পিয়ন পদে ৩৭০০ পিএইচডি ডিগ্রিধারীর আবেদন
ভারতের উত্তর প্রদেশ রাজ্য পুলিশের টেলিকম শাখায় নিয়োগ দেওয়া হবে বেশ কয়েকজন পিয়ন। নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে এই পদের সর্বনিম্ন শিক্ষাগত যোগ্যতা পঞ্চম শ্রেণি পাস। ৬২টি পদের বিপরীতে আবেদন জমা পড়েছে ৯৩ হাজার ৫০০। শত কোটির বেশি মানুষের দেশ ভারতে এই আবেদনকারীর সংখ্যা বিস্ময় না জাগাতে পারলেও যে বিপুল সংখ্যক উচ্চ শিক্ষিত প্রার্থী আবেদন করেছেন তাতে বিস্ময় জাগবেই। টাইমস অব ইন্ডিয়া জানিয়েছে, ৫০ হাজারের বেশি স্নাতক, ২৮ হাজার স্নাতকোত্তর ও ৩৭০০ পিএইচডি ডিগ্রিধারী প্রার্থী পিয়ন পদে চাকরির জন্য আবেদন করেছেন। বিপুল সংখ্যক অধিক যোগ্যতা সম্পন্ন প্রার্থীর আবেদন পাওয়ায় পরীক্ষা পদ্ধতি বদলানোর কথা ভাবছে সংশ্লিষ্ট দফতর।
পুলিশ বিভাগের সূত্রের বরাত দিয়ে টাইমস অব ইন্ডিয়া জানিয়েছে, ১২ বছর পর রাজ্যটির ৬২টি পিয়নের পদ শূন্য হয়। সূত্রটি বলছে, ‘চাকরিটি অনেকটা পোস্টম্যানের মতো। নিয়োগ পাওয়া ব্যক্তিকে পুলিশের টেলিকম বিভাগের বার্তা এক অফিস থেকে অন্য অফিসে নিয়ে যেতে হবে’।
পুলিশ বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বলেছেন, গত ১৬ আগস্ট আবেদনের তারিখ শেষ হওয়ার পর ৬২টি পদের বিপরীতে তারা ৯৩ হাজার ৫০০ আবেদন পেয়েছেন। স্নাতক, স্নাতকোত্তর ও পিএইচডি ডিগ্রিধারীদের পাশাপাশি আবেদনকারীদের মধ্যে এমবিএ (ব্যাচেলর অব বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন) ও বিটেক (ব্যাচেলর অব টেকনোলজি) প্রার্থীও রয়েছেন। আবেদনকারীদের মধ্যে মাত্র ৭৪০০ জনের শিক্ষাগত যোগ্যতা পঞ্চম থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত।
বিপুল সংখ্যক অধিক যোগ্যতা সম্পন্ন প্রার্থীর আবেদনের প্রবণতার জন্য বাজারে চাকরির অভাবকেই দায়ী করছেন পুলিশ বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। তাছাড়া পিয়ন পদের হলেও চাকরিটি পূর্ণকালীন সরকারি আর শুরুতেই বেতন ২০ হাজার রুপি।
ঐতিহ্যগতভাবে এই পদে নিয়োগ পেতে হলে প্রার্থীকে ঘোষণা করতে হয় যে, তিনি বাইসাইকেল চালাতে পারেন। এক পুলিশ কর্মকর্তা বলেছেন, বেশি যোগ্যতা সম্পন্ন বিপুল সংখ্যক প্রার্থী আবেদন করায় তাদের নির্বাচনি পরীক্ষা কিভাবে নেওয়া হবে তা খতিয়ে দেখতে হচ্ছে।
পুলিশের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (এডিজি-টেলিকম) পিকে তেওয়ারি বলেন, এটা বেশ ভালো যে বেশি যোগ্যতা সম্পন্ন মানুষ আমাদের বিভাগে কাজ করবেন। তিনি বলেন, ‘আমরা তাদের দিয়ে অন্য কাজও করাবো। প্রযুক্তিগত দক্ষতা সম্পন্নরা দ্রুত প্রমোশন পাবেন আর দফতরের সম্পদ বলে বিবেচিত হবেন’।
পিকে তেওয়ারি বলেন, আমরা পরীক্ষা পদ্ধতি বদলে ফেলার চিন্তা করছি। বর্তমান নিয়ম অনুযায়ী একজন পিয়নকে অবশ্যই সাইকেল চালানো জানতে হয় কিন্তু এবার থেকে আমরা প্রার্থীদের মৌলিক দক্ষতা দেখার জন্য একটি লিখিত পরীক্ষা নেওয়ার কথা ভাবছি। এর মধ্যে থাকবে মৌলিক যুক্তিবিদ্যা, প্রার্থীদের সাধারণ জ্ঞান যাচাই করার কিছু প্রশ্ন ও কিছু মৌলিক গণিত।
তিনি জানান পরীক্ষা নেওয়ার দায়িত্ব কোনও একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানকে দেওয়া হবে। স্বচ্ছতা ও ন্যায্যতার ভিত্তিতে প্রার্থী নির্বাচনের জন্য সব কিছু নিশ্চিত করা হবে।