রংপুরে দুই বাসের সংঘর্ষে নিহত ৭
রংপুর শহরে দুটি বাসের সংঘর্ষে সাতজন নিহত হয়েছেন; এ দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও অন্তত ১৮ জন।
রংপুর সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সাইফুর রহমান সাইফ জানান, শহরের সিও বাজার এলাকার রংপুর-দিনাজপুর মহাসড়কে রোববার বেলা ১২টার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলার মৃত শহিদুল ইসলামের স্ত্রী নুর বানু (৪৪), একই উপজেলার ফুলকি বেগম(৫৫), সৈয়দপুর উপজেলার বোতলাগাড়ী গ্রামের আনোয়ার হোসেনের স্ত্রী অমিজন নেছা (৪৬), গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জের তালুকবর্মণ এলাকার রুবেল মিয়ার স্ত্রী রোখসানা বেগম (২৪), পঞ্চগড়ের শাহিন মিয়া (১২), পঞ্চড়ের তেঁতুলিয়া থানার কনস্টেবল মামুনের স্ত্রী সুমি আখতার (২৪) এবং ঠাকুরগাঁওয়ের ধবলি এলাকার বাসিন্দা আব্দুর রহমান (৭০।
আহতদের রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে বলে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জানান।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সাইফুর বলেন, বগুড়া থেকে পঞ্চগড়ের বাংলাবান্ধাগামী বিআরটিসি একটি বাসের সঙ্গে ঠাকুরগাঁও থেকে রংপুরগামী একটি মিনি বাসের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়।
“এ সময় বাস দুটি রাস্তার পাশে ছিটকে পড়ে এবং বিআরটিসি বাসটি দুমড়েমুচড়ে যায়। এতে ঘটনাস্থলেই চারজনের মৃত্যু হয়।”
আহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়ার পর অজ্ঞাত পরিচয় এক পুরুষ, তেঁতুলিয়া থানার কনস্টেবল মামুনের স্ত্রী সুমি আখতার এবং নীলফামারীর কিশোরগঞ্জের ফুলকি বেগমের মৃত্যু হয়।
তিনি বলেন, দুটি বাসের চালক ও সহকারীরা পলাতক নাকি তারা আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন তা এখনও জানা যায়নি। তাদের সন্ধান করা হচ্ছে। দুর্ঘটনা কবলিত বাস দুটি পুলিশ হেফাজতে রয়েছে।
রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক অজয় কুমার রায় বলেন, রোববার সন্ধ্যা ৭টায় হাসপাতালের ১৬ নম্বর ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ফুলকি বেগমের মৃত্যু হয়।
হাসপাতালের সহকারী পরিচালক শফিকুল ইসলাম বলেন, বেলা পৌনে ৩টায় আহত সুমি আখতারের মৃত্যু হয়েছে। তার মাথায় প্রচণ্ড জখম ছিল। অতিরিক্ত রক্ষক্ষরণের কারণে তার মৃত্যু হয়।
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ১৯ জনের মধ্যে পাঁচজনের অবস্থা আশঙ্কাজন বলে হাসপাতালের সহকারী পরিচালক শফিকুল জানিয়েছেন।
রংপুর কোতোয়ালি থানার ওসি মুক্তারুল আলম জানান, সুমি আখতার পঞ্চড়ের তেঁতুলিয়া থানার কনস্টেবল মামুনের স্ত্রী। রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার বালারহাট গ্রামের বাবার বাড়ি থেকে বিআরটিসি বাসে করে স্বামীর কর্মস্থলে যাচ্ছিলেন তিনি।
দুর্ঘটনা তদন্তে কমিটি
এ দুর্ঘটনা তদন্তে তিন সদস্যের কমিটি করেছে জেলা প্রশাসন। রংপুরের ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক রুহুল আমিন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট রশিদুল মান্নাফ কবিরকে আহ্বায়ক করে এই কমিটি করে দিয়েছি। কমিটিতে পুলিশের একজন এবং বিআরটিএর একজন কর্মকর্তা সদস্য রয়েছেন।” সাত কর্মদিবসের মধ্যে কমিটিকে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে বলে তিনি জানান।
জেলা প্রশাসক জানান, হতাহতদের আর্থিক সহায়তা ছাড়াও যাদের লাশ বাড়িতে নেওয়ার সামর্থ্য নেই তাদেরও আর্থিক সহায়তা দেওয়া হয়।