g রোহিঙ্গা এতিম শিশুর সংখ্যা ৪০ হাজার ছাড়িয়ে যেতে পারে | AmaderBrahmanbaria.Com – আমাদের ব্রাহ্মণবাড়িয়া

রবিবার, ১২ই নভেম্বর, ২০১৭ ইং ২৮শে কার্তিক, ১৪২৪ বঙ্গাব্দ

রোহিঙ্গা এতিম শিশুর সংখ্যা ৪০ হাজার ছাড়িয়ে যেতে পারে

AmaderBrahmanbaria.COM
নভেম্বর ১০, ২০১৭
news-image

---

মিয়ানমার থেকে নির্যাতনের মুখে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের ওপর জরিপ চালিয়ে এ পর্যন্ত ৩৬ হাজার ৩৭৩ জন এতিম শিশু শনাক্ত করা হয়েছে।

এরমধ্যে গত বুধ ও বৃহস্পতিবার দু’দিনেই শনাক্ত হয়েছে এক হাজার ৮১৫ জন। সমাজ কল্যাণ অধিদফতরের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা ধারণা করছেন এখনও যেভাবে এতিম শিশু শনাক্ত হচ্ছে, তাতে এ সংখ্যা কয়েকদিনের মধ্যে ৪০ হাজার ছাড়িয়ে যেতে পারে।

সমাজসেবা অধিদফতরের উদ্যোগে ‘মিয়ানমার ন্যাশনাল অরফান চাইল্ড’ কার্যক্রমের আওতায় এই প্রকল্প বাস্তবায়িত হচ্ছে। এদিকে এখনও মিয়ানমার থেকে রোহিঙ্গারা আসছে। গত ৮-১০ দিন যাবত প্রতিদিন গড়ে এক হাজার  রোহিঙ্গা বাংলাদেশে প্রবেশ করছে।

শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনের (আরআরআরসি) রিপোর্ট অনুযায়ী ২৫ আগস্টের পর থেকে এ পর্যন্ত বাংলাদেশে অনুপ্রবেশকারী রোহিঙ্গাদের সংখ্যা ৬ লাখ ২৬ হাজার।

সমাজসেবা অধিদফতরের অতিরিক্ত পরিচালক (কার্যক্রম) ও ‘মিয়ানমার ন্যাশনাল অরফান চাইল্ড’ প্রকল্পের সমন্বয়কারী সৈয়দা ফেরদৌস আখতার শুক্রবার (১০ নভেম্বর) বাসসকে বলেন, ‘আমরা ভাবছি এ মাসের মধ্যে এতিম রোহিঙ্গা শিশুদের শনাক্ত করার কাজ শেষ করতে পারবো।’

তবে রোহিঙ্গারা এখনও আসছে। এই স্রোত আরও বাড়লে প্রকল্পের কাজ কিছুটা দীর্ঘায়িত হতে পারে। এতিমদের সংখ্যাও ৪০ হাজার ছাড়িয়ে যেতে পারে বলে জানান ফেরদৌস আক্তার।

সমাজসেবা অধিদফতরের ৮০ জন কর্মী ক্যাম্পগুলোতে গিয়ে খুঁজে খুঁজে অনাথ শিশুদের শনাক্তের কাজ করছেন। তারা বিভিন্ন ক্যাম্পে গিয়ে শিশুর অভিভাবক ও মাঝিদের সহায়তায় সঠিক তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহের মাধ্যমে এতিম শিশুদের শনাক্ত করছেন।

যারা বাবা-মা দুজনকেই হারিয়েছে, যারা শুধু বাবা হারিয়েছে, যারা প্রতিবন্ধী, আর যারা মা-বাবার খোঁজ পাচ্ছে না- এমন চারটি শ্রেণিতে এদের ভাগ করা হচ্ছে। শিশু আইন অনুযায়ী ১৮ বছর পর্যন্ত বয়সীদের শিশু হিসেবে গণনা করে তালিকাভুক্ত করা হচ্ছে।

‘ইতোমধ্যে টেকনাফের পাঁচটি ক্যাম্পে শনাক্তকরণের কাজ শেষ হয়েছে। শনাক্ত হওয়া সব এতিম শিশুকে সমাজকল্যাণ অধিদফতরের পক্ষ থেকে স্মার্ট কার্ড দেওয়া হবে।’ জানালেন সমাজসেবা অধিদফতরের কক্সবাজার জেলা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক প্রীতম কুমার চৌধুরী।

তিনি বলেন, ‘এতিম রোহিঙ্গা শিশুদের শনাক্ত হওয়ার হার কিছুটা কমলেও এখনও প্রতিদিন ৮শ’ থেকে ৯শ’ এতিম শিশুর খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে। এ সংখ্যা ৪০ হাজার ছাড়িয়ে যেতে করতে পারে।’

এদিকে এতিম রোহিঙ্গা শিশুদের সুরক্ষার জন্য তাদের আবাসস্থল ‘শিশুপল্লি’ নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। প্রকল্প বাস্তবায়নে প্রাথমিকভাবে উখিয়ার নিবন্ধিত কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্পের মধুছড়া এলাকায় ২ শ’ একর জমিও নির্ধারণ করা হয়েছে। এতিম রোহিঙ্গা শিশুদের শনাক্ত করার কার্যক্রম শেষ হলে আগামী মাসে শিশুপল্লির কার্যক্রম শুরু করার পরিকল্পনা রয়েছে।

উল্লেখ্য, ২৫ আগস্ট থেকে মিয়ানমারের রাখাইনে সহিংসতায় খুন হয়েছে অসংখ্য রোহিঙ্গা দম্পতি। তাদের বেঁচে যাওয়া সন্তানরা আত্মীয়-স্বজন ও প্রতিবেশীদের সঙ্গে পালিয়ে আশ্রয় নেয় বাংলাদেশে। এসব পিতৃ-মাতৃহীন শিশুদের জন্য প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে একটি বিশেষ সুরক্ষা অঞ্চল করার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। ওই বিশেষ অঞ্চলে বিশেষ যত্নে দেখভাল করা হবে এসব শিশুদের।

সূত্র: বাসস

এ জাতীয় আরও খবর