বুধবার, ১২ই জুলাই, ২০১৭ ইং ২৮শে আষাঢ়, ১৪২৪ বঙ্গাব্দ

কক্ষপথে ন্যানো স্যাটেলাইট ‘ব্র্যাক অন্বেষা’

AmaderBrahmanbaria.COM
জুলাই ৮, ২০১৭
news-image

---

 

নিজস্ব প্রতিবেদক : বাংলাদেশের প্রথম ক্ষুদ্রাকৃতির কৃত্রিম উপগ্রহ বা ন্যানো স্যাটেলাইট ‘ব্র্যাক অন্বেষা’মহাকাশে পৃথিবী প্রদক্ষিণ শুরু করেছে। শুক্রবার বেলা ৩টা ১০ মিনিটে আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন (আইএসএস) থেকে বেরিয়ে আসে ছোট একটি স্যাটেলাইট। বার্তা ভেসে আসে ‘সাকসেস’।

এসময় হর্ষধ্বনি আর করতালিতে মুখরিত হয়ে ওঠে রাজধানীর মহাখালীর ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের মিলনায়তন।

খুদে স্যাটেলাইটের যাত্রা শুরুর মুহূর্তটি সরাসরি সম্প্রচার করা হয় আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন থেকে। জাপানের মহাকাশ সংস্থা ‘জাপান অ্যারোস্পেস এক্সপ্লোরেশন এজেন্সি’ থেকে এটি স্কাইপির মাধ্যমে সরাসরি দেখানো হয় ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের মিলনায়তনে। এ উপলক্ষে সেখানে একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল।

জাপানের কিউশু ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজির (কিউটেক) একটি প্রকল্পের আওতায় বাংলাদেশ ছাড়াও গতকাল ঘানা, মঙ্গোলিয়া, নাইজেরিয়া ও স্বাগতিক দেশ জাপানের ন্যানো স্যাটেলাইট পৃথিবী প্রদক্ষিণ শুরু করে।

এর আগে গত ৪ জুন যুক্তরাষ্ট্রের কেনেডি স্পেস সেন্টার থেকে বাংলাদেশ সময় রাত ৩টা ৭ মিনিটে স্যাটেলাইটটির সফল উৎক্ষেপণ করা হয়েছিল। এটি স্পেসএক্স ফ্যালকন-৯ রকেটে চড়ে আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে (আইএসএস) পৌঁছে।

ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয় জানায়, কৃষি, দুর্যোগ মোকাবিলাসহ মহাকাশ-সংক্রান্ত নানা বিষয়ে গবেষণার জন্য উচ্চমানের ছবি তুলে পাঠাবে স্যাটেলাইটটি। মহাকাশে বিশেষ বিশেষ দিনে দেশের জাতীয় সংগীতও বাজাবে। এটি পৃথিবী থেকে ৪০০ কিলোমিটার ওপরে অবস্থান করবে। পৃথিবীর চারপাশে প্রদক্ষিণ করে আসতে সময় লাগবে ৯০ মিনিটের মতো। এটি বাংলাদেশের ওপর দিয়ে দিনে চার থেকে ছয়বার উড়ে যাবে। স্যাটেলাইটটি দৈর্ঘ্য, প্রস্থ ও উচ্চতায় ১০ সেন্টিমিটার করে। ওজনে প্রায় এক কেজি। এই কৃত্রিম উপগ্রহের গ্রাউন্ড কন্ট্রোল স্টেশন বা ভূমি থেকে নিয়ন্ত্রণের স্থান ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ে।

বাংলাদেশি ন্যানো স্যাটেলাইটটির নকশা তৈরি, উপকরণ সংগ্রহ ও নির্মাণ করেছেন তিন তরুণ রায়হানা শামস্ ইসলাম, আবদুল্লা হিল কাফি ও মাইসুন ইবনে মনোয়ার। তাঁরা তিনজনই ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তড়িৎ ও ইলেকট্রনিকস প্রকৌশল বিষয়ে স্নাতক। এখন জাপানের কিউটেকে স্নাতকোত্তর করছেন। তাঁরা কিউটেকের একটি প্রকল্পের আওতায় স্বল্পোন্নত দেশের জন্য এই ন্যানো স্যাটেলাইট নির্মাণকাজে অংশ নেন।

এ উপলক্ষে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রী ইয়াফেস ওসমান বলেন, এই দিনটি শুধু ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয় নয়, বাংলাদেশের জন্য স্মরণীয় একটি দিন।

স্কাইপিতে যোগ দেন স্যাটেলাইটটির তিন নির্মাতা। তাঁরা তাঁদের অনুভূতির কথা জানান। তাঁরা পরে বাংলাদেশে বসে স্যাটেলাইট বানানোর পরিকল্পনার কথা বলেন।

ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সৈয়দ সাদ আন্দালিব বলেন, এটি শুধু ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয় নয়, বাংলাদেশের জন্য গর্বের দিন। এর মাধ্যমে এক নতুন দিগন্তের সূচনা হলো।

এ জাতীয় আরও খবর