চিত্রায় বিলুপ্তির পথে দেশিয় মাছ, উদ্যোগী ইউএনও
ঝিনাইদহ প্রতিনিধি: ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার মধ্যে দিয়ে প্রবাহিত চিত্রা নদীতে দেশিয় জাতের মাছ রক্ষায় উদ্যোগ নিলেন কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার উত্তম কুমার রায়। দেশিয় মাছ যাতে ডিম পাড়তে পারে এবং বংশ বিস্তার করতে পারে এর জন্য তিনি ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে বাধ অপসারণ ও দেশিয় মাছ ধরার ( ঘুনি, আটল,) সহ বিভিন্ন মাছ ধরার যন্ত্রাংশ উদ্ধার করে।
তার মধ্যে থেকে কয়েক কেজি ডিম ওয়ালা ট্যাংরাসহ দেশিয় মাছ নদীতে অবমুক্ত করেন। এ সময় তার সাথে ছিলেন উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা সাইদুর রহমান রেজা। বৃহষ্পতিবার (৫ জুলাই) সকাল থেকে তিনি এ অভিযানে নামেন। তবে এই অভিযানের সময় যারা বাধ দিয়েছে তাদের কাউকে আটক করা সম্ভব হয়নি।
স্থানীয়রা জানান, চিত্রা নদীটি কালীগঞ্জ উপজেলার মধ্যে দিয়ে প্রবাহিত হয়ে নড়াইল জেলায় গিয়ে অন্য নদীতে মিশেছে। এই নদীতে দেশীয় প্রজাতির (পুটি, ট্যাংরা, মাগুর, শিং, বোয়াল, গজাড়, টাকি, পাবদা) মাছ পাওয়া যায়। বর্ষার সময় এক শ্রেণীর মাছ শিকারী নদীতে আড়াআড়ি বাধ দিয়ে নদীর স্রোত বাধাগ্রস্থ করে মা মাছ বা ডিম ওয়ালা মাছ ধরে বাজারে বিক্রি করে।
এর মধ্যে উপজেলার ফাজিলপুর, কাদিরকোল, চাচড়া, নিমতলা, ফয়লা, হেলাই, চাপালি, ফরাশপুর, সিঙ্গিবাজার, আলাইপুর, শালিখাসহ অর্ধশতাধিক স্থানে বাশ, চাই, পলিথিন, জাল ও দেশিয় তৈরি মাছ ধরার যন্ত্র নিয়ে মাছ ধরে। প্রতি বছর ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালিত হলেও প্রশাসনের চোখ ফাকি দিয়ে মা মাছ ও ছোট মাছ ধরে।
কালীগঞ্জ উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা সাইদুর রহমান রেজা জানান, বিভিন্ন এলাকা থেকে অভিযোগ আসছিল চিত্রা নদীতে বাধ দিয়ে ডিম ওয়ালা দেশীয় মাছ নিধন করা হচ্ছে। এমন অভিযোগের প্রেক্ষিতে তারা অভিযান চালিয়ে বেশ কয়েকটি বাধ অপসারণ ও মাছ ধরার যন্ত্রের মধ্যে থেকে ডিম ওয়ালা মাছ উদ্ধার করে আবার নদীতে ছেড়ে দিয়েছেন। তিনি বলেন, যে মাছগুলো মুক্ত করা হয়েছে তার অধিকাংশের পেটে ডিম রয়েছে। তিনি বলেন পর্যায়ক্রমে উপজেলার সকল নদী ও খাল থেকে বাধ অপসারণ করা হবে।
কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট উত্তম কুমার রায় জানান, দিন দিন খাল-বিল নদী থেকে দেশীয় প্রজাতির মাছ বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে। কিন্তু বর্ষার সময় কিছু নদীতে ডিম ওয়ালা মা মাছ দেখা যায়। এই সুযোগে স্থানীয় কিছু অসাধু ব্যক্তি নদীতে বাধ দিয়ে ডিম ওয়ালা মাছ গুলো ধরে এবং বাজারে বিক্রি করে।
ডিম ওয়ালা মাছগুলো যদি ডিম ঠিক মতো নদীতে পাড়তে পারে তাহলে প্রচুর মাছ পাওয়া যাবে। ডিম ওয়ালা মাছ রক্ষা ও নদীতে মাছের বংশ বৃদ্ধির জন্য তিনি ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে নদী থেকে বাধ অপসারণ করেছেন। বৃহষ্পতিবার বেশ উপজেলার কয়েকটি স্থানে বাধ অপসারণ ও মাছ ধরার যন্ত্রাংশ উদ্ধার করা হয়। তিনি বলেন, এ অভিযান অব্যাহত থাকবে। এবং ডিম ওয়ালা মাছ না ধরার জন্য আইন রয়েছে, দুই এক দিনের মধ্যে জনসচেতনা বৃদ্ধার জন্য মাইকিং করা হবে।