৫ই নভেম্বর, ২০১৬ ইং, শনিবার ২১শে কার্তিক, ১৪২৩ বঙ্গাব্দ
  • প্রচ্ছদ » slider 2 » দেওয়ানবাগীর ‘বিতর্কিত’ বক্তব্য প্রতিরোধের উপায় খুঁজছে ইসলামিক ফাউন্ডেশন!


দেওয়ানবাগীর ‘বিতর্কিত’ বক্তব্য প্রতিরোধের উপায় খুঁজছে ইসলামিক ফাউন্ডেশন!


Amaderbrahmanbaria.com : - ০৩.১১.২০১৬

নিজস্ব প্রতিবেদক : রাজধানীর ফকিরাপুলস্থ বাবে রহমত দেওয়ানবাগ শরীফের পীর মাহবুব-এ খোদা’র ইসলাম ও শরিয়ত সম্পর্কিত ‘বিতর্কিত বক্তব্য’ প্রতিরোধের উপায় খুঁজছে ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ। গত শনিবার (২৯ অক্টোবর) সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত প্রতিষ্ঠানটির আগারগাঁওস্থ প্রধান কার্যালয়ে এ বিষয়ে আলেম ও প্রতিষ্ঠানের বিশেষজ্ঞদের নিয়ে একটি পর্যালোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। ওই সভায় সম্প্রতি প্রচারিত দেওয়ানবাগী পীরের বক্তব্যের ভিডিও দেখিয়ে আলেমদের অভিমত নেওয়া হয়েছে। বৈঠকে অংশ নেওয়া বিশিষ্ট কয়েকজন আলেমের সঙ্গে কথা বলে এ তথ্য জানা গেছে।

বৈঠকে অংশ নেওয়া চট্টগ্রামের জমিয়তুল ফালাহ জামে মসজিদের খতিব অধ্যক্ষ মাওলানা মুহম্মদ জালাল উদ্দিন আল-ক্বাদরী বলেন, ‘ইসলামিক ফাউন্ডেশনের ডিজি বৈঠক ডেকেছিলেন। দেওয়ানবাগ পীরের বক্তব্যের ভিডিওচিত্র দেখানো হয়েছে। এগুলো ইসলাম ও শরিয়তবিরুদ্ধ গর্হিত কাজ। আলেমরা তার বক্তব্য নিয়ে অভিমত ব্যক্ত করেছেন। তারা বলেছেন, শরিয়তের দৃষ্টিতে এসব অপরাধ এবং জঘন্যতম।’

এ ব্যাপারে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের পরিচালক খিজির হায়াত খান বলেন, ‘ইসলামিক ফাউন্ডেশন সব সময় ইসলাম নিয়ে কাজ করে। আপনারা সবাই জানেন, ওভার অল, ইসলামি শরিয়া পরিপন্থী কোনও কাজ হলে সেগুলো পর্যালোচনা করে। এটা অনেক আগে থেকেই হয়ে আসছে যে, সমসাময়িক বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা হয়। সেই ধারাবাহিকতায় দেওয়ানবাগীর পীর নিয়ে আলোচনা হয়েছে। ওইদিন আমাদের নিয়মিত মসজিদভিত্তিক শিক্ষা কার্যক্রম নতুন দিকগুলো নিয়ে আলোচনা ছিল। একটি সিডি দেখানো হয়েছে। আমি মনে করি, ভিডিওতে যা আছে, তা সর্বোচ্চ প্রশ্নবিদ্ধ, আপত্তিকর। একজন মুসলমান হিসেবে আমার তাই মনে হয়েছে। তিনি আরও বলেন, এ নিয়ে এখনই ডিসিশনের কিছু নেই। আমার মনে হয়, আরও কিছুদিন অপেক্ষা করা উচিত।

জানতে চাইলে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক সামীম মোহাম্মদ আফজাল মঙ্গলবার দুপুরে বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে অফিসিয়ালি নোটিশ করিনি। এটা সেনসেটিভ বিষয়।’

জানা গেছে, দেওয়ানবাগী পীর বিগত কয়েক বছরে তার নিজের মতাদর্শ অনুযায়ী বক্তব্য রেখে এসেছেন। তার ভক্ত, আশেকানদের সামনে তিনি নসিহত করেন। এসব বক্তব্য তার আত্মার বাণী, সাপ্তাহিক দেওয়ানবাগসহ নানা জায়গায় প্রকাশিত হচ্ছে। সম্প্রতি তার কিছু বক্তব্য ইউটিউবসহ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও ছড়িয়ে পড়েছে।

ইফাবাসূত্র জানায়, দেওয়ানবাগী পীরের বক্তব্য স্বাভাবিক ধর্মীয় জ্ঞাতবিষয়ের বাইরে উদ্ভূত মনে হওয়ায় বিগত কয়েক মাস ধরেই আলেমদের মধ্যে আলোচনা চলছিল। কোনও একটি সূত্রে বিষয়টি ইসলামিক ফাউন্ডেশনকেও জানানো হয়। এরপরই প্রতিষ্ঠানটির মহাপরিচালক বিষয়টি সিরিয়াসলি নেন।

ইফাবাসূত্র জানায়, শনিবার প্রতিষ্ঠানের হলরুমে সারাদেশের প্রায় শতাধিক আলেম ও ধর্মীয় বিশিষ্টজনদের নিয়ে পর্যালোচনা করেন সামীম মোহাম্মদ আফজাল। ওই সভায় আলেমরা নিজেদের অভিমত ব্যক্ত করেন। প্রত্যেকের দেওয়ানবাগী পীরের বক্তব্যের সমালোচনা করে এর প্রতিকার দাবি করেন।

ওই সভায় আওয়ামী লীগের ধর্মবিষয়ক সম্পাদক শেখ আবদুল্লাহ, মুফতি মিজানুর রহমান, মুফতি এনামুল হক, মুফতি ওয়াহিদুজ্জামানসহ প্রতিষ্ঠানের মুফতি, মুহাদ্দিস ও মুফাসসিররা উপস্থিত ছিলেন।

ইসলামিক ফাউন্ডেশনের উদ্যোগ নিয়ে জানতে চেয়ে যোগাযোগ করা হয় দেওয়ানবাগী পীরের বাবে রহমত দরবারে। বুধবার সকালে রাজধানীর ফকিরাপুলে প্রতিবেদক গেলে তল্লাশি করেও ভেতরে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি। পরে ফখরুল নামে একজন নিজেকে খাদেম পরিচয় দিয়ে পরে যোগাযোগ করা হবে বলে বিদায় দেন। যদিও বিকালে কয়েক দফা ফোন করলেও মোবাইল রিসিভ করেননি ফখরুল।

ইফাবাসূত্র জানায়, ১৯৯১ সালের ৫ সেপ্টেম্বর দেওয়ানবাগী পীর নিয়ে একটি ফতোয়া জারি হয়েছিল। তিনটি ফতোয়ার একটি ছিল, গ. আর তার অপপ্রচার প্রতিহত করা প্রত্যেক মুসলমানের কর্তব্য। (১৭৬৭ ইসঃফাঃ সং ও দাওয়াহ/৩/৮৭/৫১২২ তাং ৫/৯/৯১ ইং।)

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে কাদেরিয়া তরিকার পীর, সোলাকিয়া ঈদগাহের খতিব মাওলানা ফরিদ উদ্দিন মাসঊদ বলেন, ‘আমি যতদূর শুনেছি দেওয়ানবাগী পীরের অনেক বক্তব্যই ইসলামসম্মত নয়। আর যা শুনেছি, তাতে তার ঈমান আছে কিনা, আদৌ তিনি ইসলামের ওপর আছেন কিনা, এটা নিয়ে সন্দেহ আছে। তবে আলেমরা এটা নিয়ে কথা বললে সবাইকে এগিয়ে আসা উচিত।’

মাইজভান্ডারী তরিকার অনুসারী, তরিকতপন্থী দল তরিকত ফেডারেশনের মহাসচিব এম এ আউয়াল মনে করেন, ‘দেওয়ানবাগের পীর যদি আধ্যাত্মিক কোনও কিছু অর্জন করেও থাকেন, সেটি বলে বেড়ানোর কিছু নয়। এ কারণে তিনি প্রকাশ্যে যা বলছেন, তা বলা ঠিক নয়।’

জমিয়তুল ফালাহ জামে মসজিদের খতিব অধ্যক্ষ মাওলানা মুহম্মদ জালাল উদ্দিন আল-ক্বাদরী বলেন, ‘যা চিত্র দেখেছি, তাতে জঘন্য মনে হয়েছে। এর সমাধান হচ্ছে তাকে সারেন্ডার করতে হবে। মুসলমানদের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করতে হবে। তওবা করতে হবে, এটাই আমি ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সভায় বলেছি।’





Loading...


প্রকাশকঃ মোঃ আশ্রাফুর রহমান রাসেল
সম্পাদক : বিশ্বজিত পাল বাবু
চেয়ারম্যান : আলহাজ্ব নুরুজ্জামান
ঠিকানা : ৬০৩ ফুলবাড়িয়া, ব্রাহ্মণবাড়িয়া।
email : [email protected] (news)
Phone: +880851 62307
+8801963094563


close