চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে র্যাবের ঘিরে রাখা বাড়িতে বোমা বিস্ফোরণ
চট্টগ্রাম (মীরসরাই) প্রতিনিধি : চট্টগ্রামের মিরসরাই উপজেলার উত্তর সোনাপাহাড় এলাকায় জঙ্গি আস্তানা সন্দেহে একটি বাড়ি ঘিরে রেখেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)। আস্তানা থেকে র্যাবকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়া হয়। বাড়িটির ভেতরে বড় ধরনের বোমা বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে বলে দাবি করেছে র্যাব। বিস্ফোরণে একতলা টিনশেডের বাড়ির টিনের চাল উড়ে গেছে। ঢাকা থেকে বোমা নিষ্ক্রিয়করণ দল ঘটনাস্থলে গিয়ে বাড়ির ভেতরে অভিযান শুরু করেছে।
এই প্রতিবেদককে ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন র্যাব-৭ চট্টগ্রামের সহকারী পরিচালক মিমতানুর রহমান। তিনি বলেন, জঙ্গিরা অবস্থান করছে এমন গোপন সংবাদের ভিত্তিতে র্যাব-৭ অভিযান চালায়। র্যাবের সঙ্গে জঙ্গিদের গুলিবিনিময়ের ঘটনা ঘটেছে। বাড়ির ভেতর থেকে বোমা বিস্ফোরণ ঘটানো হয়েছে।
বাড়ির মালিক মাজহারুল হক ও তত্ত্বাবধায়ককে আটক করেছে র্যাব।
র্যাব ও স্থানীয় লোকজন সূত্রে জানা গেছে, উত্তর সোনাপাহাড় এলাকায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের একবারে লাগোয়া পূর্ব দিকে বাড়িটির অবস্থান। বাড়ির মালিক মাজহারুল হক পাঁচ কক্ষের বাড়িটি ভাড়া দিয়ে পার্শ্ববর্তী অন্য এলাকায় ভাড়া থাকেন। এই বাড়িটিতে তত্ত্বাবধায়ক হিসেবে কাজ করেন এক ব্যক্তি। স্থানীয়ভাবে তাঁকে ‘হক সাব’ বলে ডাকা হয়। দুজনকে রাতেই আটক করে নিয়ে যায় র্যাব। তবে তাঁরা র্যাবকে কী তথ্য দিয়েছেন বা বাড়িটিতে কত লোক অবস্থান করছেন, তা জানা যায়নি। র্যাব রাত সাড়ে তিনটার দিকে অভিযান শুরু করার সময় চট্টগ্রাম থেকে ঢাকামুখী সড়কের লেন বন্ধ করে দেওয়া হয়। ওই সময় বিকল্প পথে যানবাহন চলাচল করে। ঘণ্টা খানেক পর ওই লেন খুলে দেওয়া হয়। সেখানে যান চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে।
ঘটনাস্থল চারপাশ দিয়ে র্যাব ও পুলিশ ঘিরে রেখেছে। প্রচুর সংখ্যক স্থানীয় লোক সেখানে ভিড় করেছেন। তবে বাড়িটির কাছাকাছি কাউকে ভিড়তে দেয়নি র্যাব ও পুলিশ। গুলি ও বোমার আঘাতে বাড়িটির জানালার কাচ ভেঙে গেছে। দেয়ালের জায়গায় জায়গায় গুলির চিহ্ন। বিকট শব্দে বোমা বিস্ফোরণের পর বাড়ির টিনের চালা উড়ে যায়।
র্যাব জানায়, গ্রেপ্তার অন্য জঙ্গিদের কাছ থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে এই বাড়িটি জঙ্গিদের আস্তানা বলে জানা গেছে। বাড়িটি ঘেরাও করার পর র্যাব মাইকে ‘জঙ্গি’দের প্রতি আত্মসমর্পণের অনুরোধ জানায়। জঙ্গিরা আত্মসমর্পণ না করে র্যাবের দিকে গুলি ছোড়ে। তখন দুই পক্ষের মধ্যে গোলাগুলি হয়। এরপর ভোররাত চারটা ২২ মিনিটে বাড়ির ভেতর থেকে একটি বোমার বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। ঘটনাটি বড় ধরনের বোঝার পর র্যাবের ওই দলের সঙ্গে চট্টগ্রাম থেকে পরে আরও সদস্য যোগ দেন। এখন সেখানে অভিযানে র্যাবের ১৫০ সদস্য রয়েছে। সকাল নয়টার দিকে ঢাকায় র্যাবের সদর দপ্তর থেকে বোমা নিষ্ক্রিয়করণ দল আসার পর বাড়ির ভেতরে অভিযান শুরু হয়।
র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার মুখপাত্র কমান্ডার মুফতি মাহমুদ খান জানান, রাত সাড়ে তিনটা থেকে অভিযান শুরু হয়। অভিযান শুরুর করার পর লোকবল বাড়ানো হয়েছে। সূত্র: প্রথম আলো