স্পোর্টস ডেস্ক :ভারসাম্যের অসামান্য নিদর্শন আর দুর্দান্ত শারীরিক কলাকৌশল দেখিয়ে রিও অলিম্পিকে রিদমিক জিমন্যাস্টিক্সের একক অল অ্যারাউন্ড ইভেন্টে স্বর্ণ জিতেছেন বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত রুশ জিমন্যাস্ট মার্গারিতা মামুন। তার এই সাফল্যে রিদমিক জিমন্যাস্টিক্সে দীর্ঘদিন আধিপত্য ধরে রাখা রাশিয়া এই ইভেন্টে টানা পঞ্চমবার সোনা জিতল।
এ পদক রাশিয়ার সাথে সাথে বাংলাদেশেরও বলে জানিয়েছেন ২০ বছর বয়সী মার্গারিতা মামুন। গেমসের পঞ্চদশ দিনে বাংলাদেশ সময় শনিবার গভীর রাতে স্বর্ণ জেতার পর সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘এই জয় দুই দেশের জন্য’। রিদমিক জিমন্যাস্টিক্সে রাশিয়ায় বেশ কয়েক বছর ধরে আলোড়ন তোলা মার্গারিতা ‘দ্য বেঙ্গল টাইগার’ হিসেবে পরিচিত। তার এই বিশেষ নামটি আন্তর্জাতিক জিমন্যাস্টিকস ফেডারেশনের অফিশিয়াল ওয়েবসাইটেও পাওয়া যায়, সঙ্গে উইকিপিডিয়াতেও।
বাংলাদেশী বাবা আর রুশ মার ঘরে জন্ম মার্গারিতা মামুনের। তার বাবা মেরিন প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ আল মামুন রাজশাহীর সন্তান। আশির দশকে তিনি তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়নে পড়াশুনা করতে গিয়ে সেখানেই স্থায়ী হন। মা সাবেক রিদমিক জিমন্যাস্ট আন্নার কাছ থেকেই দীক্ষা পেয়েছেন মস্কোয় জন্ম নেওয়া মার্গারিতা মামুন।
এই জয় দুই দেশের জন্য: মার্গারিতা মামুন
তার জয় বাংলাদেশেও উদযাপিত হচ্ছে শুনে তিনি খুবই খুবই আনন্দিত বলে জানিয়েছেন। বলেছেন, ‘আমি এটা জেনে খুব খুশি যে বাংলাদেশের অনেক ভক্ত আমাকে সমর্থন করছে। আমি বাংলায় ১ থেকে ১০ পর্যন্ত গুনতে পারি। যখন ছোটো ছিলাম, আমার বাবা আমাকে বাংলা শেখাতেন; কিন্তু আমি সব ভুলে গেছি।’
জুনিয়র পর্যায়ে একবার বাংলাদেশকে প্রতিনিধিত্ব করা বেছে নিয়েছিলেন মার্গারিতা মামুন। তিনি বলেন, ‘আমার দ্বৈত নাগরিকত্ব ছিল, তাই আমি জুনিয়র হিসেবে একটি প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশকে প্রতিনিধিত্ব করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। আমি সবসময় রাশিয়ায় থেকেছি আর অনুশীলনও করেছি এখানে। এরপর আমি রাশিয়ার প্রতিনিধিত্ব করি।’
তবে রিওতে শক্তি দিয়ে নয়, মার্গারিতা প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করেন হুপ, বল, ক্লাব ও রিবন এই চারটি রুটিনে অনবদ্য ক্রীড়াশৈলী দেখিয়ে। স্বর্ণ জিততে মামুন পেছনে ফেলেন ফেভারিট ও তিন বারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন স্বদেশি ইয়ানা কুদ্রিয়াভৎসেভাকে।
ফাইনালে প্রতিযোগিতার হুপও বলের রুটিন শেষে পয়েন্ট তালিকায় শীর্ষেই ছিলেন ইয়ানা। কিন্তু ক্লাব-পারফরম্যান্সের শেষ মুহূর্তে ভুল করে বসেন। ক্লাব উপরে ছুড়ে ফ্লোরে গড়িয়ে ধরতে পারেনি। বাড়িয়ে থাকা হাতকে ফাঁকি দিয়ে তা পড়ে যায় ফ্লোরে। এতে অনেকটাই এগিয়ে যান মার্গারিতা। সর্বমোট ৭৬.৪৮৩ স্কোর করে সেরা হন তিনি। শেষ পর্যন্ত ৭৫.৬০৮ স্কোর করে রুপা জেতেন ইয়ানা। ইউক্রেনের গানা রিজাতদিনোভা পেয়েছেন ব্রোঞ্জ।