৫ই নভেম্বর, ২০১৬ ইং, শনিবার ২১শে কার্তিক, ১৪২৩ বঙ্গাব্দ


শিশু সুবর্ণার সারা শরীরে নির্যাতনের দগদগে ক্ষত


Amaderbrahmanbaria.com : - ০৩.১১.২০১৬

মুন্সীগঞ্জ প্রতিনিধি : মুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলার রামপাল ইউনিয়নের বল্লাল বাড়িতে শিশু সুবর্ণাকে (৬) দিনের পর দিন নির্যাতন করা হয়েছে। এতে তার সারা শরীরে ক্ষতের সৃষ্টি হয়েছে। গতকাল স্থানীয় লোকজন শিশুটিকে উদ্ধার করে হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে মুন্সীগঞ্জ থানায় নিয়ে আসে। জানা যায়, মা ভারতী বেগম মারা যাওয়ার পর শিশুটিকে বল্লাল বাড়ি এলাকার সিরাজ মাদবরের স্ত্রী কল্পনা বেগম পালক হিসেবে নিজের বাড়ি নিয়ে যান। পরে তাকে গৃহপরিচারিকার কাজ দেওয়া হয়। পালকের কথা বলে এনে সারাদিন কাজ করার পর খাবার তেমন পেত না শিশুটি, শোয়ার জন্য ছিল খাটের নিচে স্থান। ছিল না মশারি, পরনে কখনো জোটেনি ভালো কাপড়, পেটে মেলেনি সময়মতো কোনো খাবার। মেয়েটিকে দিনের পর দিন নির্যাতন করা হয়েছে, তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে গুরুতর জখমের চিহ্ন আছে। মাথায় কোপের আঘাত, ঘাড়ে ছেঁকা, গলায় মারধরের কালো দাগ, বুকে পোড়া দাগ, চোখে কালো দাগসহ একাধিক চিহ্ন। পেটে গরম পানিতে ঝলসানো, ডান পায়ের রানে আগুনে পোড়ার চিহ্ন, বাম পায়ের অনেক অংশে আরও পোড়া চিহ্ন আছে। হাতেও ছিল না আঘাতের কোনো কমতি। প্রতিটি আঙ্গুল ফোলা আর একাধিক আঘাতের চিহ্ন। শিশুটিকে নির্যাতনের হাত থেকে রক্ষার জন্য শিশুটির খালা সমলা বেগম নিজের হেফাজতে নিতে চাইলে অভিযুক্ত কল্পনা তাকে অপমান করে তাড়িয়ে দেন। দীর্ঘ প্রায় ২ বছর পর স্থানীয়রা শিশুটিকে নির্যাতনের হাত থেকে রক্ষা করেন। তবে শিশুটির ভবিষ্যৎ নিয়ে শঙ্কিত স্থানীয়রা। শিশুটির বাবা শাহ আলম স্ত্রী মারা যাওয়ার পর অনত্র বিয়ে করে চলে গেছেন। পাশের ভাড়াটে রানা জানান, বাচ্চা মেয়েটা বাসায় কাজ করে আসছিল। শুনতাম তার নাকি মেয়ে। প্রতিদিন মারধর করা হতো শিশুটিকে। তখন ভাবলাম ঘটনাটি রহস্যজনক। কাল সকালে মেয়েটিকে যখন মারধর করছিল তখন ছুটে গেলাম জানতে পারলাম মেয়েটাকে কাজের লোক হিসেবে রাখা হয়েছে। পরে তাকে উদ্ধার করে চিকিৎসা করাতে নিয়ে আসি। চিকিৎসক শৈবাল বসাক জানান, শিশুটিকে দীর্ঘদিন শারীরিক নির্যাতন করা হয়েছিল এবং তার চোখে এখন ইনফেকশন আছে। নির্যাতিত সুবর্ণা জানায়, ‘আমার মা মারা যাওয়ার পর আমাকে এই মহিলা নিয়ে আসে। আমি তাকে মা বলতাম। ওই মহিলাকে আমি বলতাম, আপনি আমাকে আর মাইরেন না আমি মরে যাব। তবুও সে আমাকে মারধর করে, মাথায়, পেটে, গলায়, হাতে ও রানে অনেক আঘাত করেছে দিনের পর দিন। কাজ করা তো কিন্তু খাবার দিত না আমাকে। শুতে দিত খাটের নিচে। আমি এই নির্যাতনের বিচার চাই। আমাকে উনি দিনের পর দিন যেভাবে শারীরিক নির্যাতন করেছে ঠিক তেমনি তাকে নির্যাতন করা হোক সেটাই আমি দেখতে চাই।’ মারধরের কথা স্বীকার করে কল্পনা বেগম বলেন, ‘ও আমার মেয়ে। আমি মারব-কাটব সেটা আমার ব্যাপার।’ আপনার যদি মেয়ে হয়ে থাকে তাহলে তাকে দিয়ে বাসার কাজ করান কেন? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ঘরের মেয়ে ঘরের কাজ না করে কি অন্যের বাড়িতে কাজ করবে? মাইরের কাজ করেছে তাই মেরেছি। মুন্সীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ইউনুচ আলী বলেন, শিশুটিকে থানা হেফাজতে রাখা হয়েছে। শিশুটির প্রকৃত অভিভাবককে খুঁজে বের করার চেষ্টা চলছে। অভিভাবক পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।





Loading...


প্রকাশকঃ মোঃ আশ্রাফুর রহমান রাসেল
সম্পাদক : বিশ্বজিত পাল বাবু
চেয়ারম্যান : আলহাজ্ব নুরুজ্জামান
ঠিকানা : ৬০৩ ফুলবাড়িয়া, ব্রাহ্মণবাড়িয়া।
email : [email protected] (news)
Phone: +880851 62307
+8801963094563


close