ঈদ স্পেশাল দশ রেসিপি
রোজার শেষে এসেছে ঈদুল ফিতর। এই ঈদের রান্নার মূল আইটেমগুলো সব হবে মাংস দিয়ে। আজ আপনাদের জন্য গরু-খাসি-হাঁস-মুরগির মাংসের ঈদ স্পেশাল দশ রেসিপি:
গরুর মাংস স্টেক :উপকরণ: হাড় ছাড়া গরুর মাংস ৫০০ গ্রাম। আদা পেস্ট আধা চা চামচ। হট টমেটো সস ১/২ কাপ, গোল মরিচ গুঁড়া সামান্য। রসুন পেস্ট আধা চা চামচ। জিরার গুঁড়া সামান্য স্টেক স্পাইস পরিমাণ মতো। ওলিভ অয়েল ২ টেবিল চামচ, লবণ ও মরিচ-স্বাদ মতো।
প্রস্তুত প্রণালী : মাংস পছন্দ মতো কেটে ধুয়ে নিন। একটি পাত্রে সব উপকরণ নিয়ে ভালোভাবে পেস্ট বানিয়ে নিন। এবার স্টেকগুলো মসলা মেখে মেরিনেট করে ৩ থেকে ৪ ঘণ্টার জন্য ফ্রিজে রেখে দিন। গ্রিলে স্টেক দিয়ে মাঝারি তাপমাত্রায় গ্রিল করুন। ওভেনেও গ্রিল করে নিতে পারেন।লক্ষ্য রাখবেন স্টেক যেন খুব শক্ত না হয়ে যায়। এরপর স্টেকের ওপর গ্রেভি দিয়ে আপনার পছন্দ মতো সাজিয়ে পরিবেশন করুন মজাদার স্টেক।বাটার চিকেনবাটার
চিকেন : উপকরণ:মুরগির মাংস দেড় কেজি, টক দই সিকি কাপ, টমোটো পিউরি দেড় কাপ, আদা বাটা ১ টেবিল-চামচ, শুকনা মরিচ কুচি ১ টেবিল-চামচ, ধনে-জিরা ও কালো গোলমরিচ একসঙ্গে ভেজে গুঁড়া করা ১ চা-চামচ, মাখন ৫০ গ্রাম, ক্রিম ১ টিন (দুধের সর দিলেও চলবে), লবণ প্রয়োজনমতো, সয়াবিন তেল সিকি কাপ। প্রণালী:মুরগি সিকি কাপ তেলে আদা বাটা, শুকনা মরিচ কুচি ও লবণ দিয়ে হালকা করে ভাজতে হবে। এবার টক দই, টমোটো পিউরি ও ভাজা মসলা দিয়ে রান্না করতে হবে। মসলা ঘন হয়ে এলে দুধের সর বা ক্রিম দিয়ে দমে বসাতে হবে। এবার মাখন অন্য পাত্রে গুলে মুরগির পাত্রে ঢেলে দিতে হবে। দুই মিনিট পর নামিয়ে পরিবেশন করুন।ক্যাশু চিকেনক্যাশু
চিকেন : প্রয়োজনীয় উপকরণ:মুরগির মাংস আধা কেজি, তিন টেবিল চামচ অলিভ অয়েল, লবণ ও গোল মরিচ গুঁড়া স্বাদমতো, আড়াই চা চামচ মরিচ বাটা, আধা কাপ চিকেন স্টক, ক্যাপসিকাম অর্ধেকটা, ২ থেকে ৩টা পেঁয়াজ, ১/৪কাপ ওয়েস্টার সস,১ টেবিল চামচ চিনি, ৪টা শুকনো মরিচ, কাজু বাদাম আধা কাপ।
প্রস্তুত প্রণালী:মুরগির মাংস পাতলা টুকরো করে কেটে নিন। ক্যাপসিকাম চিকন চিকন ফালি করে কেটে নিন। মাঝারি তাপে কড়াইতে ১টেবিল চামচ তেল গরম করে অর্ধেকটা মুরগির মাংস, লবণ ও মরিচ দিয়ে নাড়ুন। ভাজা হয়ে গেলে মুরগির মাংস একটা বাটিতে তুলে রেখে আবারো ১টেবিল চামচ তেল নিয়ে একইভাবে বাকি মুরগির মাংস ভাজুন।এবার ১টেবিল চামচ তেল আলাদা একটা কড়াইতে গরম করুন। মরিচ বাটা,চিকেন স্টক,ক্যাপসিকাম,ওয়েস্টার সস,চিনি, পেঁয়াজ দিয়ে ৩ মিনিট কড়া তাপে নাড়ুন। তাপ কমিয়ে ভাজা মুরগির মাংসগুলো দিয়ে ৪ থেকে ৫ মিনিট তাপ দিন। সবজিগুলো সেদ্ধ হলে নামিয়ে গরম গরম খিচুরি,পোলাওয়ের সঙ্গে পরিবেশন করুন মজাদার থাই ক্যাশু চিকেন।
লেবু-নারকেলে হাঁসলেবু-নারকেলে হাঁস : উপকরণ: হাঁসের মাংস আট টুকরা, নারকেলের দুধ ২ কাপ, নারকেল ফালি আধা কাপ, লেবুর রস ১ টেবিল-চামচ, লেবুর খোসা ১ চা-চামচ, (কুচি করা), আদা, রসুন বাটা ১ টেবিল-চামচ, পেঁয়াজ ১ কাপ, গরম মসলা গুঁড়া ১ চা-চামচ, মরিচের গুঁড়া আধা চা-চামচ, হলুদের গুঁড়া সামান্য, কাঁচা মরিচ ৪-৫টি, চিনি ২ চা-চামচ, দারুচিনি ২ টুকরা, এলাচ ২টি, লবণ স্বাদমতো, তেল আধা কাপ।প্রণালী: প্রথমে হাঁস ভালো করে পরিষ্কার এবং টুকরা করে ধুয়ে নিতে হবে। সসপ্যানে তেল দিয়ে পেঁয়াজ কুচি একটু নরম করে হাঁসের মাংস ভেজে নিতে হবে। তারপর একে একে আদা-রসুনবাটা, হলুদ-মরিচের গুঁড়া, লবণ, দারুচিনি, এলাচ ও নারকেলের ফালি দিয়ে ভালো করে কষে নিতে হবে। কষা হলে নারকেলের দুধ দিয়ে ঢেকে দিতে হবে ৫ মিনিট। মাংস সেদ্ধ হলে লেবুর রস, লেবুর খোসা, কাঁচা মরিচ, চিনি এবং সবশেষে গরম মসলার গুঁড়া দিয়ে সাজিয়ে পরিবেশন করা যায় লেবু-নারকেলের হাঁস।
কালো ভুনাকালো ভুনা : উপকরণ: গরুর মাংস-১ কেজি, সরিষার তেল-আধা কাপ, আদা, রসুন, পেঁয়াজ বাটা ১ কাপ, হলুদ গুঁড়া-২ চামচ, মরিচ গুঁড়া-৪ চামচ, ধনিয়া গুঁড়া-২ চামচ, জিরা গুঁড়া ১ চামচ, আলু বোখারা-৫টি, টমাটো লম্বা ফালি-২টি, কাঁচা মরিচ আস্ত ৬টি, লবণ-২ চামচ, পেঁয়াজ কুচি- ১কাপ, হাটহাজারী মরিচ ভেজে গুঁড়া করা-৩ চামচ, ধনেপাতা কুচি- ২ চামচ, গরম মসলা গুঁড়া- ২ চামচ। তৈরি করার নিয়ম: প্রথমে একটি বাটিতে গরুর মাংস, আদা, রসুন, পেঁয়াজ বাটা, মরিচ, ধনিয়া ও জিরা গুঁড়া, আলু বোখারা, টমাটো, কাঁচা মরিচ, লবণ, পেঁয়াজ কুচি ও সরিষার তেল দিয়ে ভালো করে মাখিয়ে নিন। চুলায় একটি হাঁড়ি দিন। হাঁড়িতে মাখানো মাংস দিয়ে নাড়াচাড়া করে ঢাকনা দিয়ে ঢেকে ৩০ মিনিট জ্বাল দিতে হবে। চুলায় আরেকটি হাঁড়িতে তেল দিন। তেল গরম হলে পেঁয়াজ কুচি দিয়ে সামান্য ভেজে জ্বাল করে রাখা গরুর মাংস, হাটহাজারী মরিচ গুঁড়া, ধনেপাতা কুচি, গরম মসলা গুঁড়া দিয়ে নাড়াচাড়া করুন। মাংস কালো হয়ে ওপরে তেল ভেসে উঠলে নামিয়ে নিন। তৈরি হয়ে যাবে কালো ভুনা। সুন্দর করে সাজিয়ে পরিবেশন করুন।
কাশ্মীরি ঝাল মুরগিকাশ্মীরি ঝাল মুরগি : উপকরণ:৩০০ গ্রাম মুরগির মাংস। ২ চা চামচ হলুদ গুঁড়া। ১ চা চামচ লাল মরিচ গুঁড়া। ১/২ চা চামচ গোলমরিচ গুঁড়া। ১/২ কাপ দুধ। ১০ টি শুকনো মরিচ (যদিও এটি ঝাল একটি রেসিপি তারপরও চাইলে নিজের স্বাদ অনুযায়ী ঝাল কম দিতে পারেন)। ২/৩ টি বড় আকারের পেঁয়াজ। ১ চা চামচ রসুন বাটা।সামান্য ভাজা তিল। ১/৪ চা চামচ আদা বাটা। তেল প্রয়োজন মতো। লবণ স্বাদমতো। ২ চা চামচ চিনি। ১ টেবিল চামচ ভিনেগার। পদ্ধতি:প্রথমে মুরগির মাংস টুকরো করে কেটে ভালো করে পরিষ্কার করে রাখুন।মুরগির মাংসের সঙ্গে হলুদ, মরিচ, গোলমরিচ গুঁড়া, দুধ ও লবণ মিশিয়ে ১০ মিনিট আলাদা করে রাখুন।২ টেবিল চামচ তেল প্যানে গরম করে নিয়ে তা লবণ মাখানো মুরগির পাত্রে ঢেলে মাখিয়ে রেখে দিন ৫ মিনিট।একটি প্যানে তেল গরম করে নিয়ে শুকনো মরিচ দিয়ে ভাজতে থাকুন। কিছুক্ষণ ভাজা হলে মুরগির মাংস ঢেলে মাংস কষাতে থাকুন।খানিকক্ষণ পর পেঁয়াজ, লবণ, চিনি এবং ভিনেগার মুরগির মাংসে দিয়ে আবার কষাতে থাকুন।- কষানো হয়ে এলে পানি দিয়ে মাংস রান্না করতে থাকুন।মাংস সেদ্ধ হয়ে ঝোল মাখা মাখা হয়ে এলে চুলা থেকে নামিয়ে গরম গরম ভাত, রুটি কিংবা পরোটার সাথে পরিবেশন করুন সুস্বাদু ‘কাশ্মীরি ঝাল মুরগি’ ।
মাংস ভর্তামাংস ভর্তা : উপকরণ:হাড় ছাড়া মুরগির মাংস ১/২ কাপ। রসুন মোটা করে কাটা- ১/৪ কাপের একটু বেশি। কাঁচা মরিচ- স্বাদমত। লবণ- স্বাদমত। সরিষার তেল ১/৪ কাপ। ধনেপাতা বড় এক মুঠো। জিরা গুঁড়া ১/৪ চা চামচ। প্রণালী: প্যানে সরিষার তেল গরম করে লবণ ও ধনেপাতা বাদে বাকি সব উপকরণ দিয়ে দিন। অল্প আঁচে ভাজুন। খেয়াল রাখবেন মাংস যেন ভাজা ভাজা না হয়। কেবল সেদ্ধ হবে।মাংস সেদ্ধ হয়ে গেলে ধনেপাতা দিয়ে দিন। একটু নেড়ে নামিয়ে নিন।মিশ্রণটি একটু ঠাণ্ডা হলে লবণ দিয়ে দিন। ভালো করে মিশিয়ে একে পাটায় মিহি করে বেটে নিন। এবার পরিবেশন করুন।
মেজবানী মাংসমেজবানী মাংস : উপকরণ: গরুর বিভিন্ন অংশের মাংস, কলিজা ও হাড় মিলিয়ে ৫ কেজি, পেঁয়াজকুচি ২ কাপ, আদাবাটা ৩ টেবিল-চামচ, রসুনবাটা ২ টেবিল-চামচ, লাল মরিচবাটা ৩ টেবিল-চামচ, জিরা গুঁড়া দেড় টেবিল-চামচ, ধনে গুঁড়া ১ টেবিল-চামচ, হলুদ গুঁড়া ২ টেবিল-চামচ, সাদা তিলবাটা ১ টেবিল-চামচ, পেঁয়াজবাটা আধা কাপ, সরিষা তেল আড়াই কাপ, মিষ্টি জিরাবাটা ১ চা-চামচ, রাঁধুনিবাটা ১ চা-চামচ, সরিষাবাটা ১ টেবিল-চামচ, পোস্তদানাবাটা ১ টেবিল-চামচ, তেজপাতা ৭-৮টি, এলাচ, দারুচিনি ও লবঙ্গবাটা ১ টেবিল-চামচ, কাবাব চিনিবাটা ১ টেবিল-চামচ, জায়ফল-জয়ত্রিবাটা ১ চা-চামচ, গোলমরিচবাটা ১ চা-চামচ, মেথিবাটা ১ চা-চামচ, পানি ৪-৫ কাপ, লবণ স্বাদমতো।প্রণালী : তেলে পেঁয়াজকুচি লাল করে ভেজে গরম মসলা ছাড়া বাকি মসলা মাখিয়ে মাংস ঢেলে ভালোভাবে কষান।আধা ঘণ্টা পর ৪-৫ কাপ গরম পানি দিয়ে ঢেকে দিন।মাংস সেদ্ধ হয়ে এলে গরম মসলা দিয়ে কিছুক্ষণ ঢেকে রেখে নামিয়ে নিন। তৈরি আপনার মেজবানী মাংস!
আস্ত চিকেন মোসাল্লামআস্ত চিকেন মোসাল্লাম : উপকরণ: এক কেজি ওজনের আস্ত মুরগি ১টি, পেঁয়াজ বাটা ১ কাপ, কাঁচা মরিচ ৫টি, রসুন বাটা ২ টেবিল চামচ, আদা বাটা ৩ টেবিল চামচ, ধনে গুঁড়া ২ চা চামচ, সয়াবিন তেল বা ঘি ১ কাপ, ঘি ৩ টেবিল চামচ, দই আধা কাপ, পেঁয়াজ বেরেস্তা আধা কাপ, গরম মসলা গুঁড়া ১ চা চামচ, কাজু ও পোস্ত বাটা ৩ টেবিল চামচ, কিশমিশ বাটা ২ টেবিল চামচ, কেওড়া পানি ১ চা চামচ, আলু সেদ্ধ ২টি, ডিম সেদ্ধ ২টি, কাজু ও পেস্তা কুচি মিলিয়ে একসঙ্গে ৩ টেবিল চামচ, লবণ পরিমাণমতো।প্রণালী:১. মুরগির ভেতরটা ভালোভাবে পরিষ্কার করে নিন। ২. সেদ্ধ ডিম ও আলু সামান্য লবণ দিয়ে ভেজে নিন।৩. এবার ডিম ও আলু মুরগির পেটের ভেতর ঢুকিয়ে হাত, পা ও পেট ভালো করে সেলাই করে হালকা ভেজে নিন।৪. ওই তেলে সব মসলা কষিয়ে নিন।৫. মসলা কষানো হলে মুরগি দিন। অল্প অল্প করে দই দিন। মাখা মাখা হয়ে এলে কাজু ও পেস্তা কুচি, পেঁয়াজ বেরেস্তা, কাঁচা মরিচ ও কেওড়া দিয়ে নামিয়ে নিন।
মাটন কোরমামাটন কোরমা : উপকরণ: খাসির মাংস দুই কেজি, পেঁয়াজবাটা আধা কাপ, রসুনবাটা দুই চা-চামচ, আদাবাটা এক টেবিল-চামচ, দারুচিনি বড় চার টুকরা, তেজপাতা দুটি, লবণ দুই চা-চামচ, ঘি আধা কাপ, কাঁচা মরিচ আটটি, কেওড়া দুই টেবিল-চামচ, তরল দুধ দুই টেবিল-চামচ, এলাচি চারটি, টক দই আধা কাপ, চিনি চার চা-চামচ, দেশি পেঁয়াজকুচি আধ কাপ, লেবুর রস এক টেবিল-চামচ, জাফরান আধা চা-চামচ, (দুই টেবিল-চামচ তরল দুধে ভিজিয়ে ঢেকে রাখুন)।প্রণালী: মাংস টুকরো করে ধুয়ে পানি ঝরিয়ে নিন। সব বাটা মসলা, গরম মসলা, টক দই, সিকি কাপ ঘি ও লবণ দিয়ে মেখে হাত ধোয়া পানি দিয়ে ঢেকে মাঝারি আঁচে চুলায় বসিয়ে দিন। মাংস সেদ্ধ না হলে আরও পানি দিন।পানি অর্ধেক টেনে গেলে কেওড়া ও কাঁচা মরিচ দিয়ে আবার হালকা নেড়ে ঢেকে দিন। ১৫ থেকে ২০ মিনিট পর পাশের চুলায় বাকি ঘি গরম করে পেঁয়াজকুচি সোনালি রং করে ভেজে মাংসের হাঁড়িতে দিয়ে বাগার দিন। তারপর চিনি দিয়ে নেড়ে ঢেকে দিন। পাঁচ মিনিট পর ঢাকনা খুলে দুধে ভেজানো জাফরান ওপর থেকে ছিটিয়ে দিয়ে আরও পাঁচ মিনিট ঢেকে রাখুন। তারপর ঢাকনা খুলে লেবুর রস দিয়ে হালকা নেড়ে আঁচ একেবারে কমিয়ে তাওয়ার ওপর ঢেকে প্রায় ২০ মিনিট থেকে আধা ঘণ্টার মতো দমে রাখুন।যখন কোরমা মাখা মাখা হয়ে বাদামি রং হবে এবং মসলা থেকে তেল ছাড়া শুরু করবে, তখন নামিয়ে পরিবেশন করুন।