পরবর্তী জীবনেও বাচ্চুকেই স্বামী হিসেবে চাই
এ বছরের ১৬ আগস্ট নিজের শেষ জন্মদিন উদযাপন করেছিলেন আইয়ুব বাচ্চু। তার ঠিক এক বছর আগে দ্য ডেইলি স্টারকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি জীবন-মৃত্যু নিয়ে নিজের উপলব্ধির কথা বলেছিলেন।
বলেছিলেন, ‘চোখ মেললেই জীবন। চোখ বন্ধ করলেই আর জীবন নেই। জীবনের রংটাই এরকম। আমাদের সবার ক্ষেত্রে বিষয়টি একইরকম। জীবন সে তো তার মতো করেই চলবে। কাউকে বলে কয়ে চলবে না। আমরা কেউ জানি না ঠিক পর মুহূর্তে কী হতে যাচ্ছে।
২০১৬ সালে একটি দৈনিক পত্রিকারয় দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, আমার সন্তানেরা ছোটবেলা থেকে আমার মুখে একটা গল্প শুনে অভ্যস্ত। এই ঢাকা শহরে ১৯৮৩ সালের শেষের দিকে মাত্র ৬০০ টাকা নিয়ে এসেছিলাম। উঠেছিলাম এলিফ্যান্ট রোডের একটি হোটেলে।
আইয়ুব বাচ্চুর ছেলে আহনাফ তাজোয়ার আইয়ুব। শৈশব থেকে বাবার পথ ধরে গিটার চর্চা করে আসছেন। বাবা তাকে ডাকতেন তাজো নামে।
নিজের ছেলেকে নিয়ে আইয়ুব বাচ্চু বলেছিলেন, ‘আমি চেয়েছি আহনাফের সংগীতজীবনের শুরুটা হোক একটা ভালো জায়গায়। ওর শুরুটা হোক আপনাদের নিয়ে, পুরো দেশকে নিয়ে।
আইয়ুব বাচ্চুর আরো একটি কন্যা সন্তান রয়েছেন, তার নাম ফায়রুজ সাইফরা আইয়ুব। বাচ্চুর স্ত্রীর নাম ফেরদৌস আইয়ুব চন্দনা। বাচ্চু সব সময় পরিবারকে তার ব্যস্ত জীবনের বাইরে রেখেছেন। যে কারনে তার পরিবারের বিষয়ে খুব একটা জানেনা সাধারণ মানুষ।
আইয়ুব বাচ্চু তার পরিবারের সঙ্গে ব্যয় করার সময়কে ক্রমবর্ধমানভাবে মূল্যবান বলে মনে করতেন। তিনি বিশ্বব্যাপী লক্ষ লক্ষ বাংলাদেশী মানুষের কাছে একটি রকস্টার হতে পারেন, তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই তিনি ছিলেন আদর্শ পিতার মতো।
তিনি তার সন্তানদের নিয়ে ছিলেন চিন্তিত, তারা নিরাপদে পৌঁছেছে কিনা বা তারা সঠিকভাবে খাওয়া-ধাওয়া করছে কিনা তা নিয়েও ছিলো বাচ্চুর ভাবনা।
আইয়ুব বাচ্চুর স্ত্রী ফেরদৌস আইয়ুব চন্দনা, যিনি তার সংগ্রামের বছরগুলিতে একজন উচ্চাকাঙ্ক্ষী সঙ্গীতজ্ঞ হিসাবে প্রেমে পড়েছিলেন। ২০১২ সালে চন্দনা এক সাক্ষাতকারে বলেছিলেন-তিনি একজন বিস্ময়কর বাবা এবং যত্নশীল স্বামী।
“এমনকি তার অবিশ্বাস্য ব্যস্ত সময় সূচির সাথেও, তিনি আমাদের জন্য বিশেষ করে তার দুই সন্তানের জন্য যথাসাধ্য করার চেষ্টা করেন। আমরা বুঝতে পেরেছি যে তার শ্রোতাদের প্রতি তার একটি উপহার এবং দায়িত্ব রয়েছে।
চন্দনা বলেছেন, যদি পরবর্তী জীবন থাকে, যেখানে আমি আমার স্বামী হিসাবে কাউকে বেছে নিতে পারি, আমি তাকে প্রতিবার পছন্দ করতাম।
উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবারের (১৮ অক্টোবর) একেবারেই নিরবে নিরবে চলে গেলেন ব্যান্ড লিজেন্ড আইয়ুব বাচ্চু। সকাল ১০টার কিছু পরে রাজধানীর পান্হপথের স্কয়ার হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন এই তারকা।