ডাক্তারের ভুলে জীবিত তরুণ হিমঘরে, অতঃপর করুণ পরিণতি
প্রথমে চিকিৎসকরা জানান, ছেলের মৃত্যু হয়েছে। তবে কিছুক্ষণ পরই পরিবারকে জানানো হয়, তাদের ছেলে বেঁচে আছে। দেখা করা যাবে পরদিন সকালে।
কিন্তু চিকিৎসকদের নতুন নির্দেশনার অভাবে সেই তরুণকে রাখা হয় মর্গের ফ্রিজে। ভোরবেলা ওই তরুণের পরিবার হাসপাতালে গিয়ে ছেলেকে খুঁজে না পেয়ে চিকিৎসকদের কাছে ছুটে যায়।
পরে জানা যায়, ওই তরুণকে রাখা হয়েছে মর্গে। সেখানে গিয়ে ছেলের খোঁজ পায় পরিবার। তখনো নাকি ওই তরুণের শরীরে ক্ষীণ শ্বাস-প্রশ্বাস চলছিল। তবে শেষ রক্ষা অবশ্য হয়নি। পরে চিকিৎসকরা তাকে মৃত বলেই ঘোষণা করেন।
চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে ভারতের মধ্যপ্রদেশের ইনদৌরে। মৃত ওই তরুণের নাম কৈলাস চহ্বাণ।
জানা গেছে, বৃহস্পতিবার রাতে সড়ক দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত হন কৈলাস। তাকে উদ্ধার করে স্থানীয় এমওয়াই হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কৈলাসের পরিবারের অভিযোগ, প্রথমে অন্য রোগীদের নিয়ে ব্যস্ত থাকায় কৈলাসের চিকিৎসা শুরু করেননি চিকিৎসকরা। কিছুক্ষণ পরেই কৈলাসকে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়।
কৈলাসের পরিবারের দাবি, এর পরই তারা লক্ষ্য করেন ওই তরুণ সামান্য নড়াচড়া করছেন। সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসকদের বিষয়টি জানানো হয়। তখন হাসপাতাল থেকে জানানো হয়, কৈলাসকে ভেন্টিলেশনে রাখার জন্য নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। যদিও তার বাঁচার সম্ভাবনা খুবই ক্ষীণ বলে জানানো হয়।
অথচ পরদিন ওই পরিবার দেখে, যে ছেলেকে ভেন্টিলেশনে রাখার জন্য আগের দিন রাতে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল, তাকে মর্গের ফ্রিজে দেখে শিউরে ওঠে কৈলাসের পরিবার। কৈলাসের শোকস্তব্ধ বাবার কথায়, তখনই আমরা বুঝতে পারি যে, সারারাত আমার ছেলেকে মর্গেই রাখা হয়েছিল।
এখানেই হয়রানির শেষ নয়। ওই পরিবারে সঙ্গে এক আত্মীয় ছিলেন, যিনি পেশায় নার্স। মর্গে গিয়ে তিনি কৈলাসকে পরীক্ষা করে দাবি করেন, তখনো ক্ষীণ শ্বাস-প্রশ্বাস চলছে। অবিশ্বাস্য কিছু ঘটার আশায় ফের কৈলাসকে নিয়ে একটি বেসরকারি হাসপাতালে ছোটেন তার পরিবারের লোকজন। সেখানে অবশ্য কৈলাসকে মৃত বলেই ঘোষণা করা হয়।
মর্গ থেকে কৈলাসকে যে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়, সেখানকার এক চিকিৎসক দাবি করেছেন, সম্ভবত হাসপাতালে নিয়ে আসার এক থেকে দেড় ঘণ্টা আগে মৃত্যু হয়েছে কৈলাসের। ময়নাতদন্ত করলেই অবশ্য মৃত্যুর সঠিক সময় বোঝা যাবে।
আহত অবস্থায় প্রথমে ওই তরুণকে যে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল, সেখানকার এক চিকিৎসক অবশ্য দাবি করেছেন, অ্যাম্বুল্যান্সের টেকনিশিয়ান তাদের জানান যে পথেই ওই তরুণের মৃত্যু হয়েছে। গোটা ঘটনায় হাসপাতালের গাফিলতি রয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।