বাংলাদেশে নিরাপদ স্বাস্থ্য সেবা পেয়ে খুশি রোহিঙ্গা নারীরা
ডেস্ক রিপোর্ট : রোহিঙ্গা সংকট সৃষ্টি হওয়ার পর অন্যতম চ্যালেঞ্জ ছিল প্রায় চার লাখ নারীর স্বাস্থ্য ঝুঁকি এড়ানো। সরকারি-বেসরকারি সংস্থাগুলোর উদ্যোগে গত এক বছরে এর অনেকটাই কাটিয়ে ওঠা গেছে। রোহিঙ্গা নারীরা বলছেন, মিয়ানমারে যেখানে তাদের কখনো হাসপাতালে যাওয়ারই সুযোগ হয়নি, সেখানে বাংলাদেশে এমন স্বাস্থ্যসেবা পাওয়া তাদের কাছে অকল্পনীয় বিষয়।
গেলো বছরের আগস্টে হত্যা-নির্যাতনের মুখে মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসে প্রায় ১০ লাখ রোহিঙ্গা। এদের বেশিরভাগই নারী-শিশু। প্রায় চার লাখ নারীর মধ্যে ২৫ শতাংশ গর্ভবতী ও ১০ শতাংশ সদ্য মা হওয়া। এদের স্বাস্থ্যসেবা দিতে সরকারের পাশাপাশি টেকনাফের রোহিঙ্গা ক্যাম্পে কাজ করছে কয়েকটি এনজিও। বেসরকারি সংস্থা ব্র্যাক কয়েকটি স্বাস্থ্য ক্যাম্পে রোহিঙ্গা নারী-শিশুদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা, গর্ভবতী নারীদের চিকিৎসা, পরিবার পরিকল্পনা ও সন্তান প্রসবে সহায়তা করছে।
রোহিঙ্গা নারীরা জানালেন, মিয়ানমারে তারা কখনো পরিবার-পরিকল্পনার কথা শোনেননি এবং হাসপাতালে যাওয়ারও সুযোগ পাননি। নিরাপদে সন্তান জন্ম দিতে পারাটা তাদের জন্য রীতিমতো ভাগ্যের বিষয়।
এক রোহিঙ্গা নারী জানান, পরিবার পরিকল্পনা সম্পর্কে কিছুই জানতাম না। ব্র্যাকের আপাদের কাছে অনেক কিছু শিখেছি। হাসপাতালে অনেক ভালো চিকিৎসা পাচ্ছি। আমার তিনটি বাচ্চা, আর বাচ্চা নেব না। আমরা বার্মায় ফিরে যেতে চাই।
আরেক রোহিঙ্গা নারী জানান, বার্মায় আমার চারটি বাচ্চা হয়েছে। কোনোদিন হাসপাতালে যায়নি। আমরা হাসপাতালে যেতে পারতাম না। আমরা দুইটি যমজ বাচ্চা হয়েছে। এখানে ডাক্তার ও স্বাস্থ্যকর্মীরা অনেক সহায়তা করছেন।
ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৪৮ জন স্নাতক ডিগ্রিধারী ধাত্রী শরণার্থী শিবিরে স্বাস্থ্যসেবা দিচ্ছেন। গেল ছয় মাসে তারা সফলভাবে তিন হাজার ২০০টি নরমাল ডেলিভারি করেছেন।
ধাত্রীরা জানান, গর্ভবতী মেয়েদের গর্ভকালীন সময়ের সেবা, প্রসবকালীন সময় ও গর্ভকালীন পরবর্তী সেবা দিয়ে থাকেন।
ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেভেলপিং মিডওয়াইভস প্রজেক্টের উপদেষ্টা ডা. শারমিনা রহমান বলেন, সেন্টারগুলোতে ১৪৮জন কাজ করছেন। তারা সীমিত জনবল, সীমিত অবকাঠামোর মাধ্যমে মানসম্মত সেবা দিচ্ছেন। এটাই অনেক বড় সফলতা। খুবই সূক্ষ্মভাবে সফলতার সাথে তারা ডেলিভারির সময় ও পরবর্তীতে সেবা দিয়ে আসছেন।
কেবল রোহিঙ্গা ক্যাম্পে নয়, সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে ধাত্রী সংখ্যা বাড়ালে সারাদেশে স্বাভাবিক প্রসবের সঙ্গে সঙ্গে নিরাপদ মাতৃস্বাস্থ্য নিশ্চিত করা সম্ভব বলে মনে করেন এ স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ। আরটিভি