৩০ বছর ধরে অসমাপ্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছে ‘বিশ্বের সবচেয়ে বড়’ প্লেনটি
বিশ্বের সবচেয়ে বড় প্লেন হিসেবে এটিকে তৈরির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু কাজটি কখনোই সমাপ্ত হয়নি। ফলে ইউক্রেনের একটি হ্যাংগারে পড়ে রয়েছে ৩০ বছর ধরে।
বর্তমানে বিশ্বের সবচেয়ে বড় যাত্রী পরিবহনে ব্যবহৃত প্লেন হলো এয়ারবাস এ-৩৮০। তবে এয়ারবাসের বৃহত্তম সেই এ-৩৮০ মডেলের চেয়ে নয় মিটার লম্বা নির্মাণাধীন প্লেনটি।
ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভের একটি হ্যাংগারেই সোভিয়েত আমলের সে প্লেনটি রয়েছে। অ্যান্টোনোভ এএন-২২৫ মডেলের প্লেনটি নির্মাণের আশা এখনো ছাড়েনি কর্তৃপক্ষ। তাই পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়নি একে। যত্ন করেই পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা হয় একে। গত ৩০ বছর ধরে তাই করা হচ্ছে।
ইউক্রেন একদা সোভিয়েত ইউনিয়নের অন্তর্ভুক্ত ছিল। সে সময়েই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে পাল্লা দিতে সুবিশাল প্লেনটির নির্মাণকাজ শুরু হয়। ৭০ শতাংশ নির্মাণকাজ শেষও হয়ে যায়। এরপর ১৯৯১ সালে সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙে যায়। প্লেনটির মালিকানা চলে যায় ইউক্রেনের হাতে। এরপর অর্থ ও প্রকৌশলগত সক্ষমতার অভাবে এর নির্মাণকাজ শেষ করতে পারেনি ইউক্রেন।
অ্যান্টোনোভ এএন-২২৫ মডেলের প্লেন অবশ্য এটাই একমাত্র নয়। এ মডেলের একটি প্লেন বানানো হয়েছিল ১৯৮৫ সালে। সেটি এখনো। সে সময় প্লেনটি বিশ্বের সবচেয়ে বড় প্লেনের খেতাবসহ প্রায় ২০০টি বিশ্বরেকর্ড করে, যার অনেকগুলো এখনো অক্ষুণ্ণ রয়েছে। প্লেনটি প্রধানত মহাকাশযান পরিবহনের জন্য নির্মিত হয়। পরবর্তীতে তা দিয়ে বহু ভারী ও মূল্যবান সামগ্রী পরিবহন করা হয় সারা বিশ্বে। এখনো প্লেনটি সেই কাজ করে যাচ্ছে। প্লেনটির সাফল্য দেখে সোভিয়েত ইউনিয়ন সরকার আরো তিনটি এ মডেলের প্লেন বানানোর সিদ্ধান্ত নেয়। কিন্তু পরের প্লেনটি নির্মাণকাজ শুরু হলেও তা তিন দশকেও আর সম্পন্ন হয়নি।
ইউক্রেন অবশ্য এখনো প্লেনটির নির্মাণকাজ শেষ করার ব্যাপারে আশাবাদী। মাঝখানে ২০১৬ সালে চীনের নির্মাতারা এ প্লেনটির নির্মাণকাজ শেষ করার ব্যাপারে আগ্রহী হয়ে উঠেছিল। কিন্তু এটি কিভাবে চীনে নিয়ে যাওয়া হবে সে বিষয়ে কোনো সমাধান পাওয়া যায়নি। এ কারণে সে পরিকল্পনাও বাতিল করা হয়।
বর্তমানে বিশ্বের আকাশ যোগাযোগ ও মহাকাশ অভিযানের জন্য প্রাইভেট সেক্টর গড়ে উঠেছে। এসব প্রতিষ্ঠান নিজস্ব প্রয়োজনে এ প্লেনটি কাজে লাগাতে পারে বলে আশাবাদী ইউক্রেন সরকার। এজন্য বিনিয়োগ প্রয়োজন হবে ২৫০ থেকে ৩৫০ মিলিয়ন ডলার। অর্থ পাওয়া গেলেই প্লেনটির নির্মাণকাজ শেষ করা হবে বলে আশাবাদী ইউক্রেন।