গুলিতে পা হারানো লিমনের হাত ভেঙে দিয়েছে হামলাকারীরা
সাভার প্রতিনিধি : গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ও ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর বিরুদ্ধে মাছ ও ফল চুরির অভিযোগে আরেকটি মামলা দায়েরের পর বিশালায়তনের পিএইচএ ভবনটি নিজেদের দখলে নিয়েছে কটন টেক্সটাইল ক্রাফট লিমিটেড নামে একটি প্রতিষ্ঠান।এ ছাড়া গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ভেতরে ঢুকে নিজেদের জায়গা দাবি করে তাদের গাছ কাটতে দেখা গেছে।
এ সময় বাঁধা দেওয়ায় র্যাবের গুলিতে পা হারানো আলোচিত লিমন হোসেনের হাত ভেঙে দিয়েছে দখলকারীরা।আহত লিমন গণবিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের শিক্ষার্থী।
কলেজছাত্র অবস্থায় ঝালকাঠির সাতুরিয়া গ্রামের আলোচিত লিমন হোসেনকে ২০১১ সালের ২৩ মার্চ আটক করেছিল র্যাব।সে সময় গুলিতে তার একটি পা হারাতে হয়।
লিমন জানান, সকালে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ে যাচ্ছিলেন।পথে বহিরাগত লোকজনের ভিড় দেখেন।সেখানে তার সহপাঠীদের লাঞ্চিত হতে দেখেন।এ সময় প্রতিবাদ করতে গেলে তাকে মাটিতে ফেলে লাঠি দিয়ে বেধড়ক পিটিয়ে তার ডান হাত ভেঙ্গে ফেলে সন্ত্রাসীরা। এ সময় তার অন্য সহপাঠীদেরও মারধর করা হয়।পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে গণস্বাস্থ্য হাসপাতালে ভর্তি করে।
যোগাযোগ করা হলে গণবিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্টার দেলোয়ার হোসেন জানান, পিএইচএ ভবন অবরুদ্ধ হয়ে পড়েছে।রাস্তা কেটে অবৈধভাবে গনস্বাস্থ্যের জায়গা দখল করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, ‘মামলার বিষয়ে কি আর বলব।একটির পর একটি মামলা দায়ের করা হচ্ছে।একটি মামলায় জামিন নিতে না নিতেই আরেকটি মামলা হচ্ছে।’
এর আগে রাজধানীর এলিফ্যান্ট রোডের বাসিন্দা ও মির্জানগর এলাকার দ্য কটন টেক্সটাইল মিলের চেয়ারম্যান কাজী মহিবুর রব বাদী হয়ে আশুলিয়া থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।ওই মামলায় গণস্বাস্থ্যে কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ও ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, নির্বাহী পরিচালক ও কৃষকদলের কেন্দ্রীয় নেতা সাইফুল ইসলাম শিশিরকে ‘সন্ত্রাসী’ আখ্যা দিয়ে আরও অজ্ঞাত ৪০ জনকে আসামি করা হয়।
এদিকে আরেক মামলার বাদী স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা নাসির উদ্দিন পিএইচএ ভবনের প্রবেশ পথের ১৬ শতাংশ জায়গা নিজেদের দাবী করে সেটিও দখলে নিয়েছেন।তার পক্ষে পিএইচএ ভবনের প্রবেশের রাস্তা কাটতে দেখা গেছে বেশ কিছু শ্রমিকদের।তাদের সেখানকার সিকিউরিটি পোষ্টের ভবনটিও ভেঙ্গে ফেলতে দেখা গেছে।
এর আগে আশুলিয়া থানায় ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীসহ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির মামলা দায়ের করেন নাসির। বহুতল পিএইচএ ভবনটিতে রয়েছে বিশাল মিলনায়তন ও ডরমেটরি।যেখানে দেশি ও আন্তর্জাতিক বহু সম্মেলন নিয়মিত অনুষ্ঠিত হয়।
অন্যদিকে নিজের জমি দাবি করে গণস্বাস্থ্যের অভ্যন্তরে ১৬৬ শতাংশ জায়গা দখল করে সেখানে সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে দেন পূর্ব ডেন্ডাবর এলাকার আমিনুল ইসলাম। সেখানে ট্রাক বোঝাই করে মাটি ভরাট করতে দেখা যায় শ্রমিকদের।
বৃহস্পতিবার সর্বশেষ মামলাটি করেন রাজধানীর এলিফ্যান্ট রোডের বাসিন্দা ও স্থানীয় দ্য কটন টেক্সটাইল মিলের চেয়ারম্যান কাজী মহিবুর রব।মামলায় তিনি অভিযোগ করেন, তার জায়গায় অনধিকার প্রবেশ করে আসামিরা চাঁদা দাবি করেন এবং না পেয়ে পুকুরে থাকা মাছ চুরি করেন।এ নিয়ে জাফরুল্লাহর বিরুদ্ধে পর পর পাঁচটি মামলা দায়ের করা হলো আশুলিয়া থানায়।
আশুলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রিজাউল হক দীপু জানান, মামলার আসামিদের বিষয়ে খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে।তদন্ত চলছে।
এর আগে আশুলিয়ায় জমি দখলের চেষ্টা, ভাংচুর, চুরির অভিযোগে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ও ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহর বিরুদ্ধে আশুলিয়া থানায় পৃথক চারটি মামলা দায়ের করা হয়।অবশ্য উচ্চ আদালত থেকে এই চার মামলায় আগাম জামিন নেন তিনি।