাৎক্ষণিকভাবে অনুমতি বাতিল বলে গণ্য হবে, জনস্বার্থে কোনো কারণ দর্শানো ছাড়াই কর্তৃপক্ষ এ অনুমতি বাতিল করতে পারবে।