পাটুরিয়া ও আরিচায় দ্বিগুণ ভাড়া আদায়ের অভিযোগ
শিবালয় (মানিকগঞ্জ) প্রতিনিধি: ঈদের ছুটি শেষে গত কয়েক দিন ধরে কর্মমুখী মানুষেরা রাজধানী ঢাকা ফিরতে শুরু করেছে। এ কারণে আজ সোমবার সকাল থেকে পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া ও আরিচা-কাজিরহাট নৌ-রুট দিয়ে ফেরি, লঞ্চ, স্পিড বোট, ট্রলারে করে যে যার মত গন্তব্যে পৌঁছাচ্ছেন। তবে বাস টার্মিনালে এসে যাত্রীদের চরম হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে। বাস মালিকরা সিন্ডিকেটের মাধ্যমে যাত্রীদের জিম্মি করে প্রায় দ্বিগুণ ভাড়া হাতিয়ে নিচ্ছে। কোনো উপায় না পেয়ে বাধ্য হয়ে যাত্রীরা অতিরিক্ত ভাড়া গুণে ঢাকা যাচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌ-রুটে ছোট-বড় ২০টি ফেরি ও ৩৩টি লঞ্চের মাধ্যমে যাত্রী ও যানবাহন পার করা হচ্ছে। অপরদিকে আরিচা-কাজীরহাট নৌ-রুটে লঞ্চ, স্পিডবোর্ড এবং ট্রলারে করে হাজার হাজার মানুষ পার হয়ে ঘাটে এসে গাড়িতে ঢাকা যাচ্ছে। পাটুরিয়া ঘাটে বাস টার্মিনালে ভাড়া কিছুটা সহনীয় মাত্রায় থাকলেও আরিচায় ঠিক তার উল্টো চিত্র দেখা গেছে।
আজ সোমবার সকাল থেকে পাটুরিয়া ও আরিচা বাস টার্মিনালে সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, রাজধানী ঢাকামুখো যাত্রীদের উপচে পড়া ভিড়। এ সময় বাসের কন্ট্রাক্টররা নবীনগর, সাভার, গাবতলী ২০০ টাকা করে যাত্রীদের ডাকছেন। বাস-মালিক সমিতির সিন্ডিকেটের কারণে যাত্রীরা অসহায় হয়ে নির্ধারিত ভাড়ার প্রায় দ্বিগুণ ভাড়া দিয়ে বাধ্য হয়ে গন্তব্যে যাচ্ছে বলে যাত্রীরা অভিযোগ করেন।
সাভারের নবীনগরগামী মো. আরশাদুল্লাহ নামের এক যাত্রী কালের কণ্ঠকে জানান, আরিচা ঘাট থেকে নবীনগরের নির্ধারিত ৮০ টাকার ভাড়া ২০০ টাকা নিচ্ছে। বাস মালিকরা সিন্ডিকেটের মাধ্যমে ভাড়া নিচ্ছে। তাই এর কম ভাড়ায় কোনো গাড়িতে তুলছে না আমাদের। এখন বাধ্য অতিরিক্ত ভাড়া দিয়ে যাচ্ছি।
অপরদিকে আরিচা ঘাট পুরাতন ফেরি টার্মিনালে ঢাকাগামী শত শত যাত্রীসেবা বাস থেকে গাড়ি প্রতি ৩০০ টাকা করে বাস-মালিক সমিতির নামে উঠানো হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন চালকরা।
নাম প্রকাশ নাকরার শর্তে এক যাত্রীসেবা বাসচালক জানান, প্রতিটি ট্রিপে সংঘবদ্ধ তিন-চারজন মিলে আমাদের কাছ থেকে ২০০-৩০০ টাকা নিচ্ছে। না দিলে বাসে যাত্রী তুলতে দেওয়া হয় না।
অতিরিক্ত ভাড়া এবং চালকদের কাছ থেকে চাঁদা আদায়ের ব্যাপারের আরিচা বাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মনোরঞ্জন শীল নুকুলের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ঈদের আগে ও পরে এই রুটের বাইরের গাড়ি আসে। কে বা কাহারা বাস মালিক সমিতির নামে টাকা তুলছে তা আমার জানা নাই।
তবে অতিরিক্ত ভাড়ার বিষয়ে তিনি বলেন, যাত্রীদের অতিরিক্ত চাপের কারণে কিছুটা বেশি ভাড়া নেওয়া হচ্ছে। যা প্রতি ঈদেই নেওয়া হয়ে থাকে।
এ ব্যাপারে শিবালয় থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. হাবিবুল্লাহ সরকার জানান, থানা পুলিশের পক্ষ থেকে নিয়মিত খোঁজ-খবর রাখা হচ্ছে। যাত্রীদের কোনো রকম যাতে হয়রানি না হয় তার জন্য পুলিশ সার্বক্ষণিক টহল দিচ্ছে।
শিবালয় উপজেলা নির্বাহী অফিসার মেহেদী হাসান বলেন, বাস টার্মিনালগুলোতে যাতে যাত্রীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় না করে তার জন্য মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হচ্ছে। তবে আমরা বাসস্ট্যান্ডগুলোতে যাবার সাথে সাথে এই চক্রটি গা ঢাকা দেয়। এ কারণে তাদের আইনের আওতায় আনা কষ্ট হচ্ছে।