ঐক্যফ্রন্ট জিতলে প্রধানমন্ত্রী কে, জানতে চান কূটনীতিকরা
নিজস্ব প্রতিবেদক : একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঐক্যফ্রন্ট জয়ী হলে পরবর্তী সরকারের প্রধানমন্ত্রী কে হবেন তা জানতে চেয়েছেন বিদেশী কূটনীতিকরা।
বৃহস্পতিবার বিকালে জোটের নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় অনুষ্ঠানের প্রশ্নোত্তরপর্বে ড. কামাল হোসেনের কাছে এ প্রশ্ন করেন যুক্তরাষ্ট্রের একজন কর্মকর্তা। জবাবে কামাল হোসেন জানান, নির্বাচনের পর প্রধানমন্ত্রী কে হবেন সেটা নির্বাচিত সংসদ ঠিক করবে।
বৃহস্পতিবার বিকাল ৩টার দিকে রাজধানীর বনানীর হোটেল লেকশোরে ঢাকায় নিযুক্ত বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকদের সঙ্গে বৈঠকে বসে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। এরপর জোটের দায়িত্বশীল কয়েকজন নেতার সঙ্গে কথা বলে এ খবর জানা গেছে।
জোটের অন্যতম প্রধান নেতা ড. কামাল হোসেন ফ্রন্টের সাত দফা ও ১১ দফা লক্ষ্য কূটনীতিকদের উদ্দেশ্যে পাঠ করেন। এরপর বর্তমান গণতন্ত্র, সরকার, নির্বাচন প্রসঙ্গে কথা বলেন। অনুষ্ঠানের শুরুতেই ভূমিকা বক্তব্য দেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
বৈঠকসূত্র জানায়, ড. কামাল হোসেন বক্তব্য দেওয়ার পরই কয়েকটি দেশের প্রতিনিধিরা প্রশ্ন করতে শুরু করেন। ড. কামাল সব প্রশ্নের উত্তর দেন। যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে জানতে চাওয়া হয়, নির্বাচনে বিজয়ী হলে ঐক্যফ্রন্টের প্রধানমন্ত্রী কে হবেন? উত্তরে ড. কামাল বলেন, ‘এটা সংসদের বিষয়। নির্বাচিত সংসদই ঠিক করবে প্রধানমন্ত্রী কে হবেন।’
এরপর আবার প্রশ্ন করা হয়, বর্তমানে ক্ষমতাসীন দলের প্রধান শেখ হাসিনার বিপরীতে লিডার (নেতা) কে হবেন? বিশেষ করে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াও কারাগারে আছেন। সেক্ষেত্রে নেতৃত্ব সংকট কীভাবে পূরণ হবে? জবাবে ড. কামাল হোসেন বলেন, ‘এখানে একক নেতৃত্ব নেই। যৌথ নেতৃত্বের মধ্য দিয়ে সবকিছু পরিচালিত হচ্ছে।’
কূটনীতিকরা বিএনপি জোটে জামায়াত থাকা এবং বি চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন যুক্তফ্রন্টের অবস্থানের বিষয়েও জানতে চেয়েছেন বলে জানা গেছে।
এদিকে খালেদা জিয়া কারাগারে থাকলে ঐক্যফ্রন্ট নির্বাচনে যাবে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে কামাল কূটনীতিকদের বলেন, ‘দেশে বর্তমানে সুষ্ঠু নির্বাচনের কোনো পরিবেশ নেই। সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি হলে তারা অবশ্যই নির্বাচনে যাবেন।’
বৈঠক শেষে আনুষ্ঠানিকভাবে ব্রিফিং করেনি জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট।
তবে বৈঠক থেকে বেরিয়ে সাংবাদিকের এক প্রশ্নের জবাবে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বলেন, ‘কূটনীতিকরা খুব উৎসাহী। তারা সবাই দেখতে চায় বাংলাদেশে সকলের অংশগ্রহণে নির্বাচন, সুষ্ঠু নির্বাচন।’
কূটনীতিকদের মধ্যে বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন কানাডা, জার্মানি, ফ্রান্স, জাপান, যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়া, নরওয়ে, সুইজারল্যান্ড, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, চীন, কাতার, ভিয়েতনাম, কোরিয়া, পাকিস্তান, সৌদি আরব, তুরস্কসহ প্রায় ২৫টিরও বেশি দেশের রাষ্ট্রদূত/হাইকমিশনার ও তাদের প্রতিনিধিরা। তবে বৈঠকে অংশ নেননি ভারতের হাইকমিশনার।
জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নেতাদের মধ্যে বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের আহ্বায়ক ড. কামাল হোসেন, ব্যারিস্টার মঈনুল হোসেন, বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, ব্যারিস্টার জমির উদ্দীন সরকার, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ড. আব্দুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, বিএনপি চেয়ারপারসনের পররাষ্ট্র বিষয়ক উপদেষ্টা সাবিহ উদ্দিন আহমদ, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ইনাম আহমদ চৌধুরী, ভাইস চেয়ারম্যান আলতাফ হোসেন চৌধুরী, সেলিমা রহমান, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জেএসডি সভাপতি আ স ম আব্দুর রব, জেএসডি’র সহ-সভাপতি তানিয়া রব, সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মালেক রতন, নাগরিক ঐক্যের মাহমুদুর রহমান মান্না, জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার সুলতান মোহাম্মদ মনসুর, গণফোরামের সুব্রত রায় চৌধুরী, মোস্তফা মন্টু, বিএনপির ব্যারিস্টার শাহজাহান ওমর, ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা প্রমুখ।