নিজস্ব প্রতিবেদক : দেশবিরোধী চক্রান্ত নস্যাৎ করতে সকলকে এগিয়ে আসার আহবান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, গণতন্ত্র ও স্বাধীনতাবিরোধী অপশক্তি হাত-পা গুটিয়ে বসে নেই। তারা দেশের গণতান্ত্রিক ও স্বাধীনতার পক্ষের শক্তিকে নিশ্চিহ্ন করে দিতে বারবার হামলা চালায়।
৩ নভেম্বর জেল হত্যা দিবস উপলক্ষে বুধবার দেয়া এক বাণীতে এ আহবান জানান প্রধানমন্ত্রী। বাণীতে তিনি জাতীয় চার নেতার স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন এবং তাদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন।
তিনি বলেন, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বাধাগ্রস্ত ও উন্নয়ন বিঘ্নিত করতে প্রতিক্রিয়াশীল চক্র সন্ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করার গভীর ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে।
বাংলাদেশের ইতিহাসে ৩ নভেম্বর একটি কলঙ্কিত দিন উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিশ্ব মানবতা ও গণতন্ত্রের ইতিহাসেও এমন কলঙ্কের অধ্যায় আর নেই। সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অবর্তমানে তার ঘনিষ্ঠ সহচর বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্বদানকারী জাতীয় চার নেতা সৈয়দ নজরুল ইসলাম, তাজউদ্দিন আহমেদ, ক্যাপ্টেন এম মনসুর আলী এবং এ এইচ এম কামারুজ্জামানকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়।
তিনি বলেন, পৃথিবীর ইতিহাসে কারাগারের অভ্যন্তরে এ ধরনের বর্বর হত্যাকাণ্ড নজিরবিহীন। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির পিতাকে সপরিবারে হত্যা করা হয়।
এরই ধারাবাহিকতায় ষড়যন্ত্রকারীরা ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট আওয়ামী লীগের সমাবেশে গ্রেনেড হামলা চালায় উল্লেখ করে তিনি বলেন, তারা আমাকে হত্যা করতে চেয়েছিল। আওয়ামী লীগ নেত্রী আইভি রহমানসহ ২৪ জন নেতাকর্মীকে সেদিন তারা হত্যা করে। বাংলার মাটি থেকে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নাম চিরতরে মুছে ফেলে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধ্বংস এবং বাঙালি জাতিকে নেতৃত্বশূন্য করার অপচেষ্টা চালায় তারা।
শেখ হাসিনা বলেন, ২১ বছর সেই ষড়যন্ত্রকারী ও হত্যাকারীদের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ মদদদাতারা দেশের ক্ষমতা কুক্ষিগত করে রাখে। শাসকগোষ্ঠী কখনও সামরিক লেবাসে, কখনও গণতন্ত্রের মুখোশ পরে, অবৈধ ও অসাংবিধানিকভাবে ক্ষমতা ধরে রাখে। আত্মস্বীকৃত খুনিদের রক্ষা করতে ইনডেমনিটি অর্ডিন্যান্স জারি করে। হত্যাকারীদের বিচারের মুখোমুখি করার বদলে পুরস্কৃত করে। খুনিদের রাজনীতিতে পুনর্বাসনের অপচেষ্টা করে।
জেলহত্যা মামলার বিচার সম্পন্ন হয়েছে। যুদ্ধাপরাধীদের বিচারকাজ শুরু হয়েছে। বেশ কয়েকটি মামলার রায় বাস্তবায়ন করা হয়েছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
২০২১ সালের আগেই বাংলাদেশকে মধ্যম আয়ের এবং ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত দেশে পরিণত করে জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ে তোলা হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।