মইনুল হোসেনকে ‘রাজনৈতিকভাবে চরিত্রহীন’ বললেন মুন্নি সাহা
সাংবাদিক মাসুদা ভাট্টিকে ‘চরিত্রহীন’ বলার প্রতিবাদে আয়োজিত সভায় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ব্যারিস্টার মইনুল হোসেনকে ‘রাজনৈতিকভাবে চরিত্রহীন’ বলে আখ্যা দিয়েছেন সাংবাদিক মুন্নি সাহা। শুধু তাই নয়, রাজনৈতিকভাবে চরিত্রহীনদের সাবধান থাকতে বলেছেন তিনি।
বৃহস্পতিবার বিকেলে জাতীয় প্রেসক্লাবের কনফারেন্স লাউঞ্জে আয়োজিত প্রতিবাদ সভায় এসব কথা বলেন এটিএন নিউজের প্রধান নির্বাহী সম্পাদক মুন্নি সাহা।
মুন্নি সাহা বলেন, আমরা আজকের এই প্রতিবাদটিকে কোট আন কোট নারী পারসপেকটিভে দেখতে চাই না। এটি একটি রাজনৈতিক দৃষ্টিকোন থেকে আমার বক্তব্যটি বলতে চাই। আপনার যখন আমাদের কাছে হেরে যাবেন। তখন শেষ অস্ত্র নারী এবং চরিত্র আছে কি না—সেগুলো বলতে থাকবেন। আর আমরা আমাদের কাজ করতেই থাকব।
মুন্নি সাহা বলেন, ব্যারিস্টার মইনুল হোসেন এবং আপনারা যারা নানান সময়ে রাজনৈতিকভাবে কলঙ্কিত ও রাজনৈতিকভাবে চরিত্রহীন। আপনারা একটু সাবধান থাকবেন। আজকের এই প্রতিবাদ সকল রাজনৈতিক কলঙ্কিত ও চরিত্রহীনদের প্রতি আমাদের সকলের প্রতিবাদ।
এটিএন নিউজের প্রধান নির্বাহী সম্পাদক বলেন, আমরা এই রাজনৈতিক চরিত্রটা একটু ঠিক করতে চাই। বাংলাদেশের পক্ষে যারা কথা বলবেন, বাংলাদেশে বসে যারা রাজনীতি করবেন, বাংলাদেশের পক্ষে যারা থাকবেন। সেটায় আমাদের ফিল্টার, সেটাই আমাদের একক। এই এককের মাপকাঠি নিয়ে আপনারা রাজনীতি করতে আসবেন। সোজা-সাপটা কথা আমাদের সকলের তরফ থেকে।
মুন্নি সাহা বলেন, শুধুমাত্র নারী সাংবাদিক আমরা এক হইনি, বাংলাদেশের সকল স্বাধীনতাকামী এবং মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের মানুষের এক স্বর, এক গলা—সবাই আজকে অন্তত ব্যারিস্টার মইনুল হোসেনের এই ধৃষ্টতার প্রতিবাদ করতে গিয়ে এটা আরও জোরে উচ্চারণ করতে চাই।
ব্যারিস্টার মইনুল হোসেনসহ অন্যদের উদ্দেশে মুন্নি সাহা বলেন, যারা রাজনীতি করবেন, যারা জাতীয় ঐক্য করছেন এবং নির্বাচনের কথা বলছেন, তারা আজকের এই প্রতিবাদ মাথায় রেখে মাঠে নামবেন আশা করি।
এর আগে গত মঙ্গলবার রাতে বেসরকারি টেলিভিশন একাত্তর টিভির এক লাইভ আলোচনা অনুষ্ঠানে সাংবাদিক মাসুদা ভাট্টিকে ‘চরিত্রহীন’ বলে আখ্যায়িত করেন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ব্যারিস্টার মইনুল।
ব্যারিস্টার মইনুল হোসেনের ওই মন্তব্যে মাসুদা ভাট্টি ভয় পেয়েছেন কি না—আলোচনায় এ প্রসঙ্গে মুন্নি সাহা বলেন, বাংলাদেশের মানুষকে এত বোকা ভাবলে চলবে না। যে এখনো এই ডিজিটাল যুগে উনি ভয় পেয়ে যাবেন। মাসুদা ভাট্টিকে হঠাৎ করে এক মুহূর্তে নারী মনে হয় এবং নারী হিসেবে তার চরিত্র নিয়ে হঠাৎ করে বাক্য উচ্চারণ করলেন। আমার মনে হয়, তিনি অনেক দূরে বাস করছেন। আমাদের এই জমানায় তিনি আসলে নাই। কিন্তু তার (মইনুল হোসেন) জামানা থেকে তিনি কী কী করে এসছেন?
ব্যারিস্টার মইনুল হোসেন ব্যক্তিগতভাবে মাসুদা ভাট্টির কাছে ক্ষমা চাইলেও সেই ক্ষমা যথেষ্ট নয় বলে প্রতিবাদ সভায় উল্লেখ করেন নারী সাংবাদিক কেন্দ্রের সভাপতি নাসিমুন আরা হক মিনু। সেখানে তিনি নারীদের পক্ষ থেকে দুটি দাবি তুলে ধরেন। এই দাবি দ্রুততম সময়ের মধ্যে না মানলে আইনের আশ্রয়ের নেওয়ার হুঁশিয়ারি জানান তিনি। দাবিগুলো হলো, ব্যারিস্টার মইনুল হোসেনকে প্রকাশ্যে তার অপরাধ স্বীকারপূর্বক নিঃশর্ত ক্ষমা চাইতে হবে এবং ভবিষ্যতেও এমন ব্যক্তি আক্রমণ থেকে বিরত থাকবেন।
প্রতিবাদ সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন নারী সাংবাদিক কেন্দ্রের সাধারণ সম্পাদক পারভীন সুলতানা ঝুমা, বাংলাদেশ নারী সাংবাদিক সমিতির সভাপতি নাছিমা আক্তার সোমা, সাধারণ সম্পাদক আঞ্জুমান আরা শিল্পী। সাংবাদিকদের মধ্যে আরও উপস্থিত ছিলেন মিথিলা ফারজানা, নাসিমা খান মন্টি, শাহনাজ মুন্নী, ফারজানা রূপা, সুপ্রীতি ধর, আঙ্গুর নাহার মন্টি, ফারহানা মিলি, নাদিরা কিরণ, মুনমুন শারমিন শামস, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সহসভাপতি সৈয়দ ইশতিয়াক রেজা প্রমুখ।
সূত্র: বাংলাদেশ জার্নাল