শুক্রবার, ১৯শে অক্টোবর, ২০১৮ ইং ৪ঠা কার্তিক, ১৪২৫ বঙ্গাব্দ

গোপনে দ্বিতীয় বিয়ে পুলিশ সদস্যের, অতঃপর…

গোপনে দ্বিতীয় বিয়ে করায় প্রথম স্ত্রীর অপমান ও নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে ভাঙ্গা হাইওয়ে থানার এক পুলিশ সদস্য বিষপানে আত্মহত্যার চেষ্টা করার খবর পাওয়া গেছে।

মঙ্গলবার বিকালে ভাঙ্গা হাইওয়ে থানার সামনে এসে বিষপান করেন পুলিশ কনস্টেবল আব্দুল হক (৫৫)। তিনি নোয়াখালী সদর জেলায় লক্ষ্মী নারায়ণপুর গ্রামের মৃত জালাল আহমেদের ছেলে।

পরে তাকে উদ্ধার করে গোপনে ভাঙ্গা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে তার অবস্থা অবনতি হলে রাতে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়।

পুলিশ ও পারিবারিক সূত্র জানায়, পুলিশ সদস্য আব্দুল হক একই জেলার মনোয়ারা বেগম নামে একজনকে প্রায় ২৫ বছর আগে বিয়ে করেন। ওই সংসারে তার এক মেয়ে লিজা ও ছেলে আরমান কলেজে লেখাপড়া করে।

চাকরির সুবাদে প্রায় ২ বছর ধরে ফরিদপুরের ভাঙ্গা হাইওয়ে থানায় যোগদান করেন। এখানে রুনা লাইলা নামে এক নারীর সঙ্গে পরিচয় তার। পরে ৩-৪ মাস আগে গোপনে বিয়ে করেন। পরে দ্বিতীয় স্ত্রীকে নিয়ে পুলিশ সদস্য আব্দুল হক কাপুড়িয়া সদরদী এলাকায় ভাড়া বাসায় সংসার করে আসছেন।

আব্দুল হক গত ২১ আগস্ট কোরবানি ঈদের আগের দিন সকালে ছুটিতে ঈদ করতে নোয়াখালী গ্রামের বাড়িতে যান। আব্দুল হকের দ্বিতীয় বিয়ের বিষয়টি তার প্রথম স্ত্রী জেনে ফেলায় সেদিন স্বামীকে ঘরে ঢুকতে না দিয়ে সারা রাত বাইরে রেখে দেন।

ঈদের দিন সকালে ছেলেমেয়ে ও স্ত্রী তাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন। এভাবে ৭-৮ দিন ছুটি কাটিয়ে নোয়াখালী থেকে কর্মস্থল ভাঙ্গায় চলে আসেন পুলিশ সদস্য আব্দুল হক।

এরপর আব্দুল হক বাসায় নীরবে কাঁদতে দেখে দ্বিতীয় স্ত্রী রুনা লায়লা জিজ্ঞাসা করলে তার কাছে বিস্তারিত ঘটনাটি জানান।

এরপর থেকে আব্দুল হককে তার প্রথম স্ত্রী প্রায়ই মোবাইলে গালিগালাজ করতে থাকেন। তারপরও না জানিয়ে হঠাৎ প্রথম স্ত্রী ছেলেকে সঙ্গে নিয়ে নোয়াখালী থেকে মঙ্গলবার দুপুরে ভাঙ্গায় চলে এসে প্রকাশ্যে স্বামী আব্দুল হককে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ ও অপমান করেন।

স্ত্রীর অপমান সহ্য করতে না পেরে আব্দুল হক থানার সামনে এসে বিষপান করেন। পুলিশ সদস্যরা ও এলাকার লোকজন মুমূর্ষু অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে ভাঙ্গা হাসপাতালে ভর্তি করে।

অবস্থা অবনতি হলে রাতে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। এ ঘটনায় হাইওয়ে থানাসহ এলাকায় তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। এ ব্যাপারে ভাঙ্গা হাইওয়ে থানার ওসি সেখ মাহফুজার রহমান জানান, পারিবারিক কারণে আব্দুল হক বিষপানে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। বর্তমানে হাসপাতালে ভর্তি আছেন।

ফরিদপুর হাইওয়ে সহকারী পুলিশ সুপার মাহফুজুর রহমান জানান, ওই ঘটনার কারণ জানিয়ে একটি প্রতিবেদন দেয়ার জন্য আমি ভাঙ্গা হাইওয়ের ওসিকে বলেছি। রিপোর্ট পেলে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।