শরিকদের জন্য বরাদ্দ ৭০ আসন : কাদের
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মহাজোটের অন্য শরিকদের জন্য ৬৫ থেকে ৭০টি আসন ছেড়ে দেবে আওয়ামী লীগ। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দলটির সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
তিনি বলেন, জোটে আলাপ-আলোচনা চলছে। এ মাসের শেষ দিকে চূড়ান্ত আকার নেবে। বেশি দূর গেলে অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত যেতে পারে।
কাদের বলেন, ‘আমাদের জোটের জন্য ৬৫ থেকে ৭০টি আসন ছেড়ে দেওয়ার চিন্তাভাবনা আছে। তবে এখানেও কথা আছে, এটা কোনো ধরাবাঁধা বিষয় না। উইনেবল প্রার্থীকে আমরা মনোনয়ন দেব।’
শনিবার দলীয় সভানেত্রীর ধানমন্ডির কার্যালয়ে সম্পাদকমণ্ডলীর সভা শেষে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি এ মন্তব্য করেন।
আওয়ামী লীগ জাতীয় নির্বাচনের প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে জানিয়ে সেতুমন্ত্রী বলেন, এ মাসেই কার্যক্রম পুরোপুরি শুরু হবে। জোট নিয়েও পরোক্ষভাবে আলাপ-আলোচনা চলছে। যারা দলের এত দিনের শরিক, তাদের বিষয় নিয়ে কথা হয়েছে। অনেকে আসতে চাচ্ছে, তাদের সঙ্গেও কথাবার্তা শুরু হয়েছে।
প্রেস ব্রিফিংয়ে বিএনপির সমালোচনা করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ইতিহাসের নজিরবিহীন ব্যর্থ বিরোধী দল বিএনপি। সরকারকে চাপে রাখার মতো তারা কোনো আন্দোলন করতে পারেনি। এই ব্যর্থতার জন্য বিএনপির টপ টু বটম সব নেতার পদত্যাগ করা উচিত।
বর্তমান সরকারের জনভিত্তি অনেক শক্তিশালী বলে মন্তব্য করে কাদের বলেন, সরকারের হাতে খালেদা জিয়াকে মুক্ত করার এখতিয়ার নেই। আইন অনুযায়ী বিএনপি যদি বেগম জিয়াকে মুক্ত করে আনতে পারে তাতেও সরকারের কোনো বাধা নেই।
তিনি বলেন, খালেদা জিয়ার মামলার রায়ের আগে দলীয় গঠনতন্ত্র পরিবর্তনের ব্যাখ্যা দিতে হবে বিএনপিকে। জনগণের কাছে ভোট চাইতে হলে এর ব্যাখ্যা দিতেই হবে।
বর্তমান সরকারের গণভিত্তি খুবই শক্তিশালী এবং শেকড় অনেক গভীরে উল্লেখ করে কাদের বলেন, ‘ফখরুল-মওদুদ আহমদরা রাস্তায় দাঁড়িয়ে মাইক দিয়ে কয়েকজনকে নিয়ে আওয়াজ দিলেই কি সরকার হটে যাবে? আমরা হঠাৎ জনসমর্থহীনভাবে সরকারে আসিনি।
আইনি প্রক্রিয়ায় খালেদা জিয়ার মুক্তি সম্ভব নয়— ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদের এমন বক্তব্যের বিষয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘মওদুদ আহমেদের কাছ থেকে আইনি প্রক্রিয়া শিখতে হবে? যারা সংবিধান লঙ্ঘন করে, আইন লঙ্ঘন করে ক্ষমতায় আসে, এটা তাদের পক্ষে বলা সম্ভব। মওদুদ নিজেই আইন লঙ্ঘন করেন, তিনি মৃত ব্যক্তির নামে ভুয়া সার্টিফিকেট আদালতে জমা দিয়ে ৪০ বছরের দখল করা বাড়ি রক্ষা করতে পারেননি।
তিনি বলেন, ইভিএমে ভোট হলে বিএনপি আর কেন্দ্র দখলের পুরনো অভিযোগ আনতে পারবে না এবং ভোট জালিয়াতির কথা বলতে পারবে না। এ কারণেই বিএনপি ইভিএম চায় না। বিএনপির ভয় এখানেই। সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির কাছে তিনটি প্রশ্নের জবাব চান সেতুমন্ত্রী।
তিনি বলেন, ‘আমার প্রথম প্রশ্নটি হচ্ছে— ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর হত্যাকারীদের বিচারের পথ রুদ্ধ করতে ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ জারি এবং এরপর এই অধ্যাদেশকে পঞ্চম সংশোধনীতে অন্তর্ভুক্ত করার ব্যাখ্যা কী? দুই. বিনা পয়সায় সাবমেরিন কেবল প্রত্যাখ্যান করার মাধ্যমে দেশকে পিছিয়ে দেওয়ার যে কাজটি বিএনপি করেছে, এর ব্যাখ্যা কী? তিন. খালেদা জিয়ার রায়ের আট দিন আগে বিএনপির গঠনতন্ত্র থেকে কেন সাত ধারা বাতিল করে দেওয়া হলো?’
এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন— আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ, ডা. দীপু মণি, জাহাঙ্গীর কবির নানক, আবদুর রহমান, প্রচার সম্পাদক হাছান মাহমুদ, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, এনামুল হক শামীম, খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, কৃষি বিষয়ক সম্পাদক ফরিদুন্নাহার লাইলী, আন্তর্জাতিক সম্পাদক শাম্মী আহমেদ, ত্রাণ সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী প্রমুখ।