সম্পত্তির লোভে সন্তানের কাণ্ড
ডেস্ক রিপোর্ট : ‘ছাওয়াক (ছেলে) পেটোত থোওয়াই হইছে পাপ। আগত জানলে পেটোতই মারি ফিলতাম। সম্পত্তির লোভত ছাওয়া কেমন করি মাক মারি ফেলবার চায়।’ কথাগুলো রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ১৬ নম্বর ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন ফরিদা বেগমের। গতকাল শনিবার সকালে এ প্রতিবেদককে এভাবেই তিনি দুঃখের কথা প্রকাশ করেন।
হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, ফরিদা বেগমের গোটা শরীরে রয়েছে আঘাতের চিহ্ন। চোখ-মুখ-গলা ফুলে গেছে। মুখের দুটি দাঁত ভেঙে গেছে। প্রচÐ ব্যাথায় ঠিকমতো কথা বলতে পারছিলেন না। তার পরও অনেক কষ্ট করে একথাগুলো বললেন। এ অবস্থা করেছেন তারই পেটের সন্তান মাসুদ। চাহিদা অনুযায়ী টাকা না পেয়ে তিনি তার মাকে হত্যার চেষ্টা করেন। ঘটনাটি ঘটে গত বুধবার গভীর রাতে নীলফামারীর জলঢাকা উপজেলার গোলনা ইউনিয়নের কালিগঞ্জ ওয়াপদাপাড়া এলাকায়। আশঙ্কাজনক অবস্থায় ফরিদা বেগমকে রাতেই রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
ফরিদা বেগমের স্বজনরা জানান, ওই এলাকার সাবেক সেনাসদস্য মকবুল হোসেন প্রায় চার বছর আগে মারা যান। মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী ফরিদা বেগম (৬০), দুই ছেলে ও দুই মেয়ে রেখে যান। বিয়ে হওয়ার পর দুই ছেলে আলাদা হয়ে যান। বাড়িতে একাই থাকতেন ফরিদা বেগম। তার নামে বাড়িসহ কিছু জমি আছে। সেগুলো আয়ত্তে নিতে প্রায়ই মায়ের ওপর নির্যাতন চালাতেন ছেলে ফরিদুল ইসলাম মাসুদ (২৮)। বুধবার তিনি তার মায়ের কাছে এক লাখ টাকা দাবি করেন। তা না পেয়ে গভীর রাতে তিনি মাকে মারধর ও শ্বাসরোধে হত্যার চেষ্টা করেন।
মৃত সেনাসদস্যের ভাই আবদুল লতিফ বলেন, ‘বুধবার রাত প্রায় ১টার দিকে মোবাইলে একটি কল আসে। এতে ফরিদা ভাবীর কণ্ঠÑ ‘ভাই আমাকে বাঁচাও।’ বিপদ ভেবে পরিবারের সবাই মিলে গিয়ে দেখি, ভাবী বাড়ির আঙ্গিনায় প্রায় জ্ঞানহীন ও বিবস্ত্র। রাতেই তাকে রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করাই।
জলঢাকা থানার ওসি (তদন্ত) বিশ্বদেব রায় জানান, ছেলে মাকে মারধর করে দুটি দাঁত ভেঙে দিয়েছে বলে খবর পেয়েছি। গতকাল শনিবার সকালে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। সরেজমিন পরির্দশন করে আসার পর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানান তিনি । উৎসঃ আমাদের সময়