বুধবার, ১২ই জুলাই, ২০১৭ ইং ২৮শে আষাঢ়, ১৪২৪ বঙ্গাব্দ

ষোড়শ সংশোধনী বাতিল নিয়ে সংসদে বিতর্ক

AmaderBrahmanbaria.COM
জুলাই ৯, ২০১৭
news-image

---

বিচারকদের অপসারণের ক্ষমতা সংসদের হাতে ফিরিয়ে আনা সংক্রান্ত সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী বাতিল করায় সংসদে বিচার বিভাগের তীব্র সমালোচনা করেছেন সংসদ সদস্যরা। তাঁরা এই রায় পুনর্বিবেচনার আহ্বান জানিয়েছেন।

আজ রোববার জাতীয় সংসদে এ নিয়ে কথা বলেছেন একাধিক সংসদ সদস্য।

বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমদ বলেন, ‘আমার খুব দুঃখ লাগে এরা সংবিধান নিয়ে কথা বলেন। আজকে আমার বলতে দ্বিধা লাগে যে, তাঁরা সুবিধাবাদী। আইয়ুব খানের পদ্ধতি আমাদের দেশের এ সমস্ত অ্যামিকাস কিউরিদের পছন্দ। এটা করতে গিয়ে তাঁরা অসত্য কথা বলেছেন।’

তোফায়েল আহমেদ আরো বলেন, ‘পৃথিবীর সমস্ত সভ্য দেশে এখনো পার্লামেন্ট সার্বভৌম এবং তাঁরাই বিচারপতিকে ইমপিচ করার ক্ষমতা রাখেন। তবে যাঁরা এ বাতিলের পক্ষে ওকালতি করেছেন তাঁদের নিন্দা জানাবার ভাষা আমি খুঁজে পাই না। তাঁরা দ্বিমুখী কাজ করেছেন। বাহাত্তরে বলেছেন এক রকম আর আজ বলছেন এক রকম। যাঁদেরকে বলা হয় সুবিধাবাদী।’

সংসদ সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম বলেন, ‘বিচারপতিদের জিজ্ঞাসা করতে চাই রাষ্ট্রপতিকে ইমপিচ করা যাবে, প্রধানমন্ত্রীকে যাবে, স্পিকারকে যাবে, আপনি হলেন আইনের ঊর্ধ্বে; আপনাকে করা যাবে না। এ কোন ধরনের আপনাদের জাজমেন্ট? এসব জাজমেন্ট করে আপনারা কোথায় নিয়ে যাচ্ছেন? আপনারা বিভিন্ন জায়গায় রাজনৈতিক বক্তব্য দেন কেন? কী কারণে? অতীতে আপনাদের পূর্বসুরীরা একেক জায়গায় ক্রান্তিকালে এসে হাজির হয়েছেন অশুভ শক্তির সাথে, সে আশায়? ও আশা বাংলাদেশের আর হবে না। স্বাধীন বলতে কতটুকু স্বাধীন। পার্লামেন্টের চেয়ে বড় হাত হতে পারে না বিচার বিভাগের।’

বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটনমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন বলেন, ‘আজ খুব দুর্ভাগ্যজনকভাবে সংসদ ও বিচার বিভাগের মধ্যে একটি পার্থক্য সৃষ্টি করার জন্য এবং একটি বিভাজন তৈরি করার জন্য প্রচেষ্টা চলছে। এটি কোনো বৃহত্তর ষড়যন্ত্রের অংশ কি না- এটা আমাদের বিবেচনার মধ্যে নিয়ে আসতে হবে।’

তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু বলেন, ‘জনগণ যে ক্ষমতার অধিকারী, সে ক্ষমতার বলে আমি মনে করি আমি এমপি হিসেবে মন্ত্রী হিসেবে দায়বদ্ধ জনগণের কাছে। নির্বাহী বিভাগ দায়বদ্ধ, বিচারপতিরাও জনগণের কাছে দায়বদ্ধ থাকতে হবে। সেজন্যই বিচারপতিদের অবশ্যই এ রায় পুনর্বিবেচনা করে নতুন করে সিদ্ধান্ত দেওয়া উচিত বলে আমি মনে করি।’

জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য জিয়াউদ্দিন বাবলু বলেন, ‘যে পার্লামেন্টের সরকার অপসারণের ক্ষমতা আছে যে পার্লামেন্টের প্রেসিডেন্টকে অভিসংশন করার ক্ষমতা আছে যে পার্লামেন্টের স্পিকারকে নিয়োগ করা ও পরিবর্তন করার ক্ষমতা আছে সেই পার্লামেন্ট একটি সার্বভৌম পার্লামেন্ট।’

জাসদের সংসদ সদস্য মাইনুদ্দিন খান বাদল বলেন, ‘বিচার যেটা রায় দিয়েছেন, আপনাকে এডিকুয়েটলি প্রমাণ করতে হবে আমরা বেসিক স্ট্রাকচার চ্যালেঞ্জ করেছি। নয়তো এ ঘটনা আরো সামনের দিকে এগোবে। আর দ্বিতীয় কথা হলো আপনি নিজের হাতে আপনার বিচার যেভাবে নিয়েছেন এ রায় জনগণের কাছে কতটুকু গ্রহণযোগ্য হবে সেটাও ইতিহাসের কাছে ছেড়ে দিলাম।’

এ জাতীয় আরও খবর