জাতিসংঘের সঙ্গে স্বাক্ষরিত চুক্তি ফাঁসকারীদের খুঁজছে মিয়ানমার
আন্তর্জাতিক ডেস্ক : রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন প্রশ্নে জাতিসংঘের দুই সংস্থার সঙ্গে স্বাক্ষরিত সমঝোতা চুক্তিটি ফেসবুকে ফাঁস করার পিছনে কে বা কারা রয়েছে তা জানার চেষ্টা করছে মিয়ানমার সরকার।
বুধবার (৪ জুলাই) মিয়ানমারের প্রেসিডেন্ট কার্যালয়ের মুখপাত্র উ জ হতে বলেন, এই খসড়া ফাঁসের পিছনে যার হাত রয়েছে তাকে খুঁজে বের করার চেষ্টা করছে সরকারি কর্মকর্তারা। এ নথি কি জাতিসংঘ সংশ্লিষ্ট কেউ ফাঁস করেছে, না কূটনীতিকরা নাকি সাংবাদিকরা তা ফাঁস করেছেন; তা নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হবে।
মুখপাত্র উ জ হতে’র কাছে ফাঁস হওয়া নথির সত্যতা নিয়ে জানতে চেয়েছিল স্থানীয় সংবাদমাধ্যম ইরাবতি। তবে ওই নথিগুলোর সত্যতা নিশ্চিত করতে অস্বীকৃতি জানান জ হতে। তিনি শুধু বলেন, কে বা কারা নথিগুলো ফাঁস করেছে তা জানতে তদন্ত করা হচ্ছে। তারা জানতে পেরেছেন, অনেক সাংবাদিক ওই পেজটি অনুসরণ করেন।
জ হতে বলেন, ‘আমরা পরীক্ষা করে দেখব যে ফেসবুক পেজটি জাতিসংঘ সংশ্লিষ্ট কেউ কিংবা কূটনীতিক অথবা সাংবাদিকদের কেউ তৈরি করেছেন কিনা। যদি তাদের কেউ এটা করে থাকেন, তবে সেটা হবে নীতিগত লঙ্ঘন। এর দায় তাদেরকে নিতে হবে। এটি একটি গোপন নথি।’
তিনি আরও জানান, এ নথি ফাঁসের ঘটনায় সরকার যথাযথ প্রমাণ সংগ্রহ করবে এবং যদি জাতিসংঘের কারও সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যায়, তবে জাতিসংঘের কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে অভিযোগ করবে।
জ হতে আরো বলেন, এটাই প্রথম নথি ফাঁসের ঘটনা নয়। এর আগে মিয়ানমার ও বাংলাদেশের মধ্যে স্বাক্ষরিত দ্বিপাক্ষিক চুক্তির একটি ফাঁসকৃত কপিও ফেসবুকে ভাইরাল হয়ে পড়েছিল। এ ধরনের প্রবণতাকে রাখাইন রাজ্যের পরিস্থিতি অস্থিতিশীল করার প্রচেষ্টা বলে উল্লেখ করেছেন তিনি।
গত বছরের ২৫ আগস্ট মিয়ানমার সেনাদের অমানবিক জুলুমের মুখে রাখাইন ছেড়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে প্রায় ৭ লাখ রোহিঙ্গা। মিয়ানমার শুরু থেকেই রোহিঙ্গাদের বাঙালি মুসলিম আখ্যা দিয়ে নাগরিকত্ব অস্বীকার করে আসছে। তবে এবারের ঘটনায় আন্তর্জাতিক চাপ জোরালো হওয়ার একপর্যায়ে প্রত্যাবাসন চুক্তিতে বাধ্য হয় মিয়ানমার। তবে সেই চুক্তির আওতায় এখনও একজন রোহিঙ্গাকেও ফিরিয়ে নেয়নি মিয়ানমার। এরমধ্যেই গত ৬ জুন রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন প্রশ্নে মিয়ানমারের সঙ্গে সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষর করে জাতিসংঘ। তবে সেখানেও রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্ব প্রশ্নটি উপেক্ষিত।
‘ইয়াঙ্গুন ইনফরমার’ নামের একটি ফেসবুক পেজে গত ২৯ জুন ওই সমঝোতা চুক্তির কয়েকটি নথি ফাঁস করা হয়। এ নিয়ে গত ৩০ জুন একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ নিয়ে। ওই নথি পর্যালোচনা করে সংবাদমাধ্যমটি জানায়, খসড়া চুক্তিতে রোহিঙ্গাদের জাতিগত স্বীকৃতি মেলেনি এবং উপেক্ষিত হয়েছে তাদের নাগরিকত্বের দাবি। সূত্র: ইরাবতী