প্রিয় বন্ধুর রক্তমাখা দেহ দেখতে সহপাঠীদের ভিড়
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) রিকশায় অচেতন হয়ে পড়ে যাওয়ার সময় মাথায় আঘাত লেগে মাহমুদুল হাসান নামে এক শিক্ষার্থীর আকস্মিক মৃত্যু হয়েছে।মঙ্গলবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ক্লাবের সামনে এ ঘটনা ঘটে। পরে তাকে উদ্ধার করে বিশ্ববিদ্যালয় চিকিৎসা কেন্দ্রে নেয়া হয়। সেখান থেকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নেয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।বিষয়টি নিশ্চিত করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির এএসআই আলাউদ্দিন তালুকদার জানান, মাথায় আঘাতে চবি শিক্ষার্থী মাহমুদুল হাসানের মৃত্যু হয় বলে প্রাথমিকভাবে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন। তবে ময়নাতদন্ত শেষে মূল কারণ জানা যাবে।
নিহত মাহমুদুল জয়পুরহাট জেলার আবদুল মালেকের ছেলে। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের বন ও পরিবেশবিদ্যা ইনস্টিটিউটের ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। মাস্টারদা সূর্যসেন আবাসিক হলে থাকতেন তিনি।বিশ্ববিদ্যালয় চিকিৎসক কেন্দ্রের প্রধান চিকিৎসা কর্মকর্তা ডা. আবু তৈয়ব জানান, ওই শিক্ষার্থীর মাথায় আঘাত ছিল। নাকে রক্ত ঝড়ছিল। তার ওজন অনেক ছিল। তার বন্ধুরা জানিয়েছেন তার উচ্চ রক্ত চাপ ছিল। আগেও বেশ কয়েকবার অজ্ঞান হয়েছিলেন। আমরা তাকে এখানে মৃত অবস্থায় পেয়েছি। পরে চমেক হাসপাতালে পাঠানো হয়েছিল।
তার আকস্মিক মৃত্যুর খবরে বন্ধুরা হাসপাতালে ছুটে আসে। এ সময় এক হৃদয় বিদারক দৃশ্যের অবতারণা হয়। সকলে কান্নায় ভেঙে পড়েন। বন্ধুদের আহাজারিতে ভারী হয়ে উঠে জরুরি বিভাগের পরিবেশ। লাশ ঘরে প্রিয় বন্ধুর রক্তমাখা নিথর দেহ এক নজর দেখে বার বার মূর্ছা যাচ্ছিলেন সায়মা নামে এক শিক্ষার্থী। শত চেষ্টায়ও সহপাঠীরা তাকে সেখান থেকে সরাতে পারেননি।ইফতেখার চৌধুরী নামে মাহমুদুল হাসানের এক বন্ধু কান্নাজড়িত কণ্ঠে জাগো নিউজকে বলেন, ক্লাসের সবার প্রিয়মুখ ছিল হাসান। শুরুর দিন থেকেই আমাদের বন্ধুত্বের পথচলা। এত মিশুক ও প্রিয় বন্ধু অকালে হারিয়ে ফেলবো আমরা তা কল্পনাও করিনি।
এদিকে বিকেল থেকেই প্রিয় বন্ধুর ময়নাতদন্তে আপত্তি জানায়, বিভাগের সহপাঠীরা। পরে পরিবারের সম্মতিতে ও শিক্ষকদের পরামর্শে তারাও সম্মতি জানায়। কিন্তু নির্ধারিত সময়ের আগে মর্গে লাশ নিতে দেরি হওয়ায় ময়নাতদন্ত আগামীকাল সকালে হবে বলে জাগো নিউজকে জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর আলী আজগর চৌধুরী। যিনি শুরু থেকে হাসপাতালে বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষে সব কিছু সমন্বয় করছেন।তিনি জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের জন্য বাসের ব্যবস্থা করা হয়েছে। বিকেলে উপাচার্য প্রফেসর ড. ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরী মর্গে নিহত শিক্ষার্থীকে দেখতে আসেন। এ সময় বিভাগের শিক্ষকরাও উপস্থিত ছিলেন।