অটোরিকশা চালিয়ে ছেলের পড়ার খরচ যোগান মা
---
নিউজ ডেস্ক : আসলে নিয়তি কখন কোথায় মানুষকে নিয়ে যায় তা বলা যায় না। তবুও আমাদের বেঁচে থাকতে হয় জীবনের তাগিদে। আর আমাদের যাদের সচল জীবন তারা হয়তো বুঝতে পারবেন না। আসলে অচল জীবন কতটা ভয়ংঙ্কর জীবন। কতটা কষ্ট করে সেই অচল জীবন সচল রাখতে হয়। দিন আনে দিন খেয়ে যে মানুষ বেঁচে আছেন। তাদের আসলে যে কোন পরিস্থিতেই নিজেকে প্রস্তুত রাখতে হয়। আর যিনি শত কষ্টের মাঝেও বেঁচে থাকেন এবং বাঁচিয়ে রাখেন তিনিই সত্যিকারের যোদ্ধা। তিনিই শত কষ্টের মাঝেও নিজের এক হাসি দিয়ে পৃথিবী সকল মন খারাপ মানুষের মন ভালো করে দিতে পারেন।
হ্যাঁ তিনি নারী হয়ে পেরেছেন। শত কষ্টের মাঝেও তিনি হাসতে জানেন এবং হাসাতে জানেন। খুব কম সংখ্যক নারী আছেন যারা রিকশা চালাতে জানেন বা আমাদের এই বদ্বীপে চালাতে পারেন। বাংলাদেশের বাণিজ্যিক রাজধানী চট্টগ্রামে এক নারীর খোঁজ পাওয়া গেল ফেসবুকের মাধ্যমে। তিনি অটোরিকশা চালিয়ে নিজের সন্তানের খরচ বহন করছেন। তার ছেলে সামনের বছর এসএসসি পরীক্ষা দেবে। ছেলের পড়ার খরচ আর নিজেদের জীবন চালাতে এই নারী বেছে নিয়েছেন অটোরিকশা। তার সাহসী কথায় মুগ্ধ হয়ে বর্তমান সময়ের সবচেয়ে জনপ্রিয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে চট্টগ্রামের দুজন তরুণ শেখ ইশতিয়াক এবং অতুল ঐ নারীর ছবি তুলে ফেসবুকে পোস্ট করেছেন। যা এখন ভাইরালে রুপান্তরিত হয়েছে। তারা নিজেদের পোস্টে লিখেছেন,
‘উনি রিকশা চালায়। আমাদের সমাজে বেশিরভাগ মহিলা অর্থের অভাবে বিভিন্ন প্রকারের অপরাধের সাথে জড়িত হয়ে পরার কারণ আমাদের সমাজ (বিশেষ করে পুরুষ)। ব্যাপারটি আজ উপলব্ধি করলাম। চট্টগ্রাম নিউ মার্কেট থেকে দেওয়ানহাট আসব রিকশায়, আমার সাথে আমার ছোট ভাই অতুল। দেখালাম এক মহিলা রিকশা চালাচ্ছে, ব্যাপারটা ইন্টারেস্টিং লাগায় উঠলাম ওনার রিকশায়। ওনার একটা ছেলে এইবার এস এস সি পরীক্ষা দেবে। খুব ভাল লাগলো একজন মহিলা ভিক্ষা এবং অপরাধ মূলক কাজের সাথে লিপ্ত না হয়ে সৎ উপায়ে জীবিকা নির্বাহ করছে।
এইবার আসি মূল কথায়, নিউমার্কেট থেকে দেওয়ানহাট আসার সময় না হলেও ১০-১৫ মানুষকে উচ্চস্বরে একজন মহিলা রিকশা চালাচ্ছে তা নিয়ে আপত্তিকর বাক্য প্রদর্শন এবং খুব বাজে ভাবে হাসাহাসি করতে দেখলাম। ও চাচি, ওখালা, মহিলা মানুষ রিকশা চালায় (কটাক্ষ করে) আরো বাজে ভাবে বিরক্ত করছিল। তিনি কোনও আপত্তিকর কমেন্টের রিপ্লাই করে নি। আবার আমরা যদি প্রতিবাদ করতে যাই তাহলে উনি বলে, ‘থাক বাবা”। আমাদের শিক্ষিত সমাজের অনেক নারী যেখানে অসামাজিক কাজে লিপ্ত, সেখানে একজন মহিলা যখন সৎ উপায়ে উপার্জন করতে যায় বিভিন্ন প্রকার প্রতিবন্ধকতার স্বীকার হতে হয়। কি এক সমাজ ব্যবস্থা আমাদের! কখন বদলাবো আমরা??
যাহোক, একদিন অব্যশই এই আন্টি অনেক বড় হবে, এবং ওনার ছেলে অনেক বড় কিছু করতে পারবে এই দোয়া করি। এই আন্টি থেকে একটা ব্যাপার শিখেছি, যে তোমাকে উপহাস করবে তাকে প্রতিবাদ না করে একটি সুন্দর হাঁসি দিয়ে চলে যাও, তার উত্তর সে একদিন পেয়ে যাবে।”