এসআই বাড়ি বানালেন প্রেমিকার টাকায়, অতঃপর…
নিউজ ডেস্ক।। স্ত্রীর দায়ের করা যৌতুক, নারী নির্যাতন ও প্রতারণার মামলায় কুমিল্লার কোতোয়ালি মডেল থানা পুলিশের এসআই সৈয়দ দেলোয়ার হোসেনকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত।
ঢাকার ২নং নারী শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল আদালতের বিচারক আবুল মঞ্জুর হোসেন তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। গত ১০ অক্টোবর তার বিরুদ্ধে ওই আদালতে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়।
মঙ্গলবার বিকেলে এ মামলায় আগাম জামিন নিতে আদালতে হাজির হলে তাকে কারাগারে প্রেরণ করা হয়। বুধবার তার পক্ষে জামিন আবেদন করা হলে আদালত আগামী ২৩ অক্টোবর জামিন শুনানির দিন ধার্য করেন।
মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, ২০০৬ সালে ঢাকার কামরাঙ্গীরচর থানায় পুলিশের কনস্টেবল হিসেবে কর্মরত থাকাকালে ওই এলাকার রেহানা বেগম রত্মা নামের এক গৃহবধূর সঙ্গে এসআই সৈয়দ দেলোয়ার হোসেনের পরকীয়া প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে।
রেহানা বেগম রত্মা জানান, প্রথম স্বামীর সংসারে ভালো থাকলেও কনস্টেবল দেলোয়ারের প্রেমের ফাঁদে পড়ে স্বামীর সংসার ছেড়ে ২০০৭ সালে ২ লাখ টাকার দেনমোহরে দেলোয়ারকে বিয়ে করেন রত্না। পরে দেলোয়ার নানা ছলে তার একটি ফ্ল্যাট বিক্রি ও অপর একটি ফ্ল্যাট বন্ধক রেখে এবং স্বর্ণ-গহনা বিক্রি করে নগদ প্রায় ৪৭ লাখ ৭৪ হাজার টাকা হাতিয়ে নেন।
এসব টাকা দিয়ে দেলোয়ার পটুয়াখালীতে বাড়ি নির্মাণ করেন। একপর্যায়ে দেলোয়ার কনস্টেবল থেকে এএসআই পদে পদোন্নতি পেয়ে রত্মার কাছে আরও টাকা দাবি করেন। চাহিদা অনুযায়ী টাকা দিতে না পারায় তাকে মারধর শুরু করেন দেলোয়ার। বাচ্চা নিতে চাইলে ওষুধ দিয়ে বাচ্চা নষ্ট করে ফেলা হয়। এসবের মধ্যে ১১ বছর অতিক্রম করার পর চলতি বছর দেলোয়ার এসআই পদে পদোন্নতি পান। পদোন্নতি পেয়েই বেপরোয়া হয়ে ওঠেন দেলোয়ার।
রত্মা বলেন, স্বামীর অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে পুলিশ সদর দফতর এবং কুমিল্লার পুলিশ সুপার বরাবর লিখিত অভিযোগ দেই। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে আমাকে তালাক দিয়ে আরেকটি বিয়ে করেন দেলোয়ার। নিরুপায় হয়ে ঢাকার ২নং নারী শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে এবং হাতিয়ে নেয়া অর্থ উদ্ধারে পারিবারিক আদালতে পৃথক দুটি মামলা করি।
রত্মার আইনজীবী হুমায়ুন কবির বলেন, জুডিশিয়াল তদন্ত শেষে গত ১০ অক্টোবর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল এসআই দেলোয়ার হোসেনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন। মঙ্গলবার এ মামলায় আগাম জামিন চাইলে এসআই দেলোয়ারকে কারাগারে পাঠান বিচারক।
এ বিষয়ে কোতোয়ালি মডেল থানা পুলিশের ওসি আবু ছালাম মিয়া বলেন, দেলোয়ার গ্রামের বাড়ি যাওয়ার কথা বলে ছুটি নিয়েছেন। কিন্তু তাকে কারাগারে পাঠানোর খবর জানতে পেরে তার মোবাইলে কল দিয়ে বন্ধ পাই। তাই তার সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি।
কুমিল্লার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, এসআই দেলোয়ার হোসেনকে কারাগারে পাঠানো হয়ে থাকলে বিধি অনুযায়ী আমাদের কাছে কাগজপত্র আসার পর তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। উৎসঃ জাগোনিউজ