প্রেমিককে খুঁজতে এসে বন্দী হল প্রেমিকা
প্রেমিককে খুঁজতে এসে চেয়ারম্যানের হাতে বন্দী হয়েছেন প্রেমিকা। লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলার দূর্গাপুরে এ ঘটনা ঘটে। প্রেমিকা সালমা খাতুনের বাড়ি গাইবান্ধার সদর উপজেলার লক্ষ্মীপুর ইউনিয়নে।
এ বিষয়ে আদিতমারীর থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাসুদ রানা বিডি২৪লাইভকে বলেন, ঘটনা সত্য। মেয়েটি বর্তমানে থানায় পুলিশের হেফাজতে রয়েছে। মেয়েটির অভিভাবকের কাছে তাকে তুলে দেওয়া হবে। তবে ঘরে আটকে রাখার বা মারধরের বিষয়টি আমার জানা নেই। এ বিষয়ে কেউ অভিযোগ করেনি।
স্থানীয় সূত্র জানায়, মুসলিম পরিচয়ে চার বছর আগে সালমা খাতুনকে প্রেমের ফাঁদে ফেলে লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলার দূর্গাপুরের মনি শাহ রায়ের ছেলে গাইবান্ধার পল্লব রায় ওরফে পলাশ।
প্রেমের সম্পর্কের সূত্র ধরে স্থানীয় ব্যবসায়ী ফরহাদ হোসেনের বাড়িতে একটি রুম ভাড়া নিয়ে স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে সালমাকে নিয়ে থাকা শুরু করে পলাশ। সালমা বিয়ের দাবি জানালে বোনের বিয়ে দেয়ার পর তাকে বিয়ে করবে বলে আশ্বাস দেয় পলাশ। এরপর দীর্ঘ সময় কেটে গেলেও বিয়ে না করে টালবাহানা করতে থাকে পলাশ।
কিছুদিন আগে পলাশের সঙ্গে তার গ্রামের বাড়ি দেখতে আসে প্রেমিকা সালমা। সেখানে এসে সালমা জানতে পারে পলাশ সনাতন ধর্মাবলম্বী। পরে ধর্ম পরিবর্তন করে বিয়ের জন্য চাপ দিলে সালমাকে তার বাড়িতে রেখে নিজ বাড়িতে এসে যোগাযোগ বন্ধ করে দেয় পলাশ।
গতকাল শনিবার বিকেলে বিয়ের দাবি নিয়ে পলাশের বাড়িতে এসে অনশনে বসে প্রেমিকা সালমা। এ সময় প্রেমিক পলাশ পালিয়ে যায়। পরে সালমাকে বেধড়ক মারধর করে পলাশের মা অনিতা রানী ও বাবা মনি শাহ রায়। বিষয়টি জানতে পেরে দূর্গাপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সালেকুজ্জামান প্রামাণিক সালমাকে পলাশের বাড়িতে তালাবদ্ধ করে রাখেন।
প্রেমিকা সালমা বলেন, পলাশকে খুঁজতে এসে আজ আমি বন্দী হলাম। চেয়ারম্যান-মেম্বার এসে আমাকে নানাভাবে হুমকি দিয়ে জেলে দেয়ার ভয় দেখিয়েছেন। পলাশ আমার সঙ্গে প্রতারণা করেছে তার কোনো বিচার নাই উল্টো আমাকে শাস্তি পেতে হচ্ছে। আমাকে মারপিট করে মোবাইল ও টাকা-পয়সা কেড়ে নিয়েছে তারা। আমি ন্যায় বিচার চাই।
পলাশের মা অনিতা রানী বলেন, ওই মেয়েটিকে চেয়ারম্যান তালাবদ্ধ করে চাবি নিয়ে গেছেন। মেয়েটির মোবাইল আমার কাছে আছে। আমরা যা করেছি চেয়ারম্যান-মেম্বারের কথায় করেছি। আমাদের কোনো দোষ নেই।
তবে এ বিষয়ে চেয়ারম্যানের কাছে জানতে চাইলে তিনি বিডি২৪লাইভকে বলেন, ঘটনা মিথ্যা, ভিত্তিহীন। মেয়েটিকে মারধরের কোন ঘটনা ঘটেনি। তাছাড়া তাকে আটকেও রাখা হয়নি। তাকে থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। তাকে তার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।