নিজস্ব প্রতিবেদক : বাংলাদেশি ২৮ হাজির হদিস পাচ্ছে না বাংলাদেশ কিংবা সৌদি আরব কর্তৃপক্ষ। এ বিষয়ে কয়েকদিনের মধ্যেই দুই দেশের ইমিগ্রেশন প্রতিবেদন দেবে। এরপরই জানা যাবে এ ২৮ হাজির প্রকৃত অবস্থা। অন্যদিকে ২০১৭ সালে হজে গমনেচ্ছুদের প্রাক-নিবন্ধন কার্যক্রম এ মাসের মধ্যেই শুরু হচ্ছে। ধর্ম মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আব্দুল জলিল বাংলা ট্রিবিউনকে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, এ বছর সৌদি আরবের অভ্যন্তরীণ হাজির সংখ্যা ছিল পাঁচ লাখ ৩৭ হাজার ৫৩৭ জন। অন্যদিকে বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে আরও ১৩ লাখ ২৫ হাজার ৩৭২ জন সৌদি আরবে হজ করতে যান। এরমধ্যে বাংলাদেশ থেকে হজে যান এক লাখ এক হাজার ৩৬৩ জন। সৌদি এয়ারলাইন্স ও বাংলাদেশ বিমানের হিসাব অনুযায়ী এ পর্যন্ত বাংলাদেশি হাজিদের মধ্যে দেশে ফিরেছেন ৯৮ হাজার ৫০০ জন। অনেক হাজি জরুরি প্রয়োজনে অন্য এয়ারলাইন্সেও দেশে ফিরেছেন। অনেক হাজি অসুস্থ থাকায় সৌদি আরবের বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। সৌদি আরবের হজ এজেন্সি মালিকদের সংগঠন ‘মুয়াসসাসা’ বাংলাদেশি ২৮ জন হাজির নাম ও পাসপোর্ট নম্বর দিয়ে দুই দেশের কর্তৃপক্ষকে নিখোঁজ থাকার বিষয়টি জানিয়েছে।
মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বশীল একটি সূত্র জানায়, এবার বাংলাদেশ থেকে হজে যাওয়া ৭৫১ জন হাজি পাসপোর্টে সঠিক তথ্য না দিয়ে হজে গেছেন বলে তাদের নজরে এসেছে। এ বিষয়েও তদন্ত চলছে। কয়েক দিনের মধ্যেই তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন দেওয়ার কথা রয়েছে।
২৮ হাজির হদিস না পাওয়া প্রসঙ্গে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আব্দুল জলিল বিষয়টির সত্যতা স্বীকার করে জানান, ‘আগামী কয়েকদিনের মধ্যেই বাংলাদেশ ও সৌদি আরব ইমিগ্রেশন প্রতিবেদন দিয়ে জানাবে—কোনও হাজি নিখোঁজ আছে কিনা। এছাড়া সৌদিতে কিছু হাজি অসুস্থ হয়ে চিকিৎসাধীন আছেন।’ তিনি বলেন, ‘সাধারণত শতকরা এক ভাগ হাজি নিখোঁজ হলে সৌদি কর্তৃপক্ষ কোনও অভিযোগ দেয় না। এর বেশি হলে তারা লিখিতভাবে জানায়।’
৭৫১ জন হাজির সঠিক তথ্য না দেওয়া প্রসঙ্গে সচিব আব্দুল জলিল বলেন, ‘কী কারণে এমনটি হয়েছে, সেটাও তদন্ত করছে তারা। তদন্ত কমিটিকে ১০ কার্যদিবস সময় দেওয়া হয়েছে। আগামী পাঁচ থেকে ছয় কার্যদিবসের মধ্যেই তারা এর সঠিক কারণ ব্যাখ্যা করে মন্ত্রণালয়ে প্রতিবেদন দেবে। এ জন্য যে বা যারাই দায়ী হবে, তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
সচিব আরও বলেন, ‘২০১৭ সালে যারা হজে যাবেন, তাদের প্রাক-নিবন্ধন এ মাসের মধ্যেই শুরু করা হবে। তবে হজ এজেন্সিসহ সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের সঙ্গে অভিমত নিয়েই করা হবে।’ তিনি বলেন, ‘নানা অনিয়মের কারণে গেলো বছর ১০৩টি এজেন্সির কাছ থেকে দুই কোটি ৯৪ লাখ টাকা জরিমানা আদায় করা হয়েছে। তবে দুই-একটি এজেন্সি জরিমানা আদায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে গিয়েছে। সেক্ষেত্রে আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।