আমার মেয়েকে নির্যাতন করে টয়লেটে ফেলে রাখে!
নিউজ ডেস্ক।। আমি গরিব মানুষ ভাই। অভাবের জন্য আমার মেয়ে সীমাকে(১৭) ঢাকায় টিকাটুলিতে ভাড়া থাকা কুমিল্লা উত্তর কালিয়াজুরির বাসিন্দা নাজমুল হাসান অপুর বাসায় কাজের জন্য দেই। সে আমার মেয়েকে শারিরীকভাবে নির্যাতন করে। আমি আমার মেয়েকে দেখতে চাইলে নানা অজুহাতে আমার মেয়েকে দেখতে দেয়নি। পরে আমি জোরাজুরি করলে আমাকে তাদের বাসার টয়লেটে নিয়ে যায়। আমি টয়লেটে গিয়ে দেখি আমার মেয়েকে টয়লেটে ফেলে রাখা হয়েছে। তার মুখ দিয়ে লালা পড়ছে।
পরে আমি আমার মেয়েকে নিয়ে কুমিল্লায় চলে আসি। আমার মেয়ে সীমা নির্যাতন সইতে না মেরে নির্বাক হয়ে গেছে। তার হাতে-পায়ে মুখমন্ডলে শুধু আঘাতের চিহ্ন। ভয়ে সে কথা বলতে পারছে না। কথাগুলো বলছিলেন নগরীর উত্তর কালিয়াজুরি এলাকায় ভাড়া থাকা কাঁচা তরকারী ব্যবসায়ী নুরুল ইসলাম। পরে এ ঘটনা যেন কাউকে না জানাই সে জন্য হুমকিও প্রদান করা হয়।
গত ৫ অক্টোবর এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার পর নির্যাতিত সীমার বাবা নাজমুল হাসান অপুর বাড়িতে গেলে অভিযুক্ত নাজমুল হাসান অপুর অভিভাবকরা এ বিষয়ে তাদের কিছু করার নেই বলে জানিয়ে দেয়। বর্তমানে নির্যাতিত শিশু সীমা কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। কমিল্লা মেডিকেল কলেজের চিকিৎসক জানিয়েছেন,সীমার উপর অনেক নির্যাতন করা হয়েছে। তার হাতেপায়ে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। ভয় পাওয়াতে সে নির্বাক হয়েছে। তার দীর্ঘ মেয়াদে চিকিৎসা প্রয়োজন।
এদিকে খবর পেয়ে কুমিল্লা জেলা প্রশাসক মো:আবুল ফজল মীর,পুলিশ সুপার মো:সৈয়দ নুরুল ইসলাম, সিটি কাউন্সিলর কাউছারা বেগম সুমিসহ জেলা ও পুলিশ প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা সীমাকে দেখতে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজে যান। তারা সীমার বাবাকে সার্বিক সহযোগিতা করাসহ অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ নেয়ার আশ্বাস দেন।
জেলা প্রশাসক মো: আবুল ফজল মীর জানান, তাৎক্ষণিকভাবে সীমাকে ও সীমার পরিবারকে জেলা প্রশাসন থেকে যেভাবে সহযোগিতা করা যায় সে রকম ব্যবস্থা নিয়েছি। সীমা সুস্থ হওয়ার পর তার উপর যারা অত্যাচার করেছে তাদের বিরুদ্ধে আইনী পদক্ষেপ নেয়া হবে। এদিকে এমন বর্বর ঘটনার শাস্তির দাবি জানিয়ে প্রশাসনের প্রতি দোষীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার জোর দাবি করেন কালিয়াজুরি এলাকার সাধারণ মানুষজন।
এ বিষয়ে কুমিল্লা পুলিশ সুপার মো:সৈয়দ নুরুল ইসলাম জানান, আমি হাসপাতালে সীমাকে দেখতে গিয়েছি। কুমিল্লা জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে সীমার পরিবাকে তাৎক্ষণিক আর্থিক সহযোগিতা করেছি। সীমার বাবাকে বলেছি আনুষ্ঠানিকভাবে অভিযোগ দেয়ার জন্য। আনুষ্ঠানিক অভিযোগ পেলে অবশ্যই দোষীদের বিরুদ্ধে দ্রুত আইনানুগ পদক্ষেপ নেয়া হবে।