বাম জোট মনে করে সংবিধান সম্মতভাবে নির্বাচন সম্ভব : কাদের
নিজস্ব প্রতিবেদক : আট দলীয় বাম জোটের সঙ্গে আওয়ামী লীগের মত ও অমতের কথা তুলে ধরে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আমাদের মত ও পথের অনেক গড়মিল আছে আবার চেতনায় আমরা মুক্তিযুদ্ধ। স্বাধীনতার আদর্শ ও মুক্তিযুদ্ধের মূলবোধ বঙ্গবন্ধুর অবিসাংবাদিত নেতৃত্ব জাতীয় মুক্তিসংগ্রামে, এ ব্যাপারে আমাদের মধ্যে মিল আছে।’
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘এখন কিছু কিছু বিষয়ে তাদের ভিন্নমতও আছে। আর তারা এটাও মনে করছেন যে সাংবিধানিকভাবে, সংবিধান সম্মতভাবে নির্বাচন সম্ভব। আর সংবিধানের ভেতরে থেকেও আরও কিছু সমস্য আছে যেগুলো সমাধান করা সম্ভব।’
মঙ্গলবার রাতে গণভবনে আট দলীয় বামজোটের সঙ্গে সংলাপ শেষে সাংবাদিকদের প্রেস ব্রিফিংয়ে ওবায়দুল কাদের এসব কথা বলেন।
সংলাপ প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘আমরা শুনেছি। আমাদের নেত্রী মুগ্ধ মনোযোগে সবার বক্তব্য শুনেছে। আট দলীয় জোটের অলমোস্ট সব পার্টি তারা বক্তব্য রেখেছেন এবং তাদের ভিন্নমতের কথাও তারা স্পষ্ট করে উচ্চারণ করেছেন। সেজন্য আমাদের নেত্রী তাদেরকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন।’
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আমি নির্বাচনে অংশগ্রহণের ব্যাপারে যখন কমিউনিস্ট পার্টির অফিসে গিয়েছিলাম তারা তখন এটা বলেছে যে আমরা আওয়ামী লীগের সঙ্গেও নেই বিএনপির সঙ্গেও নেই। এখন তারা আপনাদের কী বলেছে জানি না। আমরা সবার কথা শুনছি। আগামীকাল দুপুরেও শুনব। কাল সকালে ড. কামালে হোসেনের নেতৃত্বে ১১ জন আসবেন। নাম পাঠিয়েছেন। তারা দ্বীতিয় দফা সংলাপে অংশ নেবেন। আবার রাতে ২৫ টি দলের সঙ্গে সংলাপ আছে সন্ধ্যা ৭ টায়।’
আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ এই নেতা বলেন, ‘কালকেই শেষ হবে সংলাপের এবং আপনারা জানেন ইতিমধ্যে ৮ নভেম্বর দুপুর সাড়ে ১২টায় প্রধানমন্ত্রী এ কয়দিন যে সংলাপ হয়েছে তা নিয়ে সরকারি ও পার্টির সিদ্ধান্ত সংবাদ সম্মেলনের মধ্যদিয়ে দেশবাসীকে জানিয়ে দেবে।’
ঐক্যফ্রন্টের সঙ্গে আলোচনার আর কী বাকী আছে সেটা সবিনয়ে কাল সংলাপে জানতে চাওয়া হবে জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘একটা বিষয় পরিষ্কার হয়ে গেছে। তাদের যে জনসভা সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সেখানে যে ভালগারিজম, অবসিনিটি এটা আবার নতুন করে বাংলাদেশের পলিটিক্সে দেখলাম। দেখলাম যে মানুষের হতাশা যখন বেড়ে যায় তখন মানুষ বেপড়োয়া হয়ে যায়। অনেক নেতার বক্তব্যে এটাই মনে হয়েছে এবং প্রধানমন্ত্রীকে পর্যন্ত শালীনতা ছাড়া কথা বলা হয়েছে। তার নামটিও উচ্চারণ করা হয়েছে অশালীন ভাবে।’
ঐক্যফ্রন্ট নেতাদের দিকে ইঙ্গিত করে সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘কার মনে কী কারণে যন্ত্রণা, কী কারণে আতে ঘা লাগে আমি এটা খুব ভালো করে জানি। লেখালেখিতেও লিখছেন আবার আজকে একহাত নিলেন তো এগুলো কেউ ভালো চোখে, ভালোভাবে নেয় না। তাদেরকে আমি বলব যৌক্তিকভাবে কথা বলতে। ব্যক্তিগত আক্রমণের পর্যায়ে গেলে এটা কিন্তু গণতন্ত্রের জন্য শুভফল বয়ে আনবে না। সবার হাড়ির খবর আমরা জানি। যারা যারা বড় বড় কথা বলেন এবং হঠাৎকরে এমন দুয়েকজনকে দেখলাম খুব তাফালিং করছে। এ তাফালিংটা এমনভাবে যে এরা আবার ভদ্রমূর্তি ধারণ করে। এরকম ভাষা, এত নোংড়া ভাষা দেশের মানুষ পছন্দ করে!’
ঐক্যফ্রন্টের নেতাদের হুঁশিয়ারি দিয়ে কাদের বলেন, ‘আসুন, আন্দোলন করুন। ঘরে ঘরে বসে আন্দোলনের নামে রাস্তায় নাশকতা করবেন, সহিংসতা করবেন আর আমরা ঘরে বসে ডুগডুগি বাজাব এটা যেন মনে না করেন’।
নির্বাচনকালীন সরকার প্রসঙ্গে কাদের বলেন, ‘নির্বাচনকালীন কোনো সরকার নেই। যে সরকার আছে এ সরকারই।’