মুলা খেলে কী হয়?
স্বাস্থ্য ডেস্ক: মুলায় রয়েছে প্রচুর মাত্রায় ম্যাগনেসিয়াম, জিঙ্ক, কপার, ফলেট, ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম এবং ভিটামিন এ। এই সবকটি উপাদান শরীরের প্রতিটি অঙ্গকে রোগমুক্ত রাখার পাশাপাশি সার্বিকভাবে সুস্থ জীবনের পথকে প্রশস্ত করতে বিশেষ ভূমিকা রাখে। তরকারি হিসেবে এই সবজিটি খাওয়া যেতেই পারে। এতে উপকার পাওয়া যায় ঠিকই, কিন্তু সবথেকে ভালো উপকার পেতে চাইলে মুলার রস খেতে হবে। আর এমনটা করলে কী হতে পারে জানেন?
মুলার রসের গুণাগুণ সম্পর্কে জানিয়েছে জীবনধারা বিষয়ক সাময়িকী বোল্ডস্কাই। আসুন জেনেনি মুলার রস খেলে কী হয়-
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার উন্নতি ঘটায়
মুলা ও এর পাতায় উপস্থিত আয়রণ এবং ফসফরাস শরীরে প্রবেশের পর দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে এতটাই শক্তিশালী করে তোলে যে কোনও রোগই ধারে কাছে আসতে পারে না। সেই সঙ্গে শারীরিক ক্লান্তিও দূরে পালায়।
ভিটামিনের ঘাটতি দূর করে
একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে নিয়মিত মুলার পাতা খাওয়া শুরু করলে দেহের অন্দরে নানাবিধ ভিটামিনের পরিমাণ যেমন বাড়তে থাকে, তেমনি আয়রণ, ক্যালসিয়াম এবং ফলিক অ্যাসিডের ঘাটতিও দূর হয়। ফলে স্বাভাবিকভাবেই ছোট-বড় কোনও রোগই ধারে কাছে ঘেঁষতে পারে না।
শরীরে অন্দরে প্রদাহ কমায়
প্রচুর মাত্রায় অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি উপাদান থাকায় প্রতিদিন যদি মুলার রস খাওয়া যায়, তাহলে দেহের অন্দরে চোট-আঘাতের কারণে হওয়া জ্বালা-যন্ত্রণা কমতে শুরু করে। সেই সঙ্গে ইউরিনারি ট্রাক্ট ইনফ্লেমেশন এবং কিডনির প্রদাহও কমে। সম্প্রতি একটি গবেষণায় দেখা গেছে কিডনি স্টোনের আশঙ্কা কমাতেও মুলার রস নানাভাবে সাহায্য করে থাকে।
ক্যান্সারের মতো রোগকে দূরে রাখে
বর্তমান যা পরিস্থিতি তাতে শরীরকে এই মারণ রোগের হাত থেকে রক্ষা করার জন্য প্রতিনিয়ত যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়া উচিত। আর এই কাজে আপনাকে ব্যাপকভাবে সাহায্য় করতে পারে মুলো। কীভাবে? আসলে মুলোর রসে উপস্থিত অ্যান্থোসায়ানিন এবং ভিটামিন সি শরীরের অন্দরে ক্যান্সার সেলেরে জন্ম এবং বৃদ্ধির আটকায়। বিশেষত কোলন, ইন্টেস্টিনাল,স্টমাক এবং কিডনি ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা কমাতে এই পানীয়টি দারুনভাবে কাজে আসে।
শরীরকে বিষমুক্ত করে
ব্লাডার, কিডনি, প্রস্টেট এবং ডাইজেস্টিভ ট্র্যাকে জমে থাকা ক্ষতিকর উপাদান শরীর থেকে বের করে এই অঙ্গ-প্রত্যঙ্গগুলোর কর্মক্ষমতা বাড়াতে মুলার কোনও বিকল্প হয় না বললেই চলে। শুধু তাই নয়, শরীরের কোণায় কোণায় জমে থাকা টক্সিক উপাদানও ক্ষতি করার আগে তাদের কডনির মাধ্যমে শরীর থেকে বের করে দেওয়ার কাজটাও করে থাকে মুলার রস। শরীর যত টক্সিক মুক্ত থাকবে, তত স্কিনের ঔজ্জ্বলতা বাড়বে। সেই সঙ্গে শরীর, মন চাঙ্গা এবং রোগ মুক্ত থাকবে।
পাইলসের মতো রোগের প্রকোপ কমায়
এই সবজিটির অন্দরে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে কার্বোহাইড্রেট এবং ফাইবার। এটা দেহের অন্দরে প্রবেশ করার পর এমন খেল দেখায় যে পাইলসের মতো রোগের কষ্ট কমতে সময় লাগে না। তাই তো বলি বন্ধু আপনিও যদি এমন কষ্টকর রোগের শিকার হয়ে থাকেন, তাহলে রোজের ডায়েটে মুলাকে অন্তর্ভুক্ত করতে ভুলবেন না যেন!
এনজাইমের ঘাটতি দূর করে
মূলার রসে মাইরোসিনেসি, এস্টারএসেস, অ্যামাইলেস এবং ডিয়াস্টেস নামে এনজাইমগুলি প্রচুর মাত্রায় থাকে, যা ফাঙ্গাল ইনফেকশেনর হাত থেকে রক্ষা করে থাকে।
নানাবিধ ত্বকের রোগকে দূরে রাখে
এই সবজিতে থাকা ফসফরাস, জিঙ্ক, ভিটামিন এ এবং ভিটামিন সি ব্রণ, একজিমা, ফুসকুড়ি সহ একাধিক ত্বকের রোগের উপশমে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।
কোষ্ঠ্যকাঠিন্যের প্রকোপ কমায়
আপনি কি কোষ্ঠ্যকাঠিন্যের সমস্যায় ভুগছেন? তাহলে তো মুলার রস আপনার রোজের সঙ্গী হওয়া উচিত। আসলে এতে উপস্থিত বেশ কিছু কার্যকরি উপাদান হজম ক্ষমতার উন্নতি ঘটানোর পাশাপাশি বাইলের প্রবাহ যাতে ঠিক মতো হয় সেদিকেও খেয়াল রাখে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই কোষ্ঠ্যকাঠিন্যের প্রকোপ কমতে শুরু করে।
অ্যাস্থেমার প্রকোপকে নিয়ন্ত্রণে রাখে
শ্বাস কষ্ট, সেই সঙ্গে হাঁচি-কাশিতে একেবারে জর্জরিত হয়ে পরেছেন? তবে চিন্তা করবেন না, আজ থেকেই মুলার রস খাওয়া শুরু করুন। দেখবেন কষ্ট কমে যাবে। আসলে মুলার রস, লাঞ্জে-এ জমতে থাকা মিউকাসের দেওয়ালকে ভেঙে দেয়। ফলে অল্প দিনেই অ্যাস্থেমার প্রকোপ কমতে শুরু করে। এখানেই শেষ নয়, বমি ভাব, গলার ব্যথা এবং মাথা ঘোরার মতো সমস্যা কমাতেও এই প্রকৃতিক উপাদানটি সাহায্য করে।