সোমবার, ১০ই জুলাই, ২০১৭ ইং ২৬শে আষাঢ়, ১৪২৪ বঙ্গাব্দ

যেভাবে গ্রেফতার হলো সোহেল মাহফুজ

AmaderBrahmanbaria.COM
জুলাই ৮, ২০১৭

---

 

নিজস্ব প্রতিবেদক : আবদুস সবুর ওরফে সোহেল মাহফুজ ওরফে হাতকাটা মাহফুজ ওরফে নসরুল্লাহর রাজধানীর কল্যাণপুর ও হলি আর্টিজান ঘটনার সাথে সম্পৃক্তা ছিল তার। এছাড়াও হলি আর্টিজান হামলার পরিকল্পনা প্রণয়ণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিল সে। তাই দীর্ঘ দিন থেকে তাকে খুঁজছিল আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী। অবশেষে গতরাতে রাজশাহীর চাপাইনবাবগঞ্জ জেলা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

তবে তাকে কীভাবে গ্রেফতার করা হয়েছে, সেই অভিযানের বিষয়টি বিস্তারিত জানানোর জন্য ঢাকা মহানগর পুলিশের মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। সেখানে বক্তব্য রাখেন কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের প্রধান অতিরিক্ত মনিরুল ইসলাম। এ সময় তিনি অভিযানের সম্পূর্ণ বর্ণনা দেন।

তিনি জানান, গোয়েন্দা সংবাদের ভিত্তিতে সোহেল মাহফুজ ও তার সহযোগীদের অবস্থান নিশ্চিত করা হয়। পরে গতরাতে চাপাইনবাবগঞ্জ জেলার শিবগঞ্জ থানার কানসাট এলাকার চৌডাঙ্গা রোড পুস্কনি পাড় এলাকার ফজলু মিয়ার আমবাগানের টং ঘরের চারপাশ ঘেরাও করা হয়। রাত পৌনে ৩টার দিকে সোহেল মাহফুজকে গ্রেফতার করা হয়। এ সময় তার সহযোগী মোস্তফা কামাল ওরফে জামাল, হাফিজুর রহমান ওরফে হাসান ও জুয়েল ওরফে ইসমাইলকেও গ্রেফতার করা হয়।

তিনি জানান, কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট, চাপাইনবাবগঞ্জ, বগুড়া জেলা পুলিশ ও পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সের এলআইসি শাখার যৌথ অপারেশনে তাদের গ্রেফতার করা হয়েছে।

তিনি আরো জানান, গ্রেফতারে পর তাদের ঢাকায় আনা হয়েছে। চলছে জিজ্ঞাসাবাদ। হলি আর্টিজান হামলার ঘটনার দায়ের করা মামলার তদন্তকালে পাওয়া তথ্যের সঙ্গে সোহেল মাহফুজের কাছ থেকে পাওয়া তথ্যের ভেরিফাই করা হবে। এছাড়া আর কী কী নতুন তথ্য আছে, তা বের করার চেষ্টা করা হবে বলেও জানান তিনি।

প্রথমিক জিজ্ঞাসাবাদ শেষে রবিবার সোহেল মাহফুজকে আদালতে পাঠানো হবে জানিয়েছে তিনি বলেন, সেই সময় ১০ দিনের রিমান্ডে চাওয়া হবে।

কে সেই সোহেল মাহফুজ

গুলশান হামলার আরো আগে থেকেই জঙ্গি হিসেবে চিহ্নিত ছিল সোহেল মাহফুজ। এমন তথ্য জানিয়েছেন কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের প্রধান অতিরিক্ত মনিরুল ইসলাম।

তিনি আরো জানান, সোহেল মাহফুজ জেএমবির প্রতিষ্ঠাকালীন শুরা সদস্য। জেএমবির প্রতিষ্ঠাকাল থেকে সে সংগঠনটির সাথে জড়িত ছিল। ২০০৬ সালে সে ভারতে পালিয়ে যায়। এরপর ভারতে প্রবাসী নেতাদের নিয়ে জেএমবি গঠন করে। সে ভারতে প্রথম জেএমবি’র প্রতিষ্ঠাতা আমির হিসেবে দায়িত্ব পালন করে। ২০১৪ সাল পর্যন্ত সেখানেই ছিল।

পরবর্তীতে বাংলাদেশে অবস্থান করে সে অনেক অপারেশনে অংশ নেয়। কিন্তু সে কখনও গ্রেফতার হয়নি। সোহেল মাহফুজ গ্রেফতার এড়াতে ভারতে ছিল। ভারতে সে জঙ্গি সম্পৃক্ততার অভিযোগে মোস্ট ওয়ান্টেড হিসেবে সেদেশের পুলিশ তাকে ধরিয়ে দিতে ১০ লাখ রুপি ঘোষণা করেছিল।

মনিরুল জানান, নব্য জেএমবি গঠনের পর সে দেশে এসে নব্য জেএমবির অনুরোধে এতে যোগদান করে। পরবর্তী সময়ে সে হলি আর্টিজান হামলার পরিকল্পনা প্রণয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

এ জাতীয় আরও খবর