রোহিঙ্গাদের ফেরাতে রাজনৈতিক সমাধান ও দায়বদ্ধতা প্রয়োজন : গুতেরেস
স্পোর্টস ডেস্ক: রোহিঙ্গাদের তাদের নিজ দেশে ফেরত যাওয়ার জন্য রাজনৈতিক সমাধান ও দায়বদ্ধতা দুটোরই প্রয়োজন রয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ সফররত জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস। সোমবার (২ জুলাই) কক্সবাজারে রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন শেষে ঢাকায় ফিরে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন। যৌথ এ সংবাদ সম্মেলনে বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট জিম ইয়ং কিমও ব্ক্তব্য রাখেন।
অ্যান্তোনিও গুতেরেস বলেন, ‘রোহিঙ্গাদের পূর্ণ মর্যাদা নিয়ে ফেরত যাওয়ার জন্য রাজনৈতিক সমাধান ও দায়বদ্ধতা নিশ্চিত করতে হবে। রাজনৈতিক সমাধান খুব পরিষ্কার। মিয়ানমার সরকার এবং তাদের সামারিক বাহিনীকে রাখাইনে একটি পরিবেশ তৈরি করতে হবে যাতে রোহিঙ্গারা ফেরত যেতে পারে। রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্ব দিতে হবে।’
দায়বদ্ধতার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে (আইসিসি) বাংলাদেশ তাদের মতামত দিয়েছে। সেখানে একটি প্রয়াস চলছে।’ রাখাইনে রোহিঙ্গাদের ওপর চালানো দমন-পীড়নের বিচার প্রসঙ্গে সম্প্রতি তিনটি সুনির্দিষ্ট বিষয়ে বাংলাদেশের মতামত জানতে চায় আইসিসি। এ প্রসঙ্গে গুতেরেস ওই মন্তব্য করেন। রোহিঙ্গারা যাতে দেশে ফেরত যেতে পারে সেজন্য মিয়ানমার সরকারের ওপর দৃঢ়ভাবে চাপ প্রয়োগ করতে তিনি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানান।
জাতিসংঘের সর্বোচ্চ ক্ষমতাধর নিরাপত্তা পরিষদে মিয়ানমার ইস্যুতে বিভক্তির বিষয়ে অ্যান্তোনিও গুতেরেস বলেন, ‘অনেক বিষয়েই তাদের ভেতরে বিভক্তি আছে। মিয়ানমার ইস্যুতেও আছে। আমি নিশ্চিত করে বলতে পারি, রোহিঙ্গাদের ফেরত নেওয়ার জন্য মিয়ানমারকে অনুরোধ করেছে নিরাপত্তা পরিষদ। কিন্তু দেশটির ওপর চাপ প্রয়োগ করবে কিনা্, তা নিয়ে পরিষদের মধ্যে বিভক্তি রয়েছে।’
কক্সবাজারে রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমার হৃদয় ভেঙে গেছে। সেখানে আমি রোহিঙ্গাদের মুখ থেকে গণহত্যা, গণধর্ষণ ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা শুনেছি।’
বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট জিম ইয়ং কিম তার বক্তব্যে রোহিঙ্গা ইস্যুতে বাংলাদেশকে ৪৮ কোটি ডলার অনুদান দেওয়ার ঘোষণা দেন। তিনি বলেন, ‘মানবিক সাহায্য এবং উন্নয়ন একইসঙ্গে হতে পারে। আমরা এই কাজটি বাংলাদেশে করছি। এই অর্থ শুধু রোহিঙ্গাদের জন্য ব্যবহার হবে না; কক্সবাজারের যারা অধিবাসী, তাদের উন্নয়নেও ব্যবহৃত হবে।’
সংবাদ সম্মেলনে তাদের দুজনকেই প্রশ্ন করা হয় তারা মিয়ানমার যাবেন কিনা। জবাবে বিশ্বব্যাংক প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘আমার এমন কোনও পরিকল্পনা নেই।’ তিনি আরও বলেন, ‘মিয়ানমারকে বিশ্বব্যাংকের কিছু বাজেট সহায়তা দেওয়ার পরিকল্পনা ছিল। সেটি আমরা পিছিয়ে দিয়েছি। এখন সেখানে শুধু নিয়মিত প্রকল্প সহায়তা দেওয়া হচ্ছে।’
একই প্রশ্নের জবাবে জাতিসংঘ মহাসচিব জানান, মিয়ানমার যাওয়ার তার কোনও পরিকল্পনা এখনও নেই। তিনি বলেন, ‘যখন মনে করব আমার যাওয়াটা ফলপ্রসূ হবে, তখনই যাবো।’