বাড়ছে স্রোত, ভাঙন থামছে না নড়িয়ায়
শরীয়তপুর প্রতিনিধি: পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় স্রোতও বেড়েছে। এ কারণে পদ্মায় আবার ভাঙন দেখা দিয়েছে। দুইদিনে ৪টি ভবন নদী গর্ভে বিলিন হয়েছে। বৃহস্পতিবার পৌরসভার পূর্বনড়িয়া এলাকায় একটি তিনতলা ভবন, দুটি একতলা ভবন পদ্মায় ধসে পড়েছে। শুক্রবার পদ্মা নদীতে ৩০ সেন্টিমিটার পানি বৃদ্ধি পেয়েছে।
বুধবার ও শুক্রবার নড়িয়ার কেদারপুর, উত্তর কেদারপুর, শুভগ্রাম, বাঁশতলা ও নড়িয়া পৌরসভার ৪ নং ওয়ার্ডের পূর্ব নড়িয়া গ্রামে ভাঙন হয়েছে। তিনটি গ্রামের ৪৫টি পরিবার তাদের বসতবাড়ির জিনিসপত্র সরিয়ে নিয়েছেন। ওই তিনটি গ্রামের মানুষের মধ্যে ভাঙন আতঙ্ক রয়েছে। অনেক পরিবার তাদের বসতঘর সরিয়ে নিচ্ছেন।
ভাঙনরোধে নড়িয়া এলাকায় পদ্মা নদীর চর খননের উদ্যোগ নিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। স্রোতের কারণে খনন কাজ শুরু করা যায়নি। আবহাওয়া প্রতিকুলে থাকায় পদ্মা নদীর জরিপ কাজ ব্যহত হচ্ছে। অনুকূলে আসলে জরিপের কাজ শুরু করার কথা জানায় পানি উন্নয়ন বোর্ড।
৯ কি.মি. এলাকায় ৪০টি পয়েন্টে জরিপ কাজ করবে তারা। ইতিমধ্যে ১৬ টি পয়েন্টে জরিপের কাজ সম্পূর্ণ করা হয়েছে। ড্রেজার মেসিন নড়িয়া থেকে মুলফৎগঞ্জে পৌঁছানো হয়েছে।
বৃহস্পতিবার বিকালে নড়িয়ার মুলফৎগঞ্জ বাজারে পানি উন্নয়ন বোর্ডের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আব্দুল হেকিম খনন কাজের ঠিকাদার ও নদীর জরিপকারী দলের সাথে সভা করেছেন। পাউবোর শরীয়তপুর কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী প্রকাশ কৃষ্ণ সরকার বলেন, পদ্মা নদীতে পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। শুক্রবার সুরেশ্বর পয়েন্টে পদ্মা নদীর পানি ৪ দশমিক ৭০ মিটার প্রবাহিত হয়েছে। পানি বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে স্রোত বেড়েছে। প্রচন্ড স্রোতের কারণে খনন কাজ শুরু করা যাচ্ছে না।
শুক্রবার পূর্বনড়িয়া, বাঁশতলা ও কেদারপুর দাসপাড়া গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, মানুষ তাদের বসতঘরের জিনিষপত্র সরিয়ে নিচ্ছে। বাড়ির গাছ কেটে নিচ্ছে। মানুষের মধ্যে ভাঙন আতঙ্ক রয়েছে।
শুক্রবার সরকারিভাবে ভাঙনকবলিত ১৩শ’ ৭৫ জনকে ৩০ কেজি করে চাল ত্রাণ সহায়তা দেওয়া হয়েছে। সরকারি বেসরকারি পর্যায়ে ত্রাণ তৎপরতা চালানো হচ্ছে।
নড়িয়া শহীদ মিনার চত্বরে বেগম আশ্রাফুন্নেসা ফাউন্ডেশন উদ্যোগে আজ শুক্রবার ভাঙ্গন কবলিত পরিবারের মধ্যে ত্রাণ সহায়তা দেওয়া হয়েছে। এপর্যন্ত ভাঙনকবলিত ৪ হাজার পরিবারকে ত্রাণ সহায়তা দেওয়া হয়েছে। এসময় বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এ কে এম এনামুল হক শামীম, জেলা প্রশাসক কাজী আবু তাহের, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সানজিদা ইসমিন, নড়িয়ার মেয়র শফিকুল ইসলাম বাবু উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে তিনটি বড় ড্রেজার একসাথে ভাঙ্গন রোধে নদী খননের কথাছিল আরো ৫ দিন আগে থেকে। পাচ দিন আগে একটি জাহাজ এসে পৌঁছলেও সংশ্লিষ্ট এলাকায় খনন কাজ শরু করতে পারেনি। পানি উন্নয়ন বোর্ড ক্রিয়েটিভ সার্ভে নামে একটি সংস্থার মাধ্যমে গত তিন দিন থেকে ভাঙনকবলিত এলাকার ৪০টি পয়েন্টে জরিপ কাজ পরিচালনা করছে। শুক্রবার বিকেল পর্যন্ত তারা ১৬টি পয়েন্টে জরিপ শেষ করেছে। পুরো কাজ শেষ হতে সময় লাগবে আরো দুইদিন। এরপর প্রতিবেদন দাখিলের পর পাউবো খননের কাজ শুরু করবে বলে জানিয়েছে জরিপ সংস্থা।