শুক্রবার, ৫ই অক্টোবর, ২০১৮ ইং ২০শে আশ্বিন, ১৪২৫ বঙ্গাব্দ

মাদক গ্রহণ নিয়ে যা বললেন বিমানবালা মাসুমা মুফতি

নিউজ ডেস্ক।। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বহনকারী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের কেবিন ক্রু সৈয়দা মাসুমা মুফতিকে মাদক গ্রহণের অভিযোগে বরখাস্ত করা হয়েছে। আর সেই তথ্য গোপন করায় দায়িত্ব থেকে প্রত্যাহার করা হয়েছে ফ্লাইট অপারেশন পরিচালক ও পাইলট ফারাহাত জামিলকে। কর্তব্য থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে ফ্লাইট সার্ভিস শাখার ডিজিএম নুরুজ্জামান রঞ্জুকেও। তবে যাকে নিয়ে এত আলোচনা-সমালোচনা সেই বিমানবালা দাবি করেছেন, তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ সত্য নয়।

সৈয়দা মাসুমা মুফতি গতকাল আমাদের সময়কে বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর ওই ফ্লাইটে আমি কোনো মাদক গ্রহণ করিনি।’ এর আগের দিন অর্থাৎ রবিবার চাঞ্চল্যকর এ ঘটনায় বিমানের পক্ষ থেকে গঠিত বিভাগীয় তদন্ত কমিটির কাছেও তিনি মৌখিকভাবে একই কথা বলেছেন।

নির্ভরযোগ্য একটি সূত্র জানিয়েছে, ভিভিআইপি ফ্লাইটে এ কেবিন ক্রুকে মাদকাসক্ত অবস্থায় পাওয়া, তথ্য গোপন এবং দায়িত্ব অবহেলার অভিযোগে বিমানের (ফ্লাইট সার্ভিস শাখা) আরও পাঁচ কর্মকর্তা ফেঁসে যেতে পারেন। ওই পাঁচজনকে চলতি সপ্তাহে তদন্ত কমিটি ডেকে পাঠাবে বলেও জানা গেছে। তবে কর্মকর্তাদের নাম জানায়নি সূত্র।

এদিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বহনকারী উড়োজাহাজে ‘মাদক সেবনের’ ঘটনার অনুসন্ধানে নেমে অভিযুক্ত সেই বিমানবালার বেপরোয়া জীবন-যাপনের তথ্য মিলেছে।
জানা গেছে, কেবিন ক্রু মাসুমা মুফতি দীর্ঘদিন ধরেই বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসে ফ্লাইট স্টুয়ার্ড হিসেবে কর্মরত। চট্টগ্রামের আগ্রাবাদ মহিলা কলেজ থেকে গ্রাজুয়েশন শেষ করার পর ২০০১ সালের মে মাসে বিমানে যোগ দেন তিনি। চট্টগ্রামের মেয়ে মাসুমা মুফতিকে দিয়ে সব সময় বিজনেস ক্লাসে ডিউটি করানো হতো। ব্যক্তিজীবনে বিবাহিত মাসুমা এক কন্যাসন্তানের জননী। মেয়েকে নিয়ে বর্তমানে তিনি বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় আলাদাভাবে থাকছেন।
আরও জানা গেছে, মাসুমা মুফতির মাদক গ্রহণের বিষয়টি ঊর্ধ্বতনদের না জানিয়ে এতদিন চেপে রেখেছিলেন বিমানের কাস্টমার সার্ভিসের কর্মকর্তা নুরুজ্জামান রঞ্জু। তা ছাড়া তিনি প্রভাবশালী হওয়ায় এ বিষয়ে কেউ এতদিন মুখ খুলতেও সাহস পায়নি। যৌন কেলেঙ্কারির অভিযোগে ২০১৪ সালে রঞ্জুকে একবার চিফ পার্সার থেকে অবনমন করে ফ্লাইট পার্সারও করা হয়েছিল।

বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটনমন্ত্রী একেএম শাহজাহান কামাল সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, এ ঘটনায় বিভাগীয় তদন্ত চলছে। কমিটির তদন্ত রিপোর্টের ওপর ভিত্তি করে প্রধানমন্ত্রীর লন্ডন যাওয়ার ফ্লাইটের আগে মাদক গ্রহণ এবং তথ্য গোপনকারী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের যারাই জড়িত থাকুক, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
গত ২১ সেপ্টেম্বর সকাল ১০টার দিকে প্রধানমন্ত্রীর ফ্লাইট টেকঅফের তিন ঘণ্টা আগে কেবিন ক্রুদের ডেকে নিয়ে হঠাৎ ডোপ টেস্ট করা হয়। ১৮ কেবিন ক্রুর মধ্যে একমাত্র মাসুমা মুফতির শরীরেই মাদকের অস্তিত্ব পান চিকিৎসক। বিমানের নিয়মানুযায়ী ডোপ টেস্টের প্রমাণ মিললে শাস্তিস্বরূপ কোনো ব্যক্তিকে পরবর্তী ৯০ দিন কোনো ডিউটি না দেওয়ার বিধান রয়েছে। উৎস: দৈনিক আমাদের সময়।