হুমকি দেওয়া সেই নারীকে নিয়ে এবার মুখ খুললেন সার্জেন্ট
রাজধানীর মিরপুরে স্কলাস্টিকা স্কুলের সামনে ট্রাফিক পুলিশের সার্জেন্টকে উদ্দেশ্য করে ‘সরকারদলীয় এমপির মেয়ে’ দাবি করে আগ্রাসী আচরণ করে এক নারী। সেই আগ্রাসি আচরণের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে (ফেসবুক) ইতোমধ্যে ভাইরাল। ভিডিওতে ওই নারী সার্জেন্ট ঝোটন সিকদারসহ পুলিশদের তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করে নানা মন্তব্য করতে দেখা গেছে।
এ বিষয়ে টেলিফোনে সার্জেন্ট ঝোটন শিকদার বিবিসিকে বলেন, ঐ মহিলার গাড়িটি “ডাবল করে” পার্কিং করে রাখার ফলে পুরো রাস্তাটিতে প্রচণ্ড যানজট তৈরি হয়ে যায়।
“আমি উনাকে বললাম দ্রুত তার ড্রাইভারকে ফোন করে ডেকে গাড়িটা যেন সরিয়ে ফেলার ব্যবস্থা করেন, কিন্তু বদলে তিনি আমাকে ধমকাতে শুরু করে দেন।”
এই ঘটনা এবং তা ফেসবুকে প্রচার নিয়ে কোনো চাপের মুখে পড়েছেন কিনা – জানতে চাইলে মি শিকদার বলেন, উচ্চপদস্থ একজন পুলিশ কর্মকর্তা বিষয়টি তার মুখ থেকে জানতে চেয়েছিলেন।
ঝগড়ার ছবি কেন তুললেন, এই প্রশ্নে তিনি বলেন, “অনেক সময় মহিলারা হয়রানির নানা অভিযোগ করেন। আমি তাই প্রমাণ রাখার জন্য ছবি তুলেছি।”
ছবিটি ফেসবুকে পোস্ট করা কি পুলিশের বিধির ভেতরে পড়ে? এই প্রশ্নে সার্জেন্ট শিকদার স্পষ্ট জবাব দিতে পারেননি। তবে তিনি বলেন, “ভাল করেছি কি মন্দ করেছি মানুষ সেই সিদ্ধান্ত নেবে। বিধি ভঙ্গ করেছি কিনা তা আমার সিনিয়রদের কাছে জিজ্ঞেস করতে পারেন। আমার নিজের কোনো অনুতাপ নেই। ”
তবে ফেসবুকে শত শত মানুষ সার্জেন্ট শিকদারের প্রশংসাই করছেন।
কালো রঙের ঐ গাড়ির বিরুদ্ধে বেআইনি পার্কিং করে যানজট তৈরির একটি মামলা হয়েছে।
উল্ল্যেখ্য, গতকাল মঙ্গলবার (২৫ সেপ্টেম্বর) বিকেলে সার্জেন্ট ঝোটন সিকদার তার ফেসবুকে একটি ভিডিও পোষ্ট করেন। পোস্টে তিনি লিখেন, ‘এই ভদ্র মহিলা মিরপুর ১৩ নম্বর স্কলাস্টিকা স্কুলের সামনে তার প্রাইভেটকার (ঢাকা মেট্রো-গ-২৬-৯৩৪৭) ডাবল লেনে পার্কিং করে রেখেছেন।
তার গাড়ির জন্য পেছনের গাড়িগুলো আসতে পারছে না। প্রচণ্ড জ্যাম লেগে আছে। তাকে অনেকবার সবিনয় অনুরোধ করলাম, আপু আপনার গাড়ির ড্রাইভারকে ডেকে দ্রুত গাড়িটি সরিয়ে পেছনের গাড়িগুলো আসার সুযোগ দিন এবং জ্যামমুক্ত করেন।
কিন্তু না, তিনি আমার কোনো কথা তো শুনলেনই না, বরং আমাকে খারাপ ভাষায় গালাগালি করেন এবং সঙ্গে বলেন তুমি সরকারের দুই টাকার চাকর, আমাকে চেনো তুমি? কার গাড়ি জানো এটা? আরও অনেক খারাপ কথা!’
তাৎক্ষনিক ওই নারীর নাম-পরিচয় জানা যায়নি। আইন লঙ্ঘন করার ভিডিও নেওয়ার সময় সার্জেন্টকে তিনি বলেন, ‘এই কার গাড়ির ছবি তোলো? এটা সরকারি দলের লোকের গাড়ি। কার গাড়ির ছবি তোলো? বেশি কইরো না! তোমার মতো সার্জেন্ট কয় টাকা বেতনে চাকরি করে? কয় টাকা বেতনে চাকরি করে তোমার মতো সার্জেন্ট?
আমরা প্রধানমন্ত্রীর লোক, ঠিক আছে? যদি সাহস থাকে আমার বাবা জাতীয় কমিটির সদস্য, আমার বাবা এমপি, ঠিক আছে? তোমার মতো হাজারটা সার্জেন্ট…ঠিক আছে? কয়টাকা বেতনে চাকরি করো? হ্যাঁ চাকরই তো..চাকরই তো!’
এদিকে পোস্টটি ভাইরাল হওয়ার পর ফেসবুকে অনেকেই ওই নারীর কুরুচিপূর্ণ মন্তব্যের ভিডিও শেয়ার করে তার কঠোর সমালোচনা করেন।