৩৬তম বিসিএসে ৮ মাসেও হয়নি উত্তীর্ণদের গেজেট
চূড়ান্ত ফলাফল প্রকাশের সাড়ে ৮ মাস অতিক্রম হলেও এখনো ৩৬তম বিসিএসে নিয়োগের জন্য সুপারিশপ্রাপ্তদের গেজেট হয়নি। নিয়োগ প্রক্রিয়ার এই দীর্ঘসূত্রতায় হতাশ প্রার্থীরা দ্রুত গেজেট প্রকাশের দাবি জানিয়েছে। নিয়োগের জন্য অপেক্ষমাণ প্রার্থীরা বলছেন, উত্তীর্ণ পরীক্ষার্থীদের নিয়োগের জন্য এত দীর্ঘ সময় লাগার কথাও নয়। তারা বলছেন, চাকরি পেয়ে খুশি হয়েছিলাম। কিন্তু নিয়োগ পেতে দেরি হওয়ায় আমরা এখন হতাশ।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, সর্বশেষ গত ঈদুল ফিতরের আগেই এই গেজেট প্রকাশের পরিকল্পনা ছিল জনপ্রশাসনের। এজন্য মন্ত্রণালয়ের পরিকল্পনা ছিল মে মাসের মধ্যে ৩৬তম বিসিএসের সারসংক্ষেপ তৈরি করা। এরপর প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতির অনুমোদনের পর গত ১৪ জুনের মধ্যে গেজেট প্রকাশ এবং ১ জুলাইয়ের মধ্যে প্রার্থীদের চাকরিতে যোগদানের ব্যবস্থার পরিকল্পনা করা হয়।
গত বছরের ১৭ অক্টোবর ৩৬তম বিসিএসের চূড়ান্ত ফল প্রকাশ করেছিল সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি)। এরপর উত্তীর্ণ প্রার্থীদের নিয়োগ দেওয়ার জন্য গত ৯ নভেম্বর পিএসসি সুপারিশ পাঠায় জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে। এতে দুই হাজার ৩২৩ জনকে বিভিন্ন ক্যাডারে নিয়োগের জন্য সুপারিশ করা হয়। পর্যাপ্ত ক্যাডার পদ না থাকায় তিন হাজার ৩০৮ জনকে নন-ক্যাডার পদে নিয়োগে সুপারিশের জন্য উত্তীর্ণের তালিকায় রাখা হয়। ক্যাডারে নিয়োগের গেজেট না হলেও নন-ক্যাডারে উত্তীর্ণ পরীক্ষার্থীরা চাকরিতে যোগদান করেছেন। ইতোমধ্যে সমাজসেবা অফিসার পদে যারা নন-ক্যাডারে নিয়োগের সুপারিশপ্রাপ্ত হয়েছিলেন, তারা গত ২১ মে কর্মস্থলে যোগদান করেছেন।
নিয়োগের জন্য সুপারিশপ্রাপ্তরা জানিয়েছেন, পিএসসি বর্তমানে দ্রুত সময়ে নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করলেও মন্ত্রণালয়ের দীর্ঘসূত্রতার কারণে প্রতিটি বিসিএসের বিজ্ঞপ্তি থেকে নিয়োগ পর্যন্ত ৩ থেকে চার বছর লেগে যাচ্ছে। যাচাই-বাছাই শেষে প্রতিবেদন দিতে দুই মাসের বেশি কোনোভাবেই লাগার কথা নয়। অথচ সাড়ে ৮ মাসেও তা হচ্ছে না।
সংশ্লিষ্টদের মতে, মূলত পুলিশের যাচাই প্রতিবেদন ও অন্যান্য প্রক্রিয়াতেই সময় নষ্ট হয়। ফলে ফল প্রকাশের দীর্ঘ সময়েও চাকরিতে যোগদান করতে পারেন না সুপারিশপ্রাপ্ত প্রার্থীরা।
৩৫তম বিসিএসের আগে সরকারের দুটি গোয়েন্দা সংস্থা দিয়ে উত্তীর্ণ প্রার্থীর তথ্য অনুসন্ধান করা হতো। একই প্রার্থী সম্পর্কে দুই গোয়েন্দা সংস্থা দু’ধরনের তথ্য দেওয়ার কারণে আগে আরও বেশি জটিলতার সৃষ্টি হতো। তাই ৩৫তম বিসিএসে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সিদ্ধান্ত নেয়, একটি গোয়েন্দা সংস্থা দিয়ে তথ্য যাচাই-বাছাই করা হবে। পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসনও উত্তীর্ণদের তথ্য যাচাই করবে। এরপরও এই জটিলতার কোনো নিরসন হয়নি।
গেজেটের অপেক্ষায় থাকা শত শত প্রার্থী গত কয়েক দিনে তাদের ক্ষোভ ও হতাশার কথা জানিয়েছেন। তারা বলেছেন, নন-ক্যাডারের ফল অনেক পরে হওয়ার পর তাদের অনেকে চাকরিতে যোগদান করেছে। তারা অবিলম্বে গেজেট প্রকাশ করার জন্য প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে পিএসসির চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ সাদিক ইত্তেফাককে বলেন, তারা চূড়ান্ত ফল প্রকাশ করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে সুপারিশ পাঠিয়ে দিয়েছে। বিভিন্ন ধরনের যাচাই-বাছাই শেষে গেজেট প্রকাশ করবে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।