নিজস্ব প্রতিবেদক : ২২ দিন বন্ধ থাকার পর ইলিশ ধরার ওপর নিষেধাজ্ঞা উঠে যাচ্ছে। বৃহস্পতিবার থেকে ইলিশ ধরতে জেলেদের আর কোনো বাধা থাকবে না। এবার ইলিশ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৫ লাখ মে.টন। আগের বছর এ লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৩ লাখ ৮৭ হাজার মে.টন।নিষেধাজ্ঞার সময় সারা দেশে মৎস্য অধিদফতর, নৌবাহিনী, বিমানবাহিনী, কোস্টগার্ড, পুলিশ, নৌপুলিশ, র্যা ব, বিজিবিসহ সংশিষ্ট জেলা-উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে অভিযান চালানো হয়। এ সময়ে দেশের বিভিন্ন এলাকায় ইলিশ ধরার অপরাধে অনেক জেলেকে জরিমানা ও কারাদণ্ড দেয়া হয়।
ইলিশ ধরা ও বেচাকেনায় নিষেধাজ্ঞা উঠে যাচ্ছে এ আনন্দে নতুন উদ্যামে জেগে উঠেছে জেলে ও বিক্রেতারা। বিশেষ করে দেশের ইলিশ প্রধান অঞ্চলে জেলেদের মধ্যে এখন রীতিমতো উৎসবের আমেজ।
দেশের বিশিষ্ট মৎস্যবিজ্ঞানী ও ইলিশ গবেষক ড. আনিসুর রহমান জানান, ‘অন্য বছর ইলিশ নিষেধাজ্ঞা ১৫ দিন নির্ধারণ করা হলেও এ বছর থেকে তা বাড়িয়ে ২২ দিন করা হয়েছে’। এতে ডিমওয়ালা মা ইলিশ রক্ষা অনেকটা সফল হয়েছে।
দিনভর চাঁদপুরের পুরানবাজারের হরিসভা, রণাগোয়াল, বহরিয়া, হরিণাঘাট, আখনেরহাট ও কাটাখালী এলাকার নদীর পাড় ঘুরে দেখা গেছে, জেলেরা নদীতে ইলিশ ধরার জন্য সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়েছে। মাছ ধরার নৌকা, জাল নিয়ে তারা অপেক্ষা করছে। কেউ বা জাল বুনে সময় পার করছে।
হরিসভা এলাকার জেলে ইমাম হোসেন বলেন, ‘মা ইলিশ না ধরায় আমাদেরই উপকার হলো।’ আখনেরহাটের আব্দুর রহমান নামের আরেক জেলে বলেন, ‘আগে আমরা না বুঝে ডিমওয়ালা ইলিশ শিকার করেছি। এখন বুঝলাম, কতটা নিজের ক্ষতি করেছি।’ কাটাখালীর জেলে ইব্রাহিম খলিল বলেন, ‘মা ইলিশ রক্ষায় শুধু জেলেদের উপকারই নয়, আর্থিকভাবে দেশেরও উপকার হয়েছে।’
চাঁদপুর জেলা মৎস্য কর্মকর্তা সফিকুর রহমান জানান, আগের বছর এমন সময় যে পরিমাণ মা ইলিশ নিধন করা হয়েছে, এবার তা শূণ্যের কোঠায় নেমে এসেছে।
চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক আব্দুস সবুর মণ্ডল জানান, প্রশাসন আগাম প্রস্তুতি নিয়ে জেলেদের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টি করতে সক্ষম হয়েছে। তাই তারা সরকারি নিষেধাজ্ঞা মানতে বাধ্য হয়েছে।
উল্লেখ্য, ১২ অক্টোবর থেকে ২ নভেম্বর রাত ১২টা পর্যন্ত দেশে ইলিশ আহরণ, বিপণন, ক্রয়-বিক্রয়, পরিবহন, মজুদ বন্ধে সরকারি নিষেধাজ্ঞা ছিল।