ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় প্রবাসী জাকির গ্রীস্মকালীন টমেটো চাষ করে স্বাভলম্বি
বিশেষ প্রতিনিধি : ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় গ্রীস্মকালিন সবজি চাষ করে স্বাভলম্বি হচ্ছেন কৃষকর। জেলার সদর উপজেলার মজলিশপুরের নিশ্চিন্তপুর এলাকার এমনি এক গ্রীষ্মকালীন সবজি টমেটোর বাগান করেছেন জাকির হোসেন।এক সময় জীবিকার তাগিদে তিনি চলে গিয়েছিলেন সৌদি আরবে। সেখানে গিয়ে পান কৃষি শ্রমিকের কাজ। ৮বছর কৃষি শ্রমিক হিসেবে চাকুরি করেন সৌদি আরবে। সে সময় ভাবেন সৌদির মাটি থেকে বাংলাদেশের মাটি অনেক উর্বর ও বিভিন্ন সবজি চাষ উপযোগি। তাই এখানে যে পরিশ্রম তা যদি দেশে করা যায় তাহলে নিজেও স্বাভলম্বি হওয়া যাবে অপরদিকে বিদেশগামী বেকার লোকদেরও দেশেই কর্মসংস্থান করা যাবে।
এই উৎসাহ নিয়ে ২০১১ সাল থেকে জাকির ২লক্ষ টাকা পুজিতে এগ্রিকালচার ফার্ম করে গ্রীস্মকালীন সবজির চাষ শুরু করেন। চাষ শুরু করেন টমেটো, লাউ, ঢেরস, কাকড়ল, চিচিঙ্গা, মিষ্টি কুমরা, করলা, শীতকালে সিম, ফুল কপি,বাধাকপি, গাজর, মুলা সহ নানান সবজি। তার ফার্মে মূলত বেশি উৎপাদন হয়ে থাকে টমেটো। প্রথমে লোকসান হলেও এখন ২২বিঘা জমিতে সবজির চাষ করে মাসিক যে আয় হয় সে মুনাফা থেকে বর্তমানে মূলধন ১৫ লক্ষ টাকা দাঁড়িয়েছে । প্রতিদিন ২৫/৩০জন শ্রমিক কাজ করছেন। তারাও পরিবার পরিজন নিয়ে খুশি। এখন প্রতিদিন ৫মন টমেটো, ২/ ৩ শত লাউ সহ অন্যান্য সবজি বিক্রী হলেও শীতের সবজি উৎপাদন হলে তখন আয় আরও বাড়বে।কৃষি বিভাগের লোকজন তাকে বিষমুক্ত সবজি উৎপাদনে নানা পরামর্শ দিয়ে সহযোগিতা করতে এগিয়ে এসেছেন। তার প্রকল্পটি দেখে এলাকার অন্যরাও উৎসাহিত হচ্ছেন। সহায়তা হিসেবে এবছরই কৃষি বিভাগ ৩০ হাজার টাকার কপির বিজ চারা প্রদান করেছে। সম্প্রতি চীনা একটি প্রতিনিধি দল প্রকল্পটি পরিদর্শন করে মুগ্ধ হয়ে তাকে চীন সফরের আমন্ত্রন জানিয়েছেন।
কৃষক জাকির হোসেন জানান, সৌদি আরবে থাকাকালীন আমার ভাবনা ছিল দেশে এসে কৃষি খামার করব। আমার বিশ্বাস ছিল, যদি সৌদির বালি মাটিতে কাজ করে আমরা সবজি উৎপাদন করতে পারি তাহলে কেন বাংলাদেশের উর্বর মাটিতে সবজি উৎপাদন করতে পারব না। এই ভাবনা থেকে দেশে ফিরে কৃষি খামার করেছি। উৎপাদিত বিষমুক্ত সবজির কদর বেশী থাকায় স্থানীয় লোকজন ছাড়াও ঢাকা সহ দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে অর্ডার পাচ্ছি। খামারে কর্মরত শ্রমিকরা বলেন, আমরা এখানে কাজ করে ভাল আছি। মাসে ১০/১২হাজার টাকা বেতন পায়। পরিবার নিয়ে ভাল আছি।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলা কৃষি অফিসার আনোয়ার হোসেন জানান, বিষ মুক্ত সবজি উৎপাদনে প্রকল্পটিতে সহায়তা করা হচ্ছে। কৃষি বিভাগ থেকে জাকির হোসেনের প্রকল্পের জন্য পরামর্শ ছাড়াও বীজ সার সহ নানাভাবে আমরা সহায়তা করছি। জাকির হোসেনের মতো অন্যরাও এমনি প্রকল্প নিয়ে কাজ করে স্বাভলম্বি হবেন, কর্মসংসংস্থান সৃষ্টি করে দেশকে স্বনির্ভর করতে এগিয়ে আসবেন এমনটিই প্রত্যাশা স্থানীয়দের।