মিশন ও দূতাবাসে সমন্বয় ফেরাতে মত-দ্বিমত
বিদেশে মিশন ও দূতাবাস কর্মকর্তাদের চিকিৎসা-ভাতা, অর্থ ব্যয়ে স্বাধীনতাসহ বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা নিয়ে চলছে মত-দ্বিমত। উইংগুলোর জন্য আলাদা ব্যাংক হিসাব না থাকায় ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে মিশন গুলোতে দায়িত্বরত কর্মকর্তাদের মধ্যে। এসব সমস্যা স্টেকহোল্ডারদের পরামর্শের মাধ্যমে কীভাবে সমাধানে করা যায় তার সুপারিশ দিতে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিবকে প্রধান করে গত ১৬ই মে ১১ সদস্যের উচ্চ পর্যায়ের আন্তঃমন্ত্রণালয় কমিটি গঠন করা হয়।
কমিটিতে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের অতিরিক্ত সচিব, ধর্ম মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব, জননিরাপত্তা বিভাগের উপ-সচিব, অর্থ বিভাগের প্রতিনিধি, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি, তথ্য মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি এবং সুরক্ষা সেবা বিভাগের প্রতিনিধি সদস্য হিসেবে রয়েছেন। এ কমিটির দুই মাসের মধ্যে মন্ত্রিপরিষদ সচিবের কাছে সুপারিশ জমা দেওয়ার কথা থাকলেও এ নিয়ে এখনো মত-দ্বিমত চলছে বলে জানিয়েছে একটি সূত্র।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের কার্যবিবরণী সূত্রে জানাযায়, কোনো কোনো মিশনে স্থানীয় ও স্বদেশভিত্তিক স্টাফদের বেতন-ভাতার বৈষম্য রয়েছে। অনেক ক্ষেত্রে ভ্রমণ ও চিকিৎসা ভাতা পাওয়ার ক্ষেত্রে সমস্যা হয়ে থাকে। কখনো কখনো বাড়ি ভাড়া ভাতার ক্ষেত্রে পদ অনুসারে বৈষম্য দেখা দেয়। বিভিন্ন উইং-এর গাড়িগুলো ব্যবহারের ক্ষেত্রে উইং কর্মকর্তাদের অগ্রাধিকার দেয়া হয় না। কখনো উইং সংশ্লিষ্ট কাজে গাড়িগুলো ব্যবহারের সুযোগ না দিয়ে অন্য কাজে গাড়ি ব্যবহার করা হয়।
মিশনের বিভিন্ন উইংয়ের কর্মকর্তারা নিজ নিজ মন্ত্রণালয় বা বিভাগ থেকে বাজেট বরাদ্দ পেয়ে থাকেন। এ বাজেটের অর্থ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বাজেটের অর্থের সঙ্গে মিলিয়ে একই ব্যাংক হিসাবে রাখা হয়। এ অর্থ ব্যয়ের ক্ষেত্রে উইংয়ের কর্মকর্তাদের কোনো স্বাধীনতা থাকে না। তাদেরকে যেকোনো ব্যয় নির্বাহের জন্য মিশনের হেড অব চ্যান্সারির ওপর নির্ভর করতে হয়। অনেকক্ষেত্রে উইং কর্মকর্তাদের অজ্ঞাতে তাদের বাজেট বরাদ্দ থেকে দূতাবাসের ব্যয় নির্বাহ করা হয়। এর ফলে বাজেট ব্যবস্থাপনায় জটিলতার সৃষ্টি হয় এবং উইং প্রধানরা অনভিপ্রেত অডিট আপত্তির সম্মুখীন হন।
আন্তঃমন্ত্রণালয় কমিটি গঠনের আগে বাংলাদেশ মিশনে কর্মরত কর্মকর্তারা। সে সময় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা কিছু বিষয়ে দ্বিমত পোষণ করে বলেন, মিশনের উইংগুলো তাদের লক্ষ্য অর্জনের জন্য উইং প্রধানদের অভ্যন্তরীণ সফর জরুরি হলেও প্রতিবন্ধকতার ফলে সেটি সম্ভব হয়ে উঠেনা। জরুরি প্রয়োজনে কোনো কোনো দূতাবাসে ফোন বা ই-মেইল করলে উত্তর পাওয়া যায় না। অনেক মিশনে ইনস্টিটিউশনাল মেমোরি ধরে রাখার ব্যবস্থা না থাকায় পুরনো নথি খুঁজে পাওয়া যায় না। কোনো কোনো দূতাবাসের অফিস ব্যবস্থাপনাও যথাযথ নয়।